ঈদ সামনে রেখে মসলার বাজারে আগুন-নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন কঠোর নজরদারি

দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র কোরবানির ঈদ। এই উৎসব শুধু ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা নয়, বাঙালির ঘরে ঘরে এক বিশাল সামাজিক আয়োজনও বটে। আর ঈদের রান্নাবান্না মানেই মসলা-পণ্যের বিশেষ চাহিদা। কিন্তু এ চাহিদাকেই যেন সুযোগে পরিণত করেছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও বাজার ব্যবস্থার দুর্বলতা।
ফলে, কোরবানির ঈদ ঘিরে সাধারণ মানুষের হাঁসফাঁস করা বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে মসলার বাজার। সম্প্রতি প্রকাশিত অনলাইন খবর থেকে জানা গেছে, বাজারগুলোতে মানভেদে প্রতি কেজি জিরা বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায়, দারচিনি ৫২০, লবঙ্গ ১৩৫০, গোলমরিচ ১২০০ টাকায়।
এলাচের দামে যেন আগুন লেগেছে-প্রতি কেজি ৪৮০০ থেকে ৬০০০ টাকা। বিক্রেতারা আশঙ্কা করছেন, ঈদ সামনে রেখে এই দাম আরও বাড়তে পারে। এমন বাজার পরিস্থিতি মধ্যবিত্তের জন্য চরম চাপ সৃষ্টি করছে। অন্যদিকে, সবজি, চাল ও মুরগির বাজারে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে।
তবে ঈদের অন্যতম রান্না উপকরণ যেহেতু মসলা, তাই অন্য পণ্যের দামে স্বস্তি থাকলেও সামগ্রিক ব্যয়ের ভার লাঘব হচ্ছে না। প্রশ্ন হচ্ছে-এতবড় বাজার, এতো গুরুত্বপূর্ণ মৌসুমি চাহিদা থাকা সত্ত্বেও সরকার বা সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর প্রস্তুতি কতটুকু? কোরবানির ঈদের মতো একটি পূর্বানুমেয় উৎসবের সময়েও যদি বাজার ব্যবস্থাপনায় নিয়ন্ত্রণ রাখা না যায়, তাহলে সারা বছর সাধারণ ভোক্তার স্বস্তি কোথায়?
বাংলাদেশে মসলার একটি বড় অংশ আমদানিনির্ভর, ঠিক। তবে তার মানে এই নয় যে উৎসব এলেই দাম কয়েক গুণ বেড়ে যাবে। এখানে সিন্ডিকেট, বাজারে নজরদারির অভাব এবং সুশাসনের ঘাটতি বড় কারণ।
মজুতদারি ও অযৌক্তিক দামের ওপর কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। একই সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদে দেশে মসলাজাতীয় পণ্য চাষে উৎসাহ দেয়ার উদ্যোগও জরুরি। জনগণ ঈদ উদযাপন করতে চায় আনন্দের সঙ্গে, আতঙ্কে নয়।
তাই সরকারের উচিত এখনই কঠোর বাজার নজরদারি, সুষ্ঠু আমদানি নীতিমালা এবং মজুতদারদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান ব্যবস্থা গ্রহণ করা। কোরবানির ঈদ কেবল ধর্মীয় নয়, এটি কোটি মানুষের জীবনের অংশ-তাদের স্বস্তি ও ন্যায্যতার প্রশ্নে অবহেলার কোনো সুযোগ নেই।