ঢাকা | মে ২৮, ২০২৫ - ১:২৮ পূর্বাহ্ন

নড়াইলে কোরবানির জন্য প্রস্তুত ৫৫ হাজার পশু

  • আপডেট: Tuesday, May 27, 2025 - 4:44 pm

অনলাইন ডেস্ক: কোরবানির জন্য জেলায় প্রস্তুত করা হয়েছে ৫৫হাজার পশু। জেলার ৩ উপজেলায় চাহিদার চেয়ে ১৪ হাজার বেশি পশু প্রস্তুত রয়েছে।

জেলার মাইজপাড়া,নাকশী-মাদ্রাসা, লোহাগড়া, পহরডাঙ্গা, চাকই-মধুরগাতিসহ ছোট-বড় ১৩-১৪টি হাটে পশু বেচা-কেনা জমতে শুরু করেছে।কোরবানির পশুর পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলার ছোট-বড় খামারিরা। ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে খামারিরা প্রাকৃতিকভাবে মোটাতাজা করেছেন ষাঁড়, ছাগল, গাভী ও ভেড়া।

কোরবানি উপলক্ষে জেলায় প্রস্তুত করা হয়েছে ৫৪ হাজার ৫৮৫টি গবাদি পশু। ফলে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েও ১৪ হাজার ৬৯টি উদ্বৃত্ত পশু বিক্রি করা যাবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ।

জেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে জেলার সদর উপজেলায় ১৬ হাজার ২৭৫টি পশু প্রস্তুত করা হলেও কোরবানির জন্য চাহিদা রয়েছে ১১হাজার ৪৭১টি পশু।

এ উপজেলায় উদ্বৃত্ত পশুর সংখ্যা ৪হাজার ৮০৪টি। লোহাগড়া উপজেলায় ২০ হাজার ৩২৫টি পশু প্রস্তুত করা হলেও কোরবানির জন্য চাহিদা রয়েছে ১৯হাজার ১৪৮টি পশু। এ উপজেলায় উদ্বৃত্ত পশুর সংখ্যা ১হাজার ১১৭টি।কালিয়া উপজেলায় ১৭ হাজার ৯৮৫টি পশু প্রস্তুত করা হলেও কোরবানির জন্য চাহিদা রয়েছে ৯হাজার ৮৯৭টি পশু।

এ উপজেলায় উদ্বৃত্ত পশুর সংখ্যা ৮হাজার ৮৮টি। অনেক খামারি ঈদের আগে ক্রেতাদের ক্রয় করা গরু বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার সুবিধা দিয়ে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। ক্রেতারাও বাড়তি ঝামেলা এড়াতে সেই সুযোগ গ্রহণ করে খামারেই কোরবানির গরু কিনছেন।

জেলা সদর উপজেলার শিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়নের তারাপুর গ্রামের চিত্রা এগ্রো ফার্মের সত্ত্বাধিকারী মিলটন হোসেন সিকদার জানান, তিনি কোরবানির জন্য ৫৭টি গরু প্রস্তুত করেছেন। এবছর সবচেয়ে বড় ষাঁড়টি হচ্ছে ‘ব্লাক ডায়মন্ড’। কোরবানির জন্য প্রস্তুত ৩৫ মণ ওজনের ফ্রিজিয়ান জাতের এই ষাঁড়কে ফার্মের এক পাশে রেখে আলাদাভাবে পরিচর্যা করা হয়।

খামারের পশুর খাদ্য তালিকায় রয়েছে শুকনো খড়। তাছাড়া ভুট্টা, খেসারি ও জবের সংমিশ্রণে তৈরি ভুসি খাওয়ানো হয়। এছাড়া খাদ্য তালিকায় কাঁচা ঘাসও রয়েছে। গরমের মধ্যে পশুগুলিকে নিয়মিত গোসলও করানো হয়।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. সিদ্দীকুর রহমান বলেন,প্রাকৃতিক উপায়ে গবাদিপশু মোটাতাজাকরণে প্রতিনিয়তই প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে খামারিদের সচেতন ও উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। জেলা ও উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসের কর্মকর্তারা প্রতিটি ইউনিয়নে গিয়ে খামারিদের অংশগ্রহণে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে ক্ষতিকর ওষুধ ব্যবহার করে গবাদিপশু মোটাতাজাকরণে ভোক্তাদের কি কি মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে সেই বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন।

আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে খামারিরা সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে গবাদি পশু মোটাতাজা করছেন কি না সেই বিষয়ে সব সময় প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কঠোর নজরদারি রাখা হয়েছে। তাই এবার ভোক্তারা অনেকটাই প্রাকৃতিক উপায়ে বড় করা গবাদিপশুগুলো কোরবানি দিতে পারবেন বলে আশা করছি।

তিনি আরো বলেন, এবার স্থানীয় চাহিদা পূরণের পর ১৪ হাজার গবাদিপশু উদ্বৃত্ত থাকছে। জেলার ছোট-বড় সকল শ্রেণির খামারিরা গবাদিপশুর ভালো দামে পাবেন বলে আশা করছি। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে যেন কোন ঝামেলা ছাড়াই সুন্দর পরিবেশে জেলার বিভিন্ন হাট থেকে গবাদিপশু কিনতে পারেন সেই লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন ও প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর বাজার মনিটরিংয়ের কাজ করছে।

জেলা পুলিশ সুপার কাজী এহসানুল কবীর বলেন, পশুর হাটকে কেন্দ্র করে জেলার কোন সড়ক কিংবা মহাসড়কে যেন কেউ কোন চাঁদা আদায় করতে না পারে সেজন্য জেলা পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। এছাড়া জেলার প্রতিটি হাটের পরিবেশ সুন্দর রাখার লক্ষ্যে পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবে।

জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তার জাহান বলেন, জেলার হাটগুলোতে যেন কেউ গবাদিপশুসহ সকল পণ্যের অতিরিক্ত খাজনা আদায় করতে না পারে সে লক্ষ্যে সারাবছরই ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চলমান রয়েছে। তবে কোরবানির সময় কোন চক্র যেন কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয়ে কোন ধরনের অরাজকতার সৃষ্টি করতে না পারে সে লক্ষ্যে প্রতিটি হাটে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।

সূত্র: বাসস

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS