ঢাকা | জুন ১৪, ২০২৫ - ২:৩৫ অপরাহ্ন

রাণীনগরের ‘পাতি’র দেশজুড়ে খ্যাতি

  • আপডেট: Friday, June 13, 2025 - 9:48 pm

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি: বরেন্দ্র অঞ্চল খ্যাত নওগাঁর রাণীনগরে চলতি রবিশস্য মৌসুমে ধান, গম, সরিষা, ভুট্টা, বাদামসহ অন্যান্য শাক-সবজির পাশাপাশি দিনদিন ‘পাতি’ চাষ বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশ জুড়ে বাড়ছে তার খ্যাতি।

অসময়ের বন্ধু হিসেবে খ্যাত অধিকাংশ কৃষকদের ঘরে এখন পাতি কাটা ও শুকানোর কাজ এলাকা ভিত্তিক চলছে। বাজার মূল্য ভাল ও ব্যাপক চাহিদা থাকার কারণে পাতি চাষের সাথে জড়িত কৃষকরা এখন ফুরফুরে মেজাজে আছে। প্রাকৃতিক দূর্যোগে তেমন কোন ক্ষতি না হওয়ায় এবং স্বল্প পরিমাণ বালাই নাশক প্রয়োগে, সার্বিক উৎপাদন ব্যয় কম এবং লাভ বেশি হওয়ায় পাতি চাষের প্রতি কৃষকের আগ্রহ বেড়েছে।

বনপাতি ও জলপাতি চাষে কৃষকরা মনোযোগ দেওয়ায় এই উপজেলায় বিগত বছরের তুলনায় পাতি চাষ বেশি হয়েছে। এই জনপদে আগে পাতি চাষ তেমন না হলেও বর্তমানে পাতি দিয়ে তৈরি পরিবেশ বান্ধব মাদুরের প্রধান উপকরণ হিসেবে কদর বেশি থাকায় চলতি মৌসুমে অন্যান্য ফসলের সাথে রেকর্ড পরিমাণ পাতি চাষ করেছে এই উপজেলার কৃষকরা।

জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে প্রায় ৮০ হেক্টর জমিতে বনপাতি ও জলপাতি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও চলতি বছরে উপজেলায় লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে পাতির আবাদ হয়েছে। শুরুতেই ভাল আবহাওয়া অনুকূলে থাকা এবং পাতির ক্ষেতে রোগ-বালাই না থাকায় ও মাঠ পর্যায়ে পাতি চাষিদের উপ-সহকারি কৃষি অফিসাররা যথা সময়ে উপযুক্ত পরামর্শ নজরদারি ও প্রত্যক্ষ কারিগরী সহযোগিতার কারণে পাতি ক্ষেত অনেকটা ভাল হয়েছে।

তবে মিরাট, গোনা, কাশিমপুর, রাণীনগর সদর, কালীগ্রাম ও পারইল ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি পাতি চাষ হয়েছে। পাতি কাটার মৌসুমে রোদ ভাল থাকলে মানসম্পূর্ণ ভাবে শুকাতে পারলে প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকার পাতি বিক্রয় হবে।

উপজেলার গোনা ইউনিয়নের দূর্গাপুর প্রামানিকপাড়া গ্রামের পাতি চাষি এরশাদ আলী জানান, আমি প্রতি বছরই ধানের পাশাপাশি পাতি চাষ করি। চৈত্র মাস থেকে শুরু করে ইরি ধান ঘরে তুলার আগ মূহুর্ত পর্যন্ত পাতি বিক্রয় করে আমার সংসারের প্রয়োজনীয় সমস্যা গুলো সমাধান করি।

চলতি মৌসুমে এক বিঘাতে পাতি চাষ করেছি। ইতিমধ্যেই প্রথম কাটা শেষ করে পাতিগুলো রোদে শুকানোর কাজ চলছে। আবহাওয়া ভাল থাকায় জমিতে পাতি ভাল হয়েছে। আশা করছি সমদয় খরচ বাদ দিয়ে প্রায় প্রায় ৩০ হাজার টাকা লাভের আশা করছি। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মুস্তাকিমা খাতুন জানান, উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪/৫ টি ইউনিয়নে বিগত বছরের তুলনায় লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি পরিমান পাতি চাষ হয়েছে।

কুটির শিল্পের মাদুর তৈরির প্রধান উপকরণ পাতি। পরিবেশ বান্ধব হওয়ায় বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা থাকায় লাভ বেশি হওয়ার কারণে কৃষকরা অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি পাতি চাষ করেছে।

তবে আমাদের মুল লক্ষ খাদ্যশস্য উৎপাদন বৃদ্ধি করা তাই পাতি চাষিদের উদ্ধুদ্ধকরণের চেষ্টা আমাদের পক্ষ থেকে বেশি নেই। যে পরিমান পাতি উৎপাদন হচ্ছে এলাকা ভিত্তিক কৃষকরা নিজেরাই উৎপাদন করে।

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS