জিকে শামীমের আপিল শুনানি ফের পেছাল

মানি লন্ডারিং মামলায় সাজা
অনলাইন ডেস্ক: মানি লন্ডারিং মামলায় ১০ বছরের সাজার বিরুদ্ধে আলোচিত ঠিকাদার এসএম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জিকে শামীম হাইকোর্টে আপিল করেছেন।
গত বুধবার এ মামলায় জামিন শুনানির জন্য ধার্য ছিল। ওইদিন টানা ৩৩ বার মামলার শুনানির দিন ধার্য হলেও সেটার শুনানি হয়নি। ফের পিছিয়েছে শুনানির তারিখ।
২০২৩ সালের ১৭ জুলাই মানি লন্ডারিং মামলায় প্রভাবশালী ঠিকাদার জিকে শামীমকে ১০ বছর এবং তার সাত দেহরক্ষীর প্রত্যেককে চার বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মো. নজরুল ইসলাম এ রায় দেন।
২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর গুলশানে নিজ কার্যালয় থেকে সাত দেহরক্ষীসহ শামীম গ্রেফতার হন।
মানি লন্ডারিংয়ের মামলাটি হয় রাজধানীর গুলশান থানায়। এ মামলায় ২০২০ সালের ৮ আগস্ট শামীমসহ আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
একই বছরের ১০ নভেম্বর আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ২৩ সাক্ষীকে আদালতে হাজির করে।
জিকে শামীমের আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল জানান, মানি লন্ডারিং মামলায় ১০ বছরের সাজার বিরুদ্ধে জিকে শামীম হাইকোর্টে আপিল করেছেন।
আপিলের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় মামলায় মানি লন্ডারিংয়ের চেষ্টার যে কথা যা বলা হয়েছে, সেটা রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে পারেনি। তার যাবতীয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ, ব্যাংক স্থিতি, এফডিআর মিলে ২৯৭ কোটি টাকার স্থাবর সম্পদ পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়।
আদালত কর্তৃক এই মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ২৯টি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, এফডিআর অবমুক্ত করার জন্য চিঠি ইস্যু করা হয়েছে। এ ছাড়া মামলায় সর্বমোট সম্পদের পরিমাণ উল্লেখ করেছে ২৯৭ কোটি টাকা।
বাস্তবে জিকে শামীমের আয়কর রিটার্ন ও সমুদয় তথ্য যাচাই বাছাই করে সার্টিফায়েড কপি ইস্যু করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।
এতে দেখা যায়, জিকে শামীমের ৩৫৩ কোটি টাকা বৈধ অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে। মামলায় উল্লেখিত অস্থাবর সম্পদের চেয়ে অতিরিক্ত ৫৬ কোটি টাকা বেশি বৈধ অস্থাবর সম্পদ পাওয়া গেছে। এরপরও মামলায় জিকে শামীমকে ১০ বছরের সাজা দেওয়া হয়।
রায়ের বিরুদ্ধে জিকে শামীম হাইকোর্ট বিভাগে জামিন চাইলে তাকে জামিন দেওয়া হয়। পরবর্তীতে মামলাটি চেম্বার জজ আদালত থেকে জামিন স্থগিত করা হয়। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে জিকে শামীম পুনরায় জমিন আবেদন করেছেন। কিন্তু রহস্যজনক কারণে তার শুনানি হচ্ছে না।
জিকে শামীমের আইনজীবী বলেন, শতভাগ খালাসযোগ্য ওই মামলাটি নিরপেক্ষ ন্যায় ও ন্যায্যতার সঙ্গে বিচার পাওয়া গেলে মামলা থেকে তার মক্কেল অব্যাহতি পাবেন।
ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের আমলে করা মামলাটি নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় ৩৩ দফায় তারিখ দেওয়ার পরও মামলাটির শুনানি না হওয়ার অমানবিক ও ন্যায়বিচার পরিপন্থি।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, মানি লন্ডারিং মামলায় ১০ বছরের সাজার বিরুদ্ধে জিকে শামীমের আপিল হাইকোর্টে শুনানির অপেক্ষায় আছে। আপিল এবং জামিন শুনানি আদালতের এখতিয়ার। এখানে কারো হাত নেই।