ঢাকা | মে ২১, ২০২৫ - ৩:১৩ পূর্বাহ্ন

মৌ-পতঙ্গ সুরক্ষার দাবিতে কৃষকবন্ধন

  • আপডেট: Tuesday, May 20, 2025 - 10:09 pm

স্টাফ রিপোর্টার: ফসলে ও ফলের গাছে কীটনাশকের অতিরিক্ত ব্যবহার, নিষিদ্ধ কীটনাশকের ব্যবহার বন্ধ না করা, বড় বড় বৃক্ষ কর্তন, দেশি বৃক্ষ কমে যাওয়াসহ জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে দিনে দিনে মৌ-পতঙ্গ কমে যাচ্ছে। মৌ-পতঙ্গ কমে যাবার কারনে ফসল চাষে খরচ বেড়েছে, ফসলে রোগ পোকার আক্রমণ বেড়েছে। মৌ-পতঙ্গ সুরক্ষার দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার রাজশাহীতে কৃষকবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ব মৌ-পতঙ্গ দিবস উপলক্ষ্যে রাজশাহীর পবা উপজেলার বড়গাছি বাজারে পবা উপজেলা সবুজ সংহতি ও উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক’র যৌথ আয়োজনে মৌ-পতক্ষ সুরক্ষার দাবিতে কৃষকবন্ধন হয়।

এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় এবারের মৌ-পতঙ্গ দিবসের প্রতিপাদ্য ইবব রহংঢ়রৎবফ নু হধঃঁৎব ঃড় হড়ঁৎরংয ঁং ধষষ। প্রকৃতির দ্বারা অনুপ্রাণিত মৌমাছি আমাদের সকলকে পুষ্টিকর খাদ্য তৈরীতে সহায়তা করে।

কৃষকবন্ধনে কৃষকরা দেশে নিষিদ্ধ কীটনাশকের ব্যবহার বন্ধের দাবি জানান। এবং কৃষিপ্রধান বাংলাদদেশে মৌ-পতঙ্গ সুরক্ষার আলাদা নীতিমালার দাবি জানান। পবা উপজেলার সবুজ সংহতির আহবায়ক কৃষানী মোসা: রহিমা বেগম বলেন- আমরা জানিনা কোন বিষে কি ক্ষতি হয়, ব্যবহার করার পর যখন ক্ষতি হয় তখন বুঝি কি সর্বনাশ হয়ে গেলো আমাদের। আমাদের হাতে বিষ দিয়েছে, যেগুলো ব্যবহার করলে আমাদের জীবনও যেমন বিপন্ন হচ্ছে তেমিন আমাদের জীব বৈচিত্র্যও নষ্ট হচ্ছে।

বড়গাছি কৃষক ঐক্যের সভাপতি আব্দুল জব্বার মিয়া বলেন- কীটনাশকের গন্ধে আমরা বাড়িতে থাকতে পারিনা, আমাদের ফসলে বিষ (কীটনাশক) দেয়া শিখিয়েছে, কিন্তু পরিবেশ রক্ষা শেখায়না। আমরা ফসল চাষে বিষের নির্ভর হয়েছি। বিষের বিকল্প হিসেবে আমরা অল্প সামান্য জৈব বালাই ব্যবহার করি। এটা সরকার থেকে আরো বেশি সহায়তা করতে হবে।

বারনই লোকসাহিত্য পরিষদের সভাপতি মো: জুয়েল আহমেদ বলেন- কীটনাশক আমাদের সবকিছু শেষ করে দিচ্ছে। কীটনাশকের কারনে আমাদের মৌ-পতঙ্গ হারিয়ে যাচ্ছে। তাই এর জন্য নীতিমালা থাকা দরকার। এভাবে আমরা আর শেষ হতে পারিনা।

কৃষকবন্ধনে মূল ধারণা পত্র পাঠ করে বারসিকের গবেষক ও আঞ্চলিক সমন্বয়কারী শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন- গবেষণায় দেখা যায় পৃথিবীর ৭৫ শতাংশ খাদ্যশস্য পরাগায়ন নির্ভর ফসল।

কীটনাশক এবং জলবায়ু পরিবর্তনসহ প্রকৃতি বিনাশী কার্যক্রমের কারনে মৌ-পতঙ্গ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। যা মানব সভ্যাতার জন্য হুমকি। ২০১৬ সালে জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, বিশ্বব্যাপী ৪০% এর বেশি অমেরুদন্ডী পরাগবাহক প্রজাতি, বিশেষ করে মৌমাছি ও প্রজাপতি, বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে।

তিনি আরো বলেন- বিশ্বোর বিভিন্ন দেশ মৌ-পতঙ্গ সুরক্ষায় সুনিদিষ্ট কার্যক্রম নিলেও কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে কোন কার্যকর উদ্যোগ এখনো নেয়া হয়নি। তিনি মনে করেন- বাংলাদেশে খুব দ্রুত জাতীয় মৌ-পতঙ্গ সুরক্ষা নীতিমালা তৈরী করা প্রয়োজন।

কীটনাশকের ভয়াবহতা থকে বাচতে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপসহ কৃষক এবং কমিউনিটি পর্যায়ে এর জনসচেতনতা তৈরী করতে হবে ।

কৃষকবন্ধনের মধ্যে দিয়ে পবা উপজেলার সবুজ সংহতির আহবায়ক তিনটি দাবি তুলে ধরেন- তা হলো- মৌ-পতঙ্গ সুরক্ষায় কার্যকর জাতীয় নীতিমালা তৈরী, বাংলাদেশের সকল পরিবেশ আইনে মৌ-পতঙ্গ সুরক্ষার কথা স্পষ্ট করে উল্লেখ করতে হবে, সরকারীভাবে মৌ-পতঙ্গ সুরক্ষা ও জনসচেতনতা তৈরীর কার্যকর কর্মসূচী নিতে হবে।

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS