‘প্রধান বিচারপতির ১২ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে দেশপ্রেমিক বিচারক প্রয়োজন’

রাজশাহীতে আয়োজিত সেমিনারে বিচারকবৃন্দ:
স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী জজশীপ ও ম্যাজিস্ট্রেসির উদ্যোগে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের সম্মেলন কক্ষে মঙ্গলবার ‘বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির ১২ দফা নির্দেশনা: বর্তমান প্রেক্ষিত ও ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সেমিনারে আলোচনা করতে গিয়ে বিচারকরা তাদের বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির ১২ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রয়োজন সৎ, দক্ষ, কর্তব্যপরায়ণ ও দেশপ্রেমিক বিচারক। তারা তাদের বক্তব্যে স্বল্পতম সময়ে রাজশাহী বিচারাঙ্গনে অনিয়ম দুর্নীতির মূলোৎপাটনপূর্বক গৃহীত সংস্কার কার্য সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সকলকে অবগত করেন।
সেমিনারে সিনিয়র সহকারী জজ মির্জা শায়লার সঞ্চালনায় রাজশাহী বিচার বিভাগে কর্মরত বিভিন্ন পর্যায়ের বিজ্ঞ বিচারকবৃন্দ, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মাসুদুল হক।
সেমিনারে কী নোট (key note) উপস্থাপন করেন সিনিয়র সহকারী জজ আশরাফুন্নাহার রীটা। তিনি বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির ১২ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে রাজশাহী বিচার বিভাগ কর্তৃক সম্পাদিত কর্মকাণ্ডসমূহ তথ্য ও ভিডিও চিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপন করেন।
সেমিনারে অংশগ্রহণকারী বিজ্ঞ বিচারকবৃন্দ, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ ৫ টি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে গ্রুপ প্রেজেন্টেশন প্রদান করেন এবং পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে তাদের মতামত ও সুপারিশ উপস্থাপনপূর্বক উক্ত নির্দেশনাসমূহ টেকসইকরণে ভবিষ্যৎ করণীয় সম্পর্কে বিভিন্ন অভিমত ব্যক্ত করেন।
রাজশাহীর চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল মালেক তার বক্তব্যে বলেন, দায়িত্ব পালনে সংশ্লিষ্ট সকলকে কোড অব কন্ডাক্ট যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।
বিচারাঙ্গনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকল্পে দ্রুততম সময়ে বিচারিক সেবা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়াও তিনি পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সেমিনারের সভাপতি রাজশাহীর সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ গোলক চন্দ্র বিশ্বাস ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ ও ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবে আত্মদানকারী শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করে তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির ১২ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রয়োজন সৎ, দক্ষ, কর্তব্যপরায়ণ ও দেশপ্রেমিক বিচারক।
২০২৪ সালের ১ নভেম্বরের পর রাজশাহী জজশীপ ও ম্যাজিস্ট্রেসির উদ্যোগে রাজশাহী আদালত প্রাঙ্গণকে একটি পরিছন্ন ও দর্শনীয় স্থানে রূপান্তর করাসহ রাজশাহী জেলা জজ আদালতের হেরিটেজ ভবনে দুটি এজলাস ও খাস কামরা সংস্কারপূর্বক সেখানে বিচার কার্য পরিচালনার উদ্যোগ গৃহীত হয়েছে।
তিনি তার বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেন, রাজশাহী জজশীপ ও ম্যাজিস্ট্রেসির ৪ জন কর্মচারীর বিরুদ্ধে অসদাচরণ ও দুর্নীতির অভিযোগে ইতোমধ্যে ১ জনকে চাকরীচ্যুত করা হয়েছে, ১ জন স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করায় কারণ দর্শানোর দায় হতে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে, দুই জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা চলমান রয়েছে।
তিনি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘোষণা করেন, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির ১২ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে গৃহীত সংস্কার, দুর্নীতি প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম, ও আদালতের প্রশাসনিক ও বিচারিক কার্যে গতিশীলতা আনয়নে নতুন নতুন উদ্যোগ গ্রহণের প্রচেষ্টা চলমান থাকবে। সেমিনারের শেষে জেলা ও দায়রা জজ উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে সেমিনারের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।