কেরানীগঞ্জ নৃশংস হত্যাকাণ্ড ও লাশ গুমের ঘটনায় দুইজনের মুত্যুদণ্ড

অনলাইন ডেস্ক: পরকীয়া প্রেম ও লেনদেনজনিত বিরোধের জেরে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থানার কবিরাজ মফিজকে নৃশংসভাবে হত্যা করে লাশ গুমের অভিযোগে করা মামলায় দুই জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
আজ ঢাকার পঞ্চম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ইসরাত জাহান মুন্নী এ রায় ঘোষণা করেন ।
মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- কেরানীগঞ্জ থানার বিউতা হিন্দুপাড়া গ্রামের আল আমিনের স্ত্রী মাকসুদা আক্তার লাকী ওরফে হাসিনা (৩৭) ও একই এলাকার মো. আলাউদ্দিনের ছেলে মো. সালাউদ্দিন (৩৯)।
দুই আসামি পলাতক থাকায়, আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
অন্যদিকে মামলার আরেক আসামি নজরুল ইসলাম মারা যাওয়ার কারণে, মামলার দায় থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন তারানগর ইউনিয়নের বেউতাগন কবরস্থানের সামনে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার এসআই এস এম মেহেদী হাসান স্থানীয় এক ডোবা থেকে দুই হাত, দুই পা ও মাথাবিহীন একটি মৃতদেহ উদ্ধার করেন।
এ ঘটনায়, তিনি বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
জানা যায়, নিহত মফিজুর রহমান ওরফে মফিজ কবিরাজ (৪০) ঢাকার সাভার থানার ভাকুর্তার কাইশ্যার চরের মতিউর রহমানের ছেলে।
মামলার তদন্ত চলাকালে ২০১৮ সালের ২০ জানুয়ারি গ্রেফতার হন আসামি মাকসুদা ও সালাউদ্দিন। পরে জামিন পেয়ে পালিয়ে যান তারা।
মামলাটি তদন্ত করে ২০১৮ সালের ২১ সেপ্টেম্বর তিন জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। মামলার বিচার চলাকালে ১৯ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী রবিউল ইসলাম বাসস’কে বলেন, মামলার ভিকটিম পেশায় একজন স্বর্ণ ব্যবসায়ী ছিলেন। পাশাপাশি, তিনি কবিরাজি করতেন। আসামি লাকীর সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে উঠলে এক পর্যায়ে টাকা-পয়সা লেন দেনের বিরোধের জেরে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে আসামিরা।
তিনি আরো বলেন, ‘এটি একটি নৃশংস ও চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলা। তাকে মেরে ১০ টুকরো করে সেই দেহ যাতে মাগুর মাছ খেয়ে ফেলে সেজন্য তারা কেরানীগঞ্জের বেউতা গণকরের মাগুর মাছের খামারে ফেলে দেয়। ১৯ জন সাক্ষী সন্দেহাতীতভাবে এ অপরাধ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন। ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে মূলত ভিকটিমের ছেলের সঙ্গে তার খন্ডিত দেহের মিল পাওয়া যায়। এ অমানবিক ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক রায় হয়েছে।’
সূত্র: বাসস