শিবগঞ্জে রাস্তা সংস্কার করল স্কুল শিক্ষার্থীরা

শিবগঞ্জ (চাঁপাই) প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় হাসানপুর লক্ষ্মীপুর পাকা উচ্চবিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি উপজেলার পাকা ইউনিয়নে অবস্থিত।
একটি সড়কে কাদা হওয়ায় শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যেতে সমস্যা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের নিয়ে রাস্তা সংস্কারে নামেন শিক্ষকেরা। এমন ঘটনায় প্রশংসায় ভাসছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। অনেকে এমন কাজকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ৩৪০ জন। এর মধ্যে ১৫০ শিক্ষার্থী বোগলাউড়ি ফেরিঘাট পার হয়ে আসে। খরা মৌসুম হওয়ায় এখন হেঁটে স্কুলে আসছে শিক্ষার্থীরা। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে বৃষ্টি হওয়ায় সড়কটি কর্দমাক্ত হয় এবং শিক্ষার্থীদের আসতে সমস্যা হচ্ছে।
বিষয়টি বিবেচনা করে স্কুল কর্তৃপক্ষ নিজ উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের নিয়ে সড়কটি সংস্কারে নামে। এলাকাবাসীর দাবি, ওই ফেরিঘাট দিয়ে ২৫ থেকে ৩০টি গ্রামের ৩০-৩৫ হাজার মানুষ চলাচল করে।
দীর্ঘদিন ধরে সেখানে কালভার্ট নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন তাঁরা। অনেকবার মাপজোখ করলেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। আশ্বাসেই চলে গেছে বহু বছর।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল জাব্বার আলী বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে সড়কটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তাই শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের নিয়ে ১ ঘণ্টার ক্লাস বর্জন করে সেখানে ইটের সুরকি দিয়ে সংস্কার করা হয়েছে। এটি অস্থায়ী। এতে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় তেমন বিঘ্ন ঘটেনি।
অর্থের জোগান কোথা থেকে হয়েছে- এমন প্রশ্নে শিক্ষক আব্দুল জাব্বার জানান, তেমন অর্থ লাগেনি। এলাকাবাসীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে করা হয়েছে। আমরা কোনো চেয়ারম্যান কিংবা মেম্বাররকেও বলিনি। এটি ছোট একটি কাজ।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মমিনুল হক বলেন, বোগলাউড়ি ফেরিঘাটের ওপারে অর্ধেকের বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে রাস্তা কর্দমাক্ত হওয়ায় শিক্ষার্থীরা যখন আসে, তখন পায়ে কাদা লেগে যায়। আবার অনেকে পা পিছলে পড়ে যায়। সে জন্য শিক্ষার্থীদের নিয়ে সড়কটি সংস্কার করা হয়েছে।
শিবগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা আজাহার আলী বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নিজ উদ্যোগে সড়কটি সংস্কার করেছে। আমি সেটা শুনেছি। এটাকে আমি সাধুবাদ জানাই। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে মাপজোখের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
আজাহার আলী আরও বলেন, ওই এলাকা বন্যাকবলিত। তাই ছোট কোনো প্রকল্প নিয়ে কাজ করলে, সেটা অপচয় হবে। সেখানে টেকসই প্রকল্প হাতে নিয়ে কাজ করতে হবে। আমরা সেটা নিয়ে কাজ করছি।