দুর্গাপুরে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঐতিহাসিক নীলকুঠি

মিজান মাহী, দুর্গাপুর থেকে: রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার পানানগর গ্রামে ১৮৯৪ সালে নির্মাণ করা হয় ঐতিহাসিক নীলকুঠি। প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেটি এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। একটি বাড়ি ও নীলকুঠি তৈরি করলেও এখন শুধু এক টাওয়ার বিশিষ্ট ঐতিহাসিক স্থাপত্যের একটি নিদর্শন আছে। যা আজও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এটি মজবুত ইটের গাঁথুনি ও দৃষ্টি নন্দন করেই নির্মিত হয়েছিল।
জানা যায়, ব্রিটিশ আমলে দুর্গাপুর উপজেলার পানানগর গ্রামে একজন ইংরেজ এসেছিলেন। তিনি সোনাকান্দোর বিলে পাখি শিকার করতেন। পাখি শিকারের সময় যেখানে নীলকুঠি অবস্থিত। সেই সমতলভূমির জমিগুলো তার পছন্দ হয়েছিল। তখন পানানগর গ্রামে দুজন জমিদার ছিলেন। একজন জগিন্দ্রনাথ মৈত্র, অন্যজন গ্যানেদা গোবিন্দ।
সেই ইংরেজ দুই জমিদারের কাছ থেকে পছন্দের ২৭ বিঘা জমি নিজের নামে পত্তন নিয়েছিলেন। আর সেখানে দখিন দুয়ারি বড় একটি বাড়ি ও নীলকুঠি তৈরি করেছিলেন। তারপর সেখানে গ্রামের হতদরিদ্র মানুষ দিয়ে পোলু পোকা চাষ ও তুত গাছ লাগিয়ে নিতো। পোলু পোকাকে তুতের পাতা খাওয়াতো সিল্ক তৈরি করার জন্য।
সরেজমিনে পানানগর গ্রামের ঐতিহাসিক নীলকুঠির স্থানে গিয়ে দেখা যায়, অবশিষ্ট দাঁড়িয়ে রয়েছে শুধু একটি টাওয়ার। টাওয়ারের নিচের অংশ ভেঙে যাচ্ছে। পুরানো ঐতিহাসিক স্থাপনা বলে অনেকেই এই টাওয়ার থেকে ইট খুলে নিয়ে যায়। এছাড়াও আশপাশের সবকিছু দখল হয়ে গেছে। টাওয়ারের পাশে টিনের খুপরি ঘর তুলে বসাবস করেন আজগর মন্ডল।
কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি জানান, এখন শুধু টাওয়ার টাই অবশিষ্ট আছে। আগে রাজার আমলের অনেক ইট পাথর ছিল। এখন আর কিছু নাই। মানুসে সব নিয়ে গেছে। পানানগর গ্রামের বাসিন্দা মাহবুব আলম বলেন, সোহরাফ মোল্লা, একরাম উদ্দিনসহ কয়েকজন জানান, তারা যখন ছোট তখনো এ নীলকুঠি বড় বাড়ির কিছু চিহ্ন ছিল।
বর্তমানে সব হারিয়ে শুধু টাওয়ারটা অবশিষ্ট আছে। এ ছাড়া আশপাশের সব জায়গা দখল হয়ে গেছে। জানতে চাইলে দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবরিনা শারমিন বলেন, এই উপজেলার ঐতিহাসিক নীলকুঠি সর্ম্পকে আমার তেমন কোন ধারণা নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।