লালপুরে আবারো প্রকাশ্যে গুলি
লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি: নাটোরের লালপুরে উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গোসাই আশ্রমে প্রকাশ্যে গুলিবর্ষণ ও ৪টি মোটরসাইকেল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
খবর পেয়ে যৌথবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নের পানসিপাড়া গ্রামে আশ্রম প্রাঙ্গনে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ, এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আশ্রমের আম বাগানের আম সংগ্রহের সময় একদল দুর্বৃত্ত আশ্রমের বাইরে ৮ থেকে ১০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে এবং সেখানে রাখা ৪টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে পালিয়ে যায়। আশ্রমের কমিটি গঠন নিয়ে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে বাগানের আম ক্রেতা নওপাড়া গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে নাসির হোসেন জানান, গত ১৮ মে আশ্রম কর্তৃপক্ষ থেকে আম ক্রয়ের চুক্তিনামা করি। আশ্রমের পক্ষে চুক্তিটি সম্পাদন করেন শ্রী চিমন্ত চন্দ্র রায় ওরফে শ্রী পরমানন্দ সাধু। আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে আম সংগ্রহ করার কথা আছে।
ইতিমধ্যে বাগানের কিছু আম পাকায় গতকাল সকালে আম সংগ্রহ করতে আসি। এসময় আশ্রমের ভিতরে আম সংগ্রহ করতে থাকা অবস্থায় আশ্রমের বাইরে একদল দুর্বৃত্ত এসে গোলাগুলি শুরু করে এবং আমার ও শ্রমিকদের ৪টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে।
এ বিষয়ে বিলমাড়িয়া গ্রামের অনিল কুমারের ছেলে সঞ্জয় কুমার নিজেকে আশ্রমের বর্তমান কমিটির সভাপতি দাবি করে বলেন, আম সংগ্রহের সময় আমি আশ্রমের ভিতরে ছিলাম। এর আগে আমার উপর হামলা করা হয়েছে। আবার গুলিবর্ষণ করা হলো। সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছি।
এসময় তিনি হামলার জন্য উত্তম কুমারকে অভিযুক্ত করেন। অভিযোগটি উত্তম কুমার অস্বীকার করে মুঠোফোনে বলেন, আমি নতুন কমিটিতে সভাপতি হওয়ার পর থেকে সঞ্জয় বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করে চলেছেন। সঞ্জয় কুমার আশ্রমে নিজের গত ১৫ বছরের দুর্নীতি আড়াল করার জন্য মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।
এ ব্যাপারে লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মমিনুজ্জামান জানান, ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
তদন্ত সাপেক্ষ আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে। এর আগে ২০২৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর পূর্ববর্তী কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে নতুন আহবায়ক কমিটি ও ২০২৫ সালের ১৩ জানুয়ারি নিয়মিত কমিটি গঠন করা হয়।
পরে কমিটি গঠন নিয়ে আদালতে একটি মামলা করা হয়। তখন থেকেই আশ্রমের পূর্ববর্তী কমিটির সভাপতি সঞ্জয় কুমার ও নতুন কমিটির সভাপতি উত্তম কুমারের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। গত ১৯ মার্চ সন্ধ্যা রাতে সঞ্জয় কুমারের উপর দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে যখম করেছিল।
সে সময় সঞ্জয় কুমার বর্তমান সভাপতি উত্তম কুমারের নেতৃত্বে তার ওপর হামলা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছিলেন। তবে উত্তম কুমার সে অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। ওই ঘটনায় একটি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।











