ঈদুল-আজহা উপলক্ষে আরএমপি’ র গণবিজ্ঞপ্তি

স্টাফ রিপোর্টার: আসন্ন পবিত্র ঈদুল-আজহার পবিত্রতা রক্ষা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সাথে উদ্যাপিত হবে। দিনটি উপলক্ষে রাজশাহী মহানগর এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা, জনস্বার্থ, জনশৃঙ্খলা ও সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তার নিমিত্ত কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মেট্রোপলিটন পুলিশ।
পবিত্র ঈদুল-আজহা উপলক্ষে জারিকৃত নোটিশে বলা হয়েছে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্পিত ক্ষমতাবলে আগামী ৪ জুন সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ১০ জুন পর্যন্ত সর্ব সাধারণের ব্যবহার্য স্থান, উন্মুক্ত স্থান/ছাদে গান-বাজনা, বাদ্যযন্ত্র, ডিজে পার্টি, উচ্চশব্দে গাড়ির হর্ন বাজানো যাবে না। আতশবাজি, ফানুস, পটকা ক্রয়-বিক্রয় ও ব্যবহার করা যাবে না।
এছাড়াও অর্পিত ক্ষমতাবলে রাজশাহী মহানগরী এলাকায় হিংসাত্মকভাবে আঘাত করার উদ্দেশ্যে অস্ত্রশস্ত্র, তলোয়ার, বর্শা, বন্দুক, ছোরা বা লাঠি ও বিস্ফোরকদ্রব্য বহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
রোববার আরএমপি’র পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান কর্তৃক এক বিজ্ঞপ্তিতে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
আরএমপির ১৮টি নির্দেশনা
এদিকে আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা ঘিরে নগরীতে নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বেশ কিছু নিরাপত্তা পরামর্শ দিয়েছে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি)। রোববার আরএমপির পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই পরামর্শ দেয়া হয়।
এতে বলা হয়, পবিত্র ঈদুল আজহা উৎসবমুখর ও নিরাপদ পরিবেশে উদযাপনের লক্ষ্যে এবং ঈদে বাসা-বাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণি-বিতানের সার্বিক নিরাপত্তায় আরএমপি সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
আরএমপি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে পুলিশের গৃহীত পদক্ষেপের পাশাপাশি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে নিরাপত্তা সচেতনতাবোধ তৈরি করা গেলে, সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে ও অপরাধ দমনে অধিকতর সফল হওয়া সম্ভব।
এজন্য ঈদের উৎসবকে আনন্দময় ও সকলের জন্য নিরাপদ করার জন্য নগরবাসীর সার্বিক সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে নিরাপত্তা নিশ্চিতে রাজশাহী মহানগরবাসীকে ১৮টি নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানিয়েছে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ। সেগুলো হলো:
১. কোরবানির পশুবাহী গাড়িগুলো নির্দিষ্ট স্থানে লোড ও আনলোড করুন।
২. পশুর হাটে অজ্ঞানপার্টি, মলমপার্টি হতে সাবধান থাকতে হবে। জালনোট সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে এবং লেনদেনের সময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। পশু বিক্রয় করা অর্থ ব্যাংকে জমা রাখা ও নগদ অর্থ স্থানান্তরে মানি এস্কর্ট সেবা গ্রহণের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
৩. কোরবানির পশু পরিবহন, পশুর হাটে চাঁদাবাজি সংক্রান্ত কোনও তথ্য থাকলে নিকটস্থ পুলিশ অবগত করুণ। অনলাইনে কোরবানির পশু কেনায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
৪. কোরবানির পশু রাস্তার ওপরে জবাই না করে সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারিত স্থানে অথবা মহল্লার কোন নির্ধারিত স্থানে জবাই করুন এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে বর্জ্য অপসারণ কাজে সহায়তা করুন।
৫. বাসা-বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, ব্যাংক-বীমাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণি-বিতানের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত নিরাপত্তা রক্ষীদের ডিউটি জোরদার করতে হবে। যেকোনো অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা নজরদারির ব্যবস্থা রাখতে হবে। প্রতিষ্ঠানের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে একসঙ্গে ছুটি না দিয়ে একটি অংশকে দায়িত্বপালনে নিয়োজিত রাখা যেতে পারে, যাতে তারা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার সার্বিক তদারকি করতে পারেন।
৬. বাসা-বাড়ি ও প্রতিষ্ঠান ছাড়ার আগে দরজা-জানালা সঠিকভাবে তালা মেরে যেতে হবে। প্রয়োজনে একাধিক তালা ব্যবহার করা যেতে পারে। বাসা-বাড়ির মূল দরজায় অটোলক ও নিরাপত্তা এ্যালার্মযুক্ত তালা ব্যবহার করা যেতে পারে।
৭. বাসা-বাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণি-বিতানে পর্যাপ্ত সংখ্যক সিসি ক্যামেরা বসাতে হবে এবং সেগুলো সচল থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
৮. রাতে বাসা ও প্রতিষ্ঠানের চারপাশ পর্যাপ্ত আলোকিত রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
৯. অর্থ, মূল্যবান সামগ্রী ও দলিল নিরাপদ স্থানে যা নিকট আত্মীয়ের হেফাজতে রেখে যেতে হবে। প্রয়োজনে ব্যাংক লকারের সহায়তা নেয়া যেতে পারে।
১০. বাসা-বাড়ি ছাড়ার আগে প্রতিবেশী বা পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের বাসার দিকে খেয়াল রাখতে অনুরোধ করতে এবং ফোনে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে।
১১. ভাড়াটিয়ারা আগেই বাসার মালিককে ঈদ উপলক্ষে বাসায় না থাকার বিষয়টি জানাবেন।
১২. অনুমতি ছাড়া কেউ যেন বাসা বা প্রতিষ্ঠানে ঢুকতে না পারে, এ বিষয়ে বাসা বা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাকর্মীকে সতর্ক করতে হবে।
১৩. বাসা বা প্রতিষ্ঠানের গাড়ির গ্যারেজ সুরক্ষিত রাখতে হবে।
১৪. বাসার জানালা-দরজার পাশে কোনো গাছ থাকলে অবাঞ্ছিত শাখাপ্রশাখা কেটে ফেলতে হবে যাতে অপরাধীরা গাছের শাখাপ্রশাখা ব্যবহার করে বাসায় ঢুকতে না পারে।
১৫. মহল্লায় বা বাড়ির সামনে সন্দেহজনক কাউকে বা কোনো দুষ্কৃতিকারীকে ঘোরাফেরা করতে দেখলে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি ও থানাকে জানাতে হবে।
১৬. ঈদে মহল্লা বা বাসায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে থাকলে বা ঘটার সম্ভাবনা থাকলে তা স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি ও থানাকে জানাতে হবে।
১৭. ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বেপরোয়া গতিতে জয় রাইডিং করবেন না। এতে জীবন বিপন্ন হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
১৮. জরুরি প্রয়োজনে পুলিশি সহায়তার জন্য আরএমপি হটলাইন: ০১৩২০০৬৩৯৯৯ ও আরএমপি কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করা যাবে ০১৩২০০৬৩৯৯৮ নম্বরে। এ ছাড়া জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমেও পুলিশের সেবা পাওয়া যাবে।