ঢাকা | জুন ৫, ২০২৫ - ৭:১৭ অপরাহ্ন

ভারতের পুশইন বন্ধে কনস্যুলার সংলাপের চিন্তা করছে সরকার: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

  • আপডেট: Wednesday, June 4, 2025 - 1:07 am

সোনালী ডেস্ক: ভারতের পুশইন অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় এক হাজার পাঁচ জনের বেশি মানুষকে ভারত পুশইন করে বাংলাদেশে পাঠিয়েছে। বিভিন্ন ধাপে ভারতকে চিঠি পাঠিয়েও এটি বন্ধ করা যাচ্ছে না। এই অবস্থায় ভারতের সঙ্গে কনস্যুলার সংলাপ করার বিষয়ে সরকার ভাবছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, কনস্যুলার সংলাপ হতে পারে। অনেকদিন হয়নি। যেহেতু এখন একটি ইস্যু আছে এবং আমরা সমাধান চাই, সেজন্য হতে পারে। আমরা সাবস্ট্যানটিভ একটি চিঠি পাঠাবো যেটাতে কিছু পদ্ধতির কথা আমরা আরেকবার উল্লেখ করবো।

একটি মেকানিজম আছে কনস্যুলার আলাপ-আলোচনার – আমরা সেটি ব্যবহার করার চেষ্টা করবো বলে তিনি জানান। পুশইন বিষয়ে তিনি বলেন, পুশইন হচ্ছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি এটি হচ্ছে এবং সেটি ফিজিক্যালি ঠেকানো সম্ভব নয় আসলে। এটি নিয়ে ভারতের সঙ্গে আমাদের চিঠি আদান-প্রদান হচ্ছে। আমরা বলেছি যে প্রত্যেককে যেন নিয়ে যাওয়া হয়।

তারা কিছু ক্ষেত্রে বলেছে যে অনেক কেস আটকে আছে এবং সেগুলো তোমরা ঠিক মতো করছো না। আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি যে আসলে খুব দীর্ঘদিনের তালিকার মধ্যে আছে একটি সংখ্যা এবং আমরা পাশাপাশি এটাও দেখেছি যে তাদের তালিকা অনুযায়ী অনেককে আমরা নিয়েছিও।

কাজেই দুপক্ষের বক্তব্য থাকতে পারে এখানে। কনস্যুলার ইস্যু নিয়ে আমাদের একটি মেকানিজম আছে। সেটিকে ব্যবহার করে ওই জিনিষকে আমরা নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসতে পারি কিনা, সেই চেষ্টা করছি। আমরা আজকে অথবা আগামীকাল একটি কিছু দেবো। আমরা চাই যে নিয়মের মধ্যে এ বিষয়টি হোক। নিয়মের বাইরে যেন না যায়।

ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল করায় বাংলাদেশের ‘শাপে বর’ হয়েছে: তৃতীয় দেশে পণ্য পাঠাতে গত এপ্রিলে এককভাবে বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে ভারত। বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি মনে করেন, এটি ‘শাপে বর’ হয়েছে বাংলাদেশের জন্য।

উপদেষ্টা বলেন, ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলের বিষয়ে আমি যেটা দেখতে পেয়েছি সেটি হলো- এটি আমাদের জন্য শাপে বর হয়েছে। তাদের ওপর নির্ভরশীলতাটা কমে গেছে এবং আমাদের রফতানি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না। বরং একটি মেকানিজম দাঁড়িয়ে গেছে- দিল্লির পরিবর্তে চিটাগাং এবং সিলেট থেকে পণ্য যাচ্ছে। কোনও সমস্যা হচ্ছে না।

কাজেই আমি মনে করি এটি একদিকে ভালো হয়েছে। কেন সবকিছুর জন্য অন্য দেশের ভেতর দিয়ে আমাদের ট্রানজিট করতে হবে। পণ্য এখান থেকে সরাসরি যেতে পারে এবং এখান থেকে এখন যাচ্ছে- বলে তিনি জানান। ভারত একের পর এক সুবিধা বাতিল করছে– এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরাও আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী একটি সুবিধা বাতিল করেছি।

আমরা স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি বন্ধ করেছি। সেটি আমাদের প্রয়োজন ছিল বলেই করেছি। কিন্তু তারা যেটি করেছে, এটি তাদের প্রয়োজনের জন্য করেছে কিনা জানি না।

শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানো: সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে এবং ভারত থেকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরা কোনও জবাব পাইনি। শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর জন্য গত বছর চিঠি দেওয়া হয়েছিল। এরপর আর চিঠি দেওয়া হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা কখনও দেই নাই, এটুকু বলতে পারি। যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে অবশ্যই দেওয়া হবে।

সীমান্ত হত্যাকাণ্ড: সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার প্রথমদিকে প্রচণ্ড প্রতিবাদ করেছিল। ভারতীয় কূটনীতিকদের তলব করে প্রতিবাদপত্র হস্তান্তর করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে সীমান্ত হত্যাকাণ্ড হলে সেসব করা হচ্ছে না কেন, জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, এগুলো গা-সওয়া হওয়া সম্ভব নয়। এগুলো নিয়ে নমনীয়তা দেখানো সম্ভব নয়।

আমরা এগুলোর প্রতিবাদ করছি এবং এই প্রক্রিয়া চালু আছে। এ বিষয়ে আমরা অবশ্য শক্ত ভাষায় প্রতিবাদ করবো। এই বিষয়টিকে কখনোই মেনে নেওয়া হবে না।

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS