আ.লীগের দোসর’ আমলা-কর্মকর্তাদের নাম প্রকাশ

সোনালী ডেস্ক: সচিবালয়ে থাকা আওয়ামী লীগের দোসর আমলাদের তালিকা প্রকাশ করেছে ‘জুলাই ঐক্য’।
মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘সচিবালয়ে ও প্রশাসনে কর্মরত ফ্যাসিবাদের দোসরদের তালিকা প্রকাশ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন করে জুলাই ঐক্য। সংবাদ সম্মেলনে সচিবালয়ে কর্মরত ৪৪ জন আমলার তালিকা এবং প্রশাসনের ৫০ জনের মতো কর্মকর্তার তালিকা প্রকাশ করে।
তালিকায় যাদের ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে ‘জুলাই ঐক্য’। তারা হলেন-পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমূল আহসান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারহানা আহমেদ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব এমদাদুল্লাহ মিয়া, ভূমি আপিল বোর্ডের সচিব ইব্রাহিম, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক, ডাক ও টেলি যোগাযোগ বিভাগের সচিব মুশফিকুর রহমান, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব আবদুর রহমান খান, অর্থ বিভাগের সচিব ড. খায়রুজ্জামান মজুমদার, বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশন সদস্য রুহুল আমিন, দুর্নীতি দমন কমিশন সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন চেয়ারম্যান আমিনুল আহসান, বিপিএটিসি রেক্টর সচিব সাঈদ মাহবুব খান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সচিব মোকাব্বের।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব সাহদুর রহমান, জাতীয় উন্নয়ন প্রশাসন একাডেমির রেক্টর (সচিব) ড. শহিদুল্লাহ, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমির রেক্টর (সচিব) ড. ওমর ফারুক, শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম শফিকুজ্জামান, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব) নাসরিন আফরোজ।
বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান (চুক্তিভিত্তিক) মোহাম্মদ জয়নুল বারী, সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান (চুক্তিভিত্তিক) মুসলিম চৌধুরী, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আশরাফ উদ্দিন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ইশরাত চৌধুরী।
বিশ্ব ব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক (সচিব) শরিফা খান, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব ডা. সারোয়ার বারী।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) জাহেদা পারভীন, ইআরডি সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী, প্ল্যানিং কমিশনের সদস্য (সিনিয়র সচিব) এ এম আকমল হোসেন আজান, প্ল্যানিং কমিশনের সদস্য ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন, জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমির মহাপরিচালক (সচিব) সুকেশ কুমার সরকার, মহিলা ও শিশুবিষয়ক সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সংযুক্ত সচিব মোহাম্মদ মাহমুদুল হোসাইন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ সাইদুর রহমান, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (গ্রেড-১) গাজী মহম্মদ সাইফুজ্জামান, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান (গ্রেড-১) ডক্টর লিপিকা ভদ্র।
জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক (গ্রেড-১) আব্দুল কাইয়ুম, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ বুরোতে চুক্তিভিত্তিক মহাপরিচালক (গ্রেড-১) সালেহ আহমেদ মোজাফফর, মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (গ্রেড-১) কেয়া খান, জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের অতিরিক্ত সচিব ও মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ বশিরুল আলম।
ওয়াশিংটন ডিসির অতিরিক্ত সচিব ইকোনমিক মিনিস্টার মেহেদী হাসান, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুর রউফ, সরকারি কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক (সচিব) কাজী এনামূল হাসান, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মুফিদুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জুলাই ঐক্যের সংগঠক মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ। তিন সচিবালয়ে কর্মরত আওয়ামী লীগের দোসরদের চলতি মাসের মধ্যে চাকরিচ্যুতির দাবি জানান।
তিনি বলেন, জুলাই আগস্টে শুধু নয় গত সাড়ে ১৫ বছর সচিবালয়ের আমলা ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা যেভাবে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করেছিল তারা এখনো সচিবালয়সহ বিভিন্ন স্থান নিয়ন্ত্রণ করছে।
এ সময় শহিদ মুহতাসির রহমান আলিফের বাবা মোহাম্মদ গাজীউর রহমান তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের নাম পড়ে শোনান। তালিকায় ৪৪ জন আমলার নাম রয়েছে, যাদের আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
পরবর্তী পদক্ষেপ কালচারাল ফ্যাসিস্ট, শিক্ষাঙ্গণ, চিকিৎসাঙ্গন, আইনাঙ্গন এবং গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন সেক্টরে থাকা স্বৈরাচারের দোসরদের তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছে জুলাই ঐক্য।
সংবাদ সম্মেলনে সরকারের কাছে আট দফা দাবি জানিয়েছে জুলাই ঐক্য। দাবিগুলো হচ্ছে-
০১. আগামী ৩১ মে এর মধ্যে তালিকায় উল্লিখিত সন্ত্রাসী দল আওয়ামী লীগের সকল দোসরদের বাধ্যতামূলক অবসর দিতে হবে। ০২. তিন সরকারি কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করে দৃশ্যমান কাজের অগ্রগতি দেশের জনগণকে দেখাতে হবে।
০৩. দেশের তথ্য পাচারকারী ছাত্রজনতার বুকে গুলি চালানো, নির্দেশকারী এবং সহযোগিতাকারী সকল আমলা ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পরিবারসহ সকলের ব্যাংক হিসাব ও অবৈধ সম্পদ জব্দ করতে হবে। ০৪. স্বৈরাচারের দোসর আমলা ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
০৫. আগামী ৩৬ শে জুলাইয়ের (৫ আগস্ট) মধ্যে এখন পর্যন্ত চিহ্নিত সকল স্বৈরাচারের দোসরদের শ্বেতপত্র সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। ০৬. আইনের ১৩২ ধারার কারণে থানায় খুনি পুলিশদের নামে মামলা নেওয়া হয় না।
আগামী ৩১ মে এর মধ্যে এই ধারা বাতিল অথবা সংশোধন করতে হবে। ০৭. আগামী ৩১ মে এর মধ্যে সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়া ৬২৬ জনের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। তারা এখন কোথায় আছে এবং কত জন কার সহযোগিতায় দেশ ছেড়েছে তাদের তালিকাও প্রকাশ করতে হবে।