রোগী সেজে পুঠিয়া হাসপাতালে দুদক, খোঁজ মিলল নানা অনিয়মের

পুঠিয়া প্রতিনিধি: রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গোপন অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রোববার দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৫ পর্যন্ত টানা ৩ ঘণ্টা এই অভিযান চালায় দুদক রাজশাহী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের একটি বিশেষ টিম। অভিযানের শুরুতে সকাল আটটার দিকে দুদকের কর্মকর্তারা সাধারণ রোগীর ছদ্মবেশে হাসপাতাল এলাকায় প্রবেশ করে তথ্য সংগ্রহ করেন।
পরে সরাসরি অভিযান পরিচালনা করে হাসপাতালের বর্হি বিভাগ, জরুরি বিভাগ, প্যাথলজি বিভাগ, চিকিৎসারত শিশু, মহিলা ও পুরুষ ওয়ার্ড ও স্টোররুমে সরকারি ভাবে সরবরাহ করা ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম, খাদ্যসহ একাধিক বিষয় পর্যবেক্ষণ করে তারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের একাধিক অনিয়ম ও গাফিলতির চিত্র তুলে ধরেন।
পাশাপাশি দুদকের এ দল হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও বিভাগ ঘুরে ওষুধের স্টোররুমে থাকা সরকারি মালামালের সঙ্গে কাগজপত্রের যথাযথ মিল আছে কি না সেটা যাচাই করেন।
এসময় নানা অনিয়ম দৃশ্যমান হয়। দুদক জানিয়েছে, অভিযানে সময় পুঠিয়া হাসপাতালে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনুপস্থিতি, স্বাস্থ্য কর্মকর্তার ব্যক্তিগত কাজে অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার, অ্যাম্বুলেন্সে রোগী পরিবহনে ক্ষেত্রে নির্ধারিত ফি’র অতিরিক্ত অর্থ আদায়, রোগীদের রোগ নির্নয়ে প্যাথলজিসহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় রসিদ ছাড়া অতিরিক্ত অর্থ আদায়, রোগী ও স্বজনদের হাসপাতাল নিকটবর্তী বে-সরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রেরণ, বিদ্যুৎ এর লোডশেডিং এ জেনারেটর মেশিন বন্ধ রাখাসহ হাসপাতাল পরিচালনায় স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ কর্মচারীদের গাফিলতি ও অনিয়ম প্রমাণিত হয়েছে।
আরও কিছু বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে যথাযথ প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সুপারিশ করা হবে।
দুদক রাজশাহী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পুঠিয়া উপজেলা হাসপাতালে বিভিন্ন অনিয়মের সংবাদের ভিত্তিতে এ অভিযান চালানো হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও আবাসিক মেডিকেল অফিসারকে (আরএমও) না পেলেও তার প্রতিনিধির উপস্থিতিতে তথ্য যাচাই করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার গাফিলতিসহ বিভিন্ন অনিয়মের সত্যতা পাওয়া গেছে। এসময় দুর্নীতি দমন কমিশন রাজশাহী কার্যালয়ের উপ-পরিচালক বোরহান উদ্দিন জানান, আমরা সকাল থেকে ছদ্মবেশে হাসপাতালটি পর্যবেক্ষণ করেছি এবং এখানে নানান রকম অনিয়ম দুর্নীতি দেখতে পেয়েছি।
এমনকি চিকিৎসাধীন রোগীদের নিকট হতে অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণের সময় হাতেনাতে ধরতে সক্ষম হয়েছি। এসব রিপোর্ট আমরা কমিশনে জমা দিব পরবর্তীতে কমিশন কি ব্যবস্থা নিবেন তা আমরা জানিনা।