বাঘায় আম বাগান থেকে রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার

বাঘা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাঘার আরিফপুর গ্রাম। সেখানে রয়েছে তিন রাস্তার মোড়। এই মোড়ে রয়েছে কয়েকটি দোকানসহ একটি বটগাছ। এই বট গাছের ছাঁয়াই সকাল থেকে রাত আনুমানিক ১০টা পর্যন্ত লোকে লোকারণ্য থাকে।
এই মোড়ের পাশেই আছে একটি আম বাগান। সেখান থেকে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১১টার সময় সাদেক আলী নামে এক ব্যক্তির ক্ষতবিক্ষত রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
একই সাথে মৃত ব্যক্তির সৎ ভাই কামাল ডাকাত পলাতক থাকায় তার স্ত্রী ও পুত্রকে থানায় নিয়ে এসেছেন। খবর পেয়ে বুধবার সকালে থানা চত্বরে ভিড় করতে লক্ষ্য করা গেছে স্বজনদের।
স্থানীয় লোকজন জানান, মৃত সাদের আলী (৫০) একই গ্রামের নুর হালদাদের ছেলে। তাঁর দু’জন স্ত্রী রয়েছে। প্রথম পক্ষ আরিপপুর গ্রামের মেয়ে। তার দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বড় মেয়ে বিবাহিত। বর্তমানে প্রথম স্ত্রী বাবার বাড়ি থাকেন।
অপরদিকে সাদেক আলী দ্বিতীয় বিয়ে করে স্ত্রী নাদিরা বেগমের সাথে তার বাবার বাড়ি পাশ্ববর্তী গ্রাম চন্ডিপুরে ঘর জামাই থাকেন। তবে সাদেক আলীর বাড়ি আরিফপুর গ্রামে হওয়ার সুবাদে তিন এই গ্রামের মোড়ে প্রায় প্রতিদিনই বিকালে চা পান করতে আসেন।
সর্বশেষ গত মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ১১টার দিকে লোকমুখে মোবাইল ফোনে খবর পেয়ে পুলিশ প্রতিবেশী মকবুলের আম বাগান থেকে সাদেক আলীর রক্তাক্ত মরাদেহ উদ্ধার করেন।
আরিফপুর গ্রামের বাসিন্দা নওশাদ আলী, আয়বর আলী ও আজিজুল ইসলাম জানান, পুলিশ যখন সাদেক আলীর লাশ উদ্ধার করে, তথন তার বুকে-পিঠে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ও পায়ের রগ কাটা ছিল।
এদিকে পুলিশ গত মঙ্গলবার রাতে সাদেক আলীর পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে তার সৎ ভাই প্রতিবেশী কামাল ডাকাতের বাড়িতে যান। এ সময় তাকে বাড়িতে পাওয়া না গেলে তার মোবাইল নম্বরও বন্ধ পাওয়া যায়।
ঘটনার এক পর্যায় পুলিশ কামাল ডাকাতের স্ত্রী চাইনা বেগম ও বড় সন্তান বাসার আলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসেন। এলাকার লোকজন জানান, কামাল অত্র অঞ্চলে ডাকাত ও মাদক সেবনকারী হিসেবে পরিচিত। তার নামে থানায় বেশ কয়েকটি ডাকাতি মামলা রয়েছে।
বুধবার সাকালে সাড়ে ৮টায় বাঘা থানায় গিয়ে দেখা যায়, সাদেক আলীর স্বজনরা থানায় মৃত সাদেক আলীকে এক নজর দেখার জন্য থানা গোল চত্বরে বসে আছেন।
এ সময়র সাদেক আলীর প্রথম স্ত্রী আসেমা বেগম, দ্বিতীয় স্ত্রী নাদিরা বেগম এবং বড় মেয়ে সাথী আক্তার জানান, সাদেক আলীকে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তার সৎ ভাই কামাল ডাকাত হত্যা করে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। তাকে আটক করলে সাথে আর কারা ছিলো সব রহস্য বেরিয়ে আসেবে। আমরা এ বিষয়ে একটি মামলা করবো।
বাঘা থানা অফিসার ইনচার্জ আ.ফ.ম আসাদুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে আমরা সাদেক আলীর মরদেহ উদ্ধার করে রাতে একটি মাইক্রোযোগে থানায় নিয়ে এসেছি। গতকাল বুধবার সকাল ১০টায় লাশ রামেক হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় সাদেক আলীর দ্বিতীয় স্ত্রী অথবা বড় মেয়ে একটি অভিযোগ দেয়ার কথা রয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।