তানোরে সড়কে কিশোর বাইকারদের বেপরোয়া গতি, আতঙ্কে পথচারীরা

সাইদ সাজু, তানোর থেকে: রাজশাহীর তানোর উপজেলার বিভিন্ন সড়ক এখন কিশোর বাইকারদের বেপরোয়া গতির রেস ট্র্যাকে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে ঈদের সময় ফাঁকা রাস্তায় বাইক রেসিংয়ের মাত্রা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
তাদের দৌরাত্ম্যে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন পথচারী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। স্থানীয়দের অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তা ও নজরদারির অভাবেই এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের নেতারা বলছেন, আইনের পাশাপাশি অভিভাবকদেরও সচেতন হতে হবে। এখন তানোরের বিভিন্ন সড়কে প্রতিদিনই বাইকারদের দাপট দেখা যাচ্ছে। বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত অনেকটা নির্দ্বিধায় চলাচল করছে এসব কিশোর বাইকাররা।
এদের অনেকেই হেলমেট ছাড়াই মোটরসাইকেল চালাচ্ছেন এবং ট্রাফিক আইন তোয়াক্কা করছেন না। অধিকাংশ বাইকে লাগানো সাইলেন্সার থেকে বিকট শব্দ ছড়ানোয় শব্দদূষণও বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। স্থানীয়রা বলছেন, প্রতিদিন বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তানোর উপজেলা মুন্ডমালা ও চৌবাড়িয়াসহ প্রায় প্রতিটি সড়কে বাইকের আচমকা গর্জন আর বেপরোয়া গতির কারণে রাস্তায় চলা এখন প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে।
এদের বেশির ভাগই হচ্ছে যুবক ও উড়তি বয়সের কিশোর। সরেজমিন বিভিন্ন সড়কে দেখা গেছে, তানোর থানা মোড় থেকে মুন্ডমালা হয়ে আমনুরা ও তানোর উপজেলা গেটে থেকে চৌবাড়িয়া এবং থানা মোড় থেকে নাইস গার্ডেন পর্যন্ত সড়কে একাধিক কিশোর দলবদ্ধভাবে বাইক রেসিং করছে। অনেকেই হেলমেট ছাড়া, কেউবা এক বাইকে তিনজন করে উঠেছে। ঈদের ছুটিতে ফাঁকা রাস্তাকে সুযোগ হিসেবে নিয়েছেন এরা।
পথচারীরা জানান, দিনের বেলায় কিছুটা নিয়ন্ত্রণ থাকলেও সন্ধ্যার পর থেকে পুরো এলাকা বাইকারদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। তাদের বেপরোয়া গতির কারণে প্রায়ই ঘটে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। তানোর থানা মোড়ের দোকানী বিপুল কুমার বলেন, ‘ওরা যেভাবে বাইক চালায়, তাতে যে কোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
অথচ প্রশাসন অনেকটাই নিশ্চুপ। আরেক দোকানী আশরাফ আলী বলেন, শুধু আইন প্রয়োগ নয়, তরুণদের আচরণগত পরিবর্তনের জন্য পুলিশের নিয়মিত কাউন্সিলিং বাড়ানো উচিত। প্রত্যক্ষদর্শী আইয়ুব আলী বলেন, ওপরে-নিচে উঠিয়ে, একেবেকে ও বিকট শব্দ করে বাইক চালানো হয়।
এর কারণে অনেক দুর্ঘটনা ঘটছে। তাদের এ আচরণে অনেক মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তিনি বলেন, আইন বাস্তবায়নের পাশাপাশি অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। অন্যথায় কিশোরদের সঠিক পথে নিয়ে আসা কষ্টকর হবে।
তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন বলেন, ঈদের সময় রাস্তায় গাড়ি কম থাকায় একটি শ্রেণি বাইক রেসিং করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে চেকপোস্ট ও মোবাইল টহল পরিচালনা করা হচ্ছে।