ঢাকা | জুন ১৪, ২০২৫ - ৩:৫৬ অপরাহ্ন

বাগমারায় বিএনপি কর্মীকে কুপিয়ে জখম, জামায়াতের বিরুদ্ধে অভিযোগ

  • আপডেট: Friday, June 13, 2025 - 10:00 pm

বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারায় বিএনপির এক কর্মীকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করার অভিযোগ উঠেছে। হামলাকারীরা বিএনপি কর্মীর পায়ের রগ কাটার চেষ্টা করে। পায়ে ঠুকে দেয়া হয়েছে একটি লোহার পেরেক। ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার গণিপুর ইউনিয়নের অচিনঘাট এলাকায়।

বিএনপি নেতারা তাদের কর্মী সাহেব আলীর ওপর হামলা ও রগ কাটার চেষ্টার জন্য জামায়াতের স্থানীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন। তবে জামায়াত নেতাকর্মীরা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রাতে বাগমারা থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। সাহেব আলী গণিপুর ইউনিয়ন কৃষক দলের সদস্য বলে নিশ্চিত করেছেন ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব শামসুজ্জোহা সরকার।

তিনি বলেন, সাহেব আলীর ওপর যারা হামলা করেছে তারা জামায়াতের নেতাকর্মী। এলাকাবাসীর সামনে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনার পর এলাকায় বিএনপি জামায়াতের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গণিপুর ইউনিয়নের বিএনপি কর্মী সাহেব আলী (৫০) গত বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে অচিনঘাট এলাকার একটি পুকুরের পাড়ে বসেছিলেন। এ সময় ৭/৮ জনের একটি সশস্ত্র দল তাকে ঘাট থেকে মারতে মারতে তুলে সড়কের পার্শ্ববর্তী একটি দোকানের পেছনে নিয়ে যায়।

সেখানে সন্ত্রাসীরা সাহেব আলীকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা তার পায়ের রগ কেটে দেয়ার চেষ্টা চালায়। তার এক পায়ে একটি লোহার পেরেকও ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে।

খবর পেয়ে এলাকাবাসী চারদিক থেকে ছুটে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩১ নং ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. শংকর কুমার বিশ্বাস জানিয়েছেন, সাহেব আলীর জখম কিছুটা গুরুতর। শরীরে ধারাল অস্ত্রের অনেকগুলি কোপ রয়েছে। এক পায়ের একটি রগ কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এদিকে বিএনপিকর্মী সাহেব আলীর ওপর প্রাণঘাতি হামলার বিষয়ে গণিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব শামসুজ্জোহা সরকার বলেছেন, হামলার শিকার সাহেব আলী বিএনপির একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মী। ইউনিয়ন কৃষক দলের সদস্য পদে আছেন।

সাবেক স্বৈরাচারী সরকারের আমলে কয়েকদফা গ্রেফতার হন। গত ৫ আগষ্টের পর কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করে এলাকায় দলের হয়ে কাজ করছিলেন।

অন্যদিকে ঘটনার পরপরই বিএনপি নেতা শামসুজ্জোহা সরকার তার ফেসবুক পোষ্টে অভিযোগ করেন, সাহেব আলীর ওপর নৃসংশ হামলার ঘটনায় গণিপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাহবুব আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, জামায়াত কর্মী আতাউর রহমান ও মাসুদসহ দলটির নেতাকর্মীরা অংশ নিয়েছেন।

স্থানীয়রা আরও জানান, বিএনপি কর্মী সাহেব আলী ও জামায়াতের ইউনিয়ন আমির মাহবুব আলমের মধ্যে পারিবারিক বিরোধ চলছিল। জামায়াত নেতার আমবাগানের মাটি ধসে সাহেব আলীর পুকুরে পড়ছিল।

এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে কয়েকবার ঝামেলা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এই বিরোধের প্রতিশোধ নিতেই সাহেব আলীর ওপর সশস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটেছে। এদিকে সাহেব আলীর ওপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাহবুব আলম বলেন, সাহেব আলী একজন মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ী। এলাকায় তার বিরুদ্ধে অনেক অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। এলাকার মানুষ সংগঠিত হয়ে সাহেব আলীর ওপর হামলা করেছে। জামায়াতের কেউ এই হামলায় জড়িত নয়।

বাগমারা উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অহিদুল হকের দাবি- বিএনপি কর্মী সাহেব আলীর ওপর হামলায় জামায়াতের কেউ জড়িত নয়। জামায়াতের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিভিন্ন মাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

ঘটনার বিষয়ে বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রাথমিক তথ্য মতে, সাহেব আলীর ওপর যারা হামলা করেছে, তারা জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

এর আগে সাহেব আলীও একজন জামায়াত কর্মীর ওপর হামলা করেছিলেন। সে ঘটনায় থানায় একটি জিডিও করা হয়েছিল। তাদের বিরোধ পুরনো। পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS