প্রাথমিক শিক্ষা: স্বপ্ন পূরণে শিক্ষকের ভূমিকা

সেলিনা খাতুন
শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। একজন মানুষের ভারসাম্য রক্ষা, তার দাঁড়ানোর ক্ষমতা ও কাজ করার জন্য যেমন মেরুদণ্ডের বিকল্প নেই, তেমনি সব কিছু ঠিক রেখে শিক্ষা ছাড়াও জাতির সুস্থভাবে চলা ও উন্নতি অসম্ভব।
আর এই শিক্ষা গ্রহণের ভিত্তিস্তরেই রয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা। ৪ বছর থেকে ১০ বছর বয়সী কচি-কাঁচা কোমলমতি শিশুদের নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষার পথচলা।
অনেক ক্ষেত্রে, অনেকের কাছে প্রাথমিক শিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গনের গুরুত্ব না থাকলেও শিক্ষক হিসেবে আমরা জানি এবং বুঝি যে, এই বয়সী কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মন, স্বপ্ন দর্শন, ইচ্ছা ও প্রত্যাশায় শিক্ষাঙ্গন ও শিক্ষকের অনুপ্রেরণা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষার্থীদের কাছে এর ভূমিকাইবা কতখানি।
প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা হচ্ছে সাদা কাগজ বা কাদামাটির মত, আমাদের সৌভাগ্য যে, আমরা সরাসরি এবং দীর্ঘ সময়ের জন্য তাদের সাথে মিশতে পারি। আমাদের আচরণ, Motivative Mí, Lifestyle, অনুপ্রেরণা সরাসরি তাদের মনে রেখাপাত করে।
আমরা যেহেতু তাদের জীবনের প্রথম শিক্ষাদানকারী, এ কারণে আমাদের জায়গা তাদের জীবনে ও মনে যেভাবে স্থান পাবে বা প্রভাবিত হবে তা অন্য কারোর কাছে হবে না। একই ভাবে শিক্ষার্থীরা যেভাবে আমাদেরকে গুরুত্ব দেবে ও সম্মান করবে তা অন্য কেউ করনো।
আমাদের পেশাগত জীবনে এটিও একটি বিশাল প্রাপ্তি। শিক্ষক নামক মহান পেশায় আর্থিক প্রাপ্তির প্রত্যাশা আমরা করি না। আামাদের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি, শিক্ষার্থীর জন্য ভালো কিছু করা। প্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্যের মধ্যে রয়েছে দেশপ্রেম ও উন্নত জীবনের স্বপ্ন দর্শনে উদ্বুদ্ধ করা।
দেশপ্রেম ও নীতি-নৈতিকতা বজায় রেখে উন্নতির পথে এগিয়ে যাওয়া-ই তো আদর্শ মানুষের বৈশিষ্ট্য। শিক্ষকগণ চেষ্ঠা করেন বিভিন্ন অনুপ্রেরণামূলক গল্প, বাস্তব উদাহরণ ও বিভিন্ন প্রদর্শনীর মাধ্যমে এই প্রতিভাগুলোকে জাগ্রত করার।
সব ক্ষেত্রে শতভাগ সফল না হলেও কোন একজনকেও যদি Motivate করতে পারি, সেখানেই আমাদের সফলতা। একজন শিশুর শারীরিক বৃদ্ধির চাইতে মানসিক বিকাশ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
শিক্ষার্থীদের শারীরিক বৃদ্ধি খাদ্য নির্ভর হলেও মানসিক বিকাশের জন্য পরিবেশ পরিস্থিতি, দিক নির্দেশনা, ভাব প্রকাশের স্বাধীনতা, নেতৃত্ব দান, স্বীকৃতি প্রাপ্তি সব কিছু শিক্ষকের ওপরই নির্ভরশীল। আর এই সবকিছুর মূল জায়গাতেই রয়েছে শিক্ষকের অপরিসীম ভূমিকা।
লেখক: শিক্ষক, পিটিআই, জয়পুরহাট