পুঠিয়ায় একাধিক গ্রুপে বিভক্ত বিএনপি

তৃনমূলের নেতাকর্মীরা দিশেহারা
পুঠিয়া প্রতিনিধি: রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় বিএনপির একাধিক গ্রুপে বিভক্ত হয়ে দলীয় কর্মসূচি পালন করায় তৃণমূল নেতাকর্মীর মনে ব্যাপক ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।
অপরদিকে উপজেলা সদরের স্থানীয় দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মাঝেমধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটার অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, পুঠিয়া পৌর সদরে অবস্থিত রাজশাহী জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের নিবার্চনে প্রার্থী দেয়া-নেয়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল।
পরবর্তী সময়ে বিভাগীয় শ্রম আদালতের নিদের্শে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ শ্রমিকের নির্বাচন স্থগিত করে দেয়।
এদিকে গত ১৪ মে মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ সংলগ্ন জমিদার অশ্বিনী বাবুর অর্পিত সম্পত্তিতে ৭টি পুকুর ইজারাকে কেন্দ্র করে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে উপজেলা বিএনপির সাবেক সেক্রেটারি ও সাবেক পৌর মেয়র আল মামুন খানের লোকজন ও রাজশাহী জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক রায়হানের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
এতে সোহাগ নামের এক কর্মী গুরুতর আহত হয়। এর জের ধরে রাতে পুঠিয়া রাজবাড়ি বাজারে থাকা ওয়ার্ড বিএনপি অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে দুইটি মোটরবাইক পোড়ানো হয়।
পরে গত ১৬ মে শুক্রবার যুবদল নেতা ফারুক পক্ষের ৩ জনকে আসামি করে আহত সোহাগ নিজে বাদী হয়ে পুঠিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
১৮ মে পুঠিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র আল মামুন খান এর নামে পুকুর ইজারা দেয়া-নেয়াকে কেন্দ্র করে কিছু অনলাইন মিডিয়ায় মিথ্যা গুজব ছড়ানোর প্রতিবাদে আল মামুন খাঁন তার নিজ দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে করেন। সেখানে তিনি তার প্রতিপক্ষ ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিগত দিনের রাজনৈতিক ভূমিকার কথা তুলে ধরেন।
এদিকে গতকাল ৩০ মে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪ তম শাহাদতবার্ষিকী’র অনুষ্ঠান বিএনপির নেতাকর্মীরা বিভক্ত হয়ে আলাদা আলাদা পাঁচটি স্থানে কর্মসূচি পালন করে হয়েছে।
এতে করে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ ও দ্বিধাদ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। ভাল্লুকগাছী ইউনিয়নের একজন নির্যাতিত বিএনপির দলীয় নেতা জানান, পুঠিয়া উপজেলা বিএনপি এখন একাধিক গ্রুপে বিভক্ত। এতগুলো গ্রুপ যেখানে এক গ্রুপের মিছিল-মিটিং ও সমাবেশে গেলে অন্য গ্রুপের কাছে শত্রু হতে হয়।
এইজন্য আমরা কোন গ্রুপের সাথে আপাতত কোন প্রোগ্রামে শরিক হতে পারছি না। হয়তোবা আমার মত এমন হাজারও বিএনপির সমর্থক আছে যারা প্রকাশ্যে কোন মিছিল মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করতে পারে না।
গত ১৬ বছরের দমনপীড়নের পর এখন আর কোনো গৃহদাহ চান না তৃণমূল কর্মীরা। বর্তমানে পুঠিয়ায় বিএনপির একাধিক গ্রুপের প্রধান কারণ হলো সঠিক ও যোগ্য নেতৃত্বের অভাব।
এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি রোকনুজ্জামান আলম বলেন, আমরা এই পি এন সরকারি হাইস্কুল মাঠে উপজেলার সবাই মিলে অতীতে বিভিন্ন সময় মিটিং মিছিলসহ সভা-সমাবেশ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি।
শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকীর অনুষ্ঠান সবাই মিলে করা উচিত ছিল। কিন্তু আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দলে আমরা আলাদা-আলাদা স্থানে অনুষ্ঠান করছি।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির পক্ষ হতে কোনো অনুষ্ঠানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। এটা খুবই দুঃখজনক একটা ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ব্যাপারে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী’র অনুষ্ঠান আলাদাভাবে করা হয়নি।
বিড়ালদহ প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে উপজেলা বিএনপির সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠান পালন করা হয়েছে।