দুর্গাপুরে ২০০ বিঘা ফসলিতে জমিতে পুকুর খনন বন্ধ করল প্রশাসন

দুর্গাপুর প্রতিনিধি: রাজশাহীর দুর্গাপুরে অভিযান চালিয়ে প্রায় ২০০ বিঘা ফসলি জমিতে অবৈধ পুকুর খনন বন্ধ করলেন ইউএনও। এমন পদক্ষেপ নেয়ায় কৃষকদের প্রসংসায় ভাসছেন ইউএনও সাবরিনা শারমিন।
জানা যায়, গতকাল শনিবার দুপুরের পর অবৈধ পুকুরে অভিযান চলাকালে তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর কার্ত্তিক শাহার লোকজন প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করেন। পুকুরে ইউএনওর অভিযানের খবর পেয়ে আগে থেকেই বিপুল সংখ্যক লোক সমাবেত করেন। দুপুর পর ইউএনও সাবরিনা শারমিন ঘটনাস্থলে এসে পুকুর খনন বন্ধের নির্দেশ দেন। পরে পুকুর থেকে গাড়ি তুলে নেয়া নেওয়া হয়।
তবে এসময় পুকুরে ছিলেন না সাবেক তাহেরপুর পৌরসভার কাউন্সিলর কার্ত্তিক শাহা। তার বিপুল সংখ্যক অনুসারীরা পুকুরে অবস্থান নিয়ে ছিলেন। স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, এই বিলে পুকুর খনন হলে পাশের প্রায় দুই গ্রাম বর্ষাকালে জলাবদ্ধতা দেখা দিবে। শতশত হেক্টর ফসলি জমি জলাবদ্ধতায় পতিত হয়ে পড়বে।
গত বছর আগস্ট মাসে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বাগমারা উপজেলার সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের ছত্রছায়ায় তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর কার্ত্তিক শাহা দুর্গাপুর উপজেলার উজালখলসী বিলে প্রায় ২০০ বিঘা জমি জোরপূর্বক দখল নিয়ে পুকুর খনন কাজ শুরু করেন।
পরে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতন ঘটলে তারা পালিয়ে যান। আওয়ামী সরকার পতনের পর দীর্ঘ দিন বন্ধ ছিল খনন কাজ। হঠাৎ এখন তারা আবারও কৃষকের জমিতে পুকুর খনন শুরু করছেন। এতে এলাকার কৃষকরা ক্ষুদ্ধ হয়ে আছেন।
উজালখলসী গ্রামের বাসিন্দা রহমান মিয়া বলেন, আমার অল্প কিছু জমি পুকুরের মধ্যে রয়েছে। আমাকে না জানিয়ে তারা আমার জমিতে পুকুর খনন শুরু করছে। আমি একটি টাকাও পাইনি। শুনলাম ইউএনও এসে পুকুর খনন বন্ধ করে দিয়েছে। এতে আমরা এলাকাবাসী খুশি হয়েছি। এখানে পুকুর খনন হলে আমাদের পুরো গ্রাম বর্ষাকালে জলাবদ্ধতা হয়ে পড়বে।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও সাবরিনা শারমিন বলেন, উজালখলসী বিলে অনুমতি ছাড়াই পুকুর খনন হচ্ছিল। খবর আমি ও থানার ওসি সাহেব অভিযান দিই। সেখানে প্রচুর লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
এসময় পুকুর খনন বন্ধ করে গাড়ি তুলে নেয়া নির্দেশ দেয়া হয়। ইউএনও আরও বলেন, ওখানে উপস্থিত অনেক লোকজন আমাকে পুকুর খনন হওয়ার অনুরোধ করেছেন। আমি তাদের বৈধ পন্থায় আবেদন করে পুকুর খননের অনুমতি নেয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছি।