রাজনীতির মাঠে আলোচনায় তামিম

অনলাইন ডেস্ক: ছরের শুরুতেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন তামিম ইকবাল। তাই বলে আলোচনার কেন্দ্র থেকে হারিয়ে যাননি। ক্রিকেট অঙ্গনের বাইরে এবার তাকে ঘিরে আলোচনা রাজনীতির মাঠে। দলীয় কোনো পদ-পদবি না থাকলেও তামিম ইকবাল বিএনপির তারুণ্যের সমাবেশে যোগ দেওয়ার পর নতুন আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে।
চট্টগ্রাম তথা দেশের রাজনীতি অঙ্গনে শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন ও জল্পনা। কেউ কেউ ভাবছেন এবার তামিম হয়তো চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ কোনো আসন থেকে নির্বাচনের সবুজ সংকেত পেয়েছেন। তবে তার ঘনিষ্ঠজনরা বলছেন, রাজনীতি নয়, ক্রিকেট তথা দেশের ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়নই তামিমের অগ্রাধিকার।
গত ১০ এপ্রিল তিনি উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠে বিএনপির ‘তারুণ্যের মহাসমাবেশ’-এ, যেখানে ক্রীড়াক্ষেত্রে চট্টগ্রামের পিছিয়ে পড়া নিয়ে খোলামেলা মন্তব্য করেছেন তামিম।
চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ডে বিএনপির তিন অঙ্গসংগঠন—জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের উদ্যোগে আয়োজিত এই সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিশেষ অতিথি ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন।
অনেক জল্পনা কল্পনার মধ্যেই বক্তব্যের শুরুতেই তামিম নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে বলেছিলেন, ‘আমি পলিটিক্যাল কেউ নই। আমি একজন স্পোর্টসম্যান। তাই স্পোর্টস নিয়েই কথা বলব।’ এরপর তামিম গত ১৫ বছরে চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনের পিছিয়ে পড়ার কথা বলেন।
তার ভাষায়, ‘একটা সময় সব খেলাতেই জাতীয় দলে চট্টগ্রামের ছয় থেকে সাতজন করে থাকতেন। কিন্তু গত ১৫ বছরে চট্টগ্রাম থেকে কষ্টেসৃষ্টে একজন কী দুজন সুযোগ পেয়েছেন। এমনটা কেন হয়েছে, তার জবাব খুঁজে বের করা জরুরি। তবে ভবিষ্যতে এই চিত্র বদলাবে বলে আশা প্রকাশ করেন জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক এবং দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল।
বিএনপির নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত কথা হওয়ার বিষয়টিও বক্তব্য উল্লেখ করেছেন তামিম ইকবাল। তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামের খেলাধুলা নিয়ে আমার সঙ্গে বিএনপি নেতাদের নিয়মিত কথা হয়। আমরা কীভাবে চট্টগ্রামের খেলাধুলাকে আগের জায়গায় নিয়ে আসতে পারি, সে ব্যাপারে আলোচনা হয়।’
তামিম ইকবাল যোগ করেন, ‘আমি নিশ্চিত, তারা যখন সুযোগ পাবেন সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন চট্টগ্রামকে এগিয়ে নিতে। সেটি যে ধরনের খেলাধুলাই হোক না কেন। ক্রিকেট, ফুটবল, ব্যাডমিন্টন, যেকোনো ইভেন্ট প্রোমোট করবেন।’
তবে একটি রাজনৈতিক দলের সমাবেশে তামিমের যোগ দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ তাকে রাজনীতিতে জড়িয়ে সাকিব-মাশরাফির বর্তমান দুরবস্থার কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন।
হঠাৎ তামিমের বিএনপির সমাবেশে অংশগ্রহণের পর তার রাজনীতিতে জড়ানোর বিষয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। তাহলে কি তামিম ইকবাল বিএনপিতে যোগদান করছেন, কিংবা নির্বাচনে দাঁড়াবেন, নাকি ক্রিকেট বোর্ডের দায়িত্ব পাচ্ছেন—এসব নানা আলোচনা ডালপালা মেলছে।
তবে তামিম ইকবালের রাজনীতিতে আসার গুঞ্জনের বিষয়ে বিএনপির চেয়ারপার্সনের ফরেন অ্যাফের্য়াস কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু গণমাধ্যমকে বলেন, বিএনপির ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশে’ যোগ দিয়েছিলেন তামিম ইকবাল। তিনি একজন র্স্পোটসম্যান। এই সমাবেশে যোগদানের সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা আগে শুনতাম তামিম ইকবাল বিএনপি পরিবারের সন্তান। তিনি সমাবেশে চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গন নিয়ে যেসব প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন, তা বাস্তবায়নের জন্য আমরা চাই তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় হোন। তার মতো লোক রাজনীতিতে এলে চট্টগ্রাম তথা দেশের ক্রীড়াঙ্গনে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হবে।