রাজশাহীতে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উদযাপিত

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উদযাপন করা হয়েছে।
শনিবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তামাকবিরোধী আলোচনা সভায় জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ। এর আগে ‘তামাক কোম্পানির কূটকৌশল উন্মোচন করি, তামাক ও নিকোটিনমুক্ত বাংলাদেশ গড়ি’ এ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়।
এসময় সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট লায়লা নূর তানজুর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের (প্রকল্প বাস্তবায়ন অধিশাখা) যুগ্মসচিব মোহাম্মদ সফিউল আলম, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব আবু সুফিয়ান, সিভিল সার্জন ডা. এসআইএম রাজিউল করিম। এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) উম্মে কুলসুম সম্পা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) টুকটুক তালুকদারসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
স্বাস্থ্যের ওপর তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব তুলে ধরে বক্তারা বলেন- তামাকপণ্য জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। যিনি ধূমপান করেন তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হন। সেই সঙ্গে অন্যকেও ক্ষতিগ্রস্ত করেন। সেই জন্য তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার কোনো বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে তামাকজাত পণ্যের প্রচার ও বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ হলেও কার্যকর বাস্তবায়নের অভাবে তামাক কোম্পানির লোভের মুখে অরক্ষিত হয়ে পড়েছে দেশের তরুণ সমাজ। এছাড়াও সরাসরি তামাক গ্রহণ ও ধূমপানে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক ও ফুসফুসের ব্যাধিসহ মুখ, গলা, ফুসফুস, অগ্ন্যাশয়, মূত্রাশয়, কিডনি, লিভার এবং পাকস্থলীর মতো একাধিক অঙ্গকে প্রভাবিত করে এবং ২০টিরও বেশি ধরনের ক্যানসার রোগ ঘটায়।
এদিকে ব্যতিক্রমী উদ্যোগে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার আফিস এবার দিবসটি উদযাপন করেছে। এ উপলক্ষে গতকাল বিকালে শারীরিক শিক্ষা কলেজ মাঠে ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করা হয়। বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ নিজেই এ ফুটবল ম্যাচে অংশগ্রহণ করেন।
এর আগে শারীরিক শিক্ষা কলেজ গেট থেকে এক বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। র্যালি শেষে কলেজটির মিলনায়তনে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় বিভাগীয় কমিশনার অংশগ্রহণকারীদের কাছে জানতে চান সেখানে কোনো ধূমপায়ী আছে কিনা। অংশগ্রহণকারীদের পক্ষ থেকে না সূচক জবাব দিলে তিনি সবাইকে নিয়ে খেলার মাঠে যান। এসব অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার, বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের পরিচালক ডাঃ হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা এবং শারীরিক শিক্ষা কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে এই দিবস পালন উপলক্ষে মানববন্ধনে রুলফাও নির্বাহী পরিচালক আফজাল হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সামাজিক কল্যাণ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক সম্রাট রায়হান, স্পেস নির্বাহী পরিচালক কামরান হাফিজ, বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈয়বুর রহমান, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন কর্মী ওয়ালিউর রহমান বাবু, ইয়্যাস সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান, নারী নেত্রী সিমা খাতুন।
পবা
বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উদযাপন উপলক্ষে পবায় র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। পবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরাফাত আমান আজিজ এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফাতেমা বেগম, উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা, উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী, পবা উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী নাজমুল ইসলাম, নওহাটা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, ইউসেপ কারিগরী স্কুল প্রধান সাহিনুল ইসলাম প্রমুখ। এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার পবা উপজেলা কমপ্লেক্স চত্বকে তামাকমুক্ত করার উদ্যোগ নেবেন বলে জানান। তার এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত সুধীবৃন্দ।
পুঠিয়া
পুঠিয়া প্রতিনিধি জানান, পুঠিয়া উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উদযাপিত হয়েছে। উপজেলা পরিষদ চত্বরে বেলুন উড়িয়ে কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ, কে, এম, নূর হোসেন নির্ঝর। এরপর বর্ণাঢ্য একটি র্যালি উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে বের হয়ে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়। পরে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভা শেষে তামাক বিরোধী রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন ইউএনও সহ উপস্থিত অতিথিরা।