সাংবাদিক মুন্নী সাহাসহ ২০ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা

সোনালী ডেস্ক: দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, তার স্ত্রী, সাবেক প্রতিমন্ত্রী, একাধিক সাবেক সংসদ সদস্য, নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব এবং সাংবাদিক মুন্নী সাহাসহ মোট ২০ জনের বিদেশগমনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা পৃথক সাতটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব গতকাল মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। দুদক সূত্রে জানা যায়, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে।
এসব অভিযোগের তদন্তকাজ যেন বাধাগ্রস্ত না হয়, সে কারণেই বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়। নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছেন: সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ও তার স্ত্রী সৈয়দা মোনালিসা ইসলাম, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম, তার স্ত্রী হাসু ইসলাম, সন্তান ধানাদ ইসলাম দীপ্ত, ফারাহ ইসলাম প্রভা ও শামা ইসলাম, সাবেক এমপি মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী (ফেনী-৩) ও মো. শাহীন চাকলাদার (যশোর-৬), নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, সাংবাদিক মুন্নী সাহা, তার স্বামী মো. কবির হোসেন (তাপস), মা আপেল রানী সাহা, ভাই তপন কুমার সাহা ও প্রণব কুমার সাহা (অপু), ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তা ও এস আলম গ্রুপের ঘনিষ্ঠ সৈয়দ ওয়াসেক মো. আলী, মো. আলমগীর হোসেন, মোহাম্মদ মোস্তফা খায়ের, আব্দুল আজিজ এবং মো. মাসুদুর রহমান শাহদুদকের লিখিত আবেদনে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন এমন তথ্য রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের যথাযথ অনুসন্ধানের স্বার্থে বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা অপরিহার্য।
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, সাংবাদিক মুন্নী সাহা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে ‘অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের’ অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। মুন্নী সাহার স্বামী এম এস প্রমোশনস নামক প্রতিষ্ঠানের মালিক।
এ বিষয়ে চলমান তদন্তে তাদের বিদেশে পলায়নের আশঙ্কার কথা উল্লেখ করেছে দুদক। এর আগে ২০২৩ সালের ৩০ নভেম্বর মুন্নী সাহাকে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অফিস থেকে বের হওয়ার সময় কিছু লোক ঘিরে ধরে।
পরে পুলিশ তাকে তেজগাঁও থানায় নিয়ে যায় এবং চার ঘণ্টা পর পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেয়। এছাড়া নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের বিরুদ্ধে ৫৫ হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগ অনুসন্ধানাধীন। সাবেক এমপি মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে রয়েছে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর নামে প্রতারণার অভিযোগ।
সাবেক প্রতিমন্ত্রী তাজুল ইসলাম ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে রয়েছে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগ। সবমিলিয়ে, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার, অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগ তদন্তাধীন রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অনুসন্ধান প্রক্রিয়া সচল রাখার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।