ঢাকা | মে ১৪, ২০২৫ - ৪:১৩ পূর্বাহ্ন

সিরাজগঞ্জে চলমান তীব্র গরমে আখের রসের চাহিদা বেড়েছে

  • আপডেট: Tuesday, May 13, 2025 - 10:43 pm

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: অভাব-অনটন দূরে ঠেলে আখের রস বিক্রি করে ভাগ্যবদল করেছেন হেকমত আলী (৩৫)। মানুষ সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখেলেও অনেক স্বপ্নই বাস্তবে রূপ লাভ করে না। স্বপ্নকে সামনে রেখেই বেঁচে থাকার লক্ষ্যে সংগ্রাম করে যাচ্ছে গ্রাম-বাংলার হতদরিদ্ররা।

এদের মধ্যে হেকমত আলীও একজন।  যে বয়সে তার বই খাতা নিয়ে স্কুলে যাবার কথা, সেই বয়সে দারিদ্র্যে কষাঘাতে বাবা আইয়ুব আলীকে রস বিক্রিতে সহযোগিতা করতেন এই হেকমত।

বার্ধক্যজনিত কারণে তার বাবা শয্যাগত হলে বাবার সংসার পরিচালনার দায়িত্ব তিনি নিজের কাঁধে তুলে নেন। দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে আখের রস বিক্রি করে পরিবার-পরিজন করেছে দিনাতিপাত করছে হেকমত।

জানা যায়, ভয়াল যমুনার করাল গ্রাসে বাপ-দাদার জমিজমা ভিটামাটি হারিয়ে আজ সিরাজগঞ্জ শহরের মিরপুর ওয়াবদা এলএল কুঠি এলাকার একটি পরিত্যক্ত স্থানে বাবা মা, ভাই বোন ও ছেলে মেয়ে নিয়ে ভাঙা ঘরে বসবাস করে।

তিনি প্রাথমিক পর্যায়ে বাবার সাথে হস্তচালিত মেশিন দিয়ে আখের রস বেড় করে বিক্রি করলেও ১০ বছর আগে একটি ডিজেলচালিত মেশিন কিনেছে। অভাব-অনটনের মধ্যদিয়েও ছেলেমেয়েকে পড়াশোনা করাচ্ছেন। তার ভয়, দারিদ্র্যের কষাঘাতে একমাত্র ছেলে সন্তানকেও যেন আমার মতো আখের রস বিক্রি করতে না হয়।

শহরের এসএস রোডস্থ বুলবুল তেলের মিলের গলির মাথায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আখ মাড়াই করে রস বিক্রি করেন। প্রতি গ্লাস ২০ টাকা করে বিক্রি করে প্রতিদিন ২ থেকে আড়াই হাজার টাকা রোজগার করেন তিনি। গ্রীষ্মকালে এই রস ব্যাপকভাবে বিক্রি হলেও ঝড়-বৃষ্টির দিনে আর শীত মৌসুমে বিক্রি বন্ধ রাখা হয়।

তাই গ্রীষ্মকালে জমানো টাকা দিয়েই শীতকালীন সময়ে পরিবারের যাবতীয় খরচ চালানো হয়। তিনি আরও জানান, সিরাজগঞ্জ জেলার সলঙ্গা থানা ও গাইবান্ধা থেকে ঢাকাগামী দূরপাল¬ার আখ বহনকারী ট্রাকগুলো হতে কড্ডার মোড়ে আখ নামানো হয়। ফলে দাম অনেকটাই বেশি পড়ে। প্রতি গ্লাস রস বিক্রি করে ৪-৫ টাকার মতো লাভ হয়। রোডের ধারে কাজ করতে গিয়ে অনেক সময় অনেকেরই গালমন্দ হজম করতে হয়। যা গরিবের ভাগ্যের লিখন।

সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নারী-পুরুষ ক্রেতাদের ব্যাপক ভিড় পরিলক্ষিত হয়। তাছাড়াও শহরে রিকশা, ভ্যান চালকেরাও গাড়ি থামিয়ে পিপাশা নিবারণে এই আখের রস পান করতে দেখা যায়। তাছাড়াও বাজার করতে আসা সুকুমার চন্দ্র দাস, আব্দুল হামিদ জানায়, পিপাসা নিবারণে আখেরর রসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

আমরাও প্রায় নিত্যদিনই এই আখের রস পান করে থাকি। এ ব্যাপারে মেডিনোভা হাসপাতালের পরিচালক ডা. আকরামুজ্জামান জানান, আখের রসের গ্লুকোজ থাকায় শরীরের ক্লান্তি দূর করে। চলমান তাপাদ্রহে আখের রস এবং পর্যাপ্ত পানি পান করার জন্য তিনি পরামর্শ প্রদান করেন।

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS