সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ টাকা হাতিয়েছেন সাবেক এমপি আয়েনের ভাইরা, আসামি কাফেলার পরিচালক

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সাবেক এমপি ও আওয়ামী লীগ নেতা আয়েন উদ্দিনের ভাইরা ভাই গিয়াস উদ্দিন মাস্টার হজ্বযাত্রীদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রাজশাহীর নিউ যমুনা ফেব্রিক্স হজ্ব কাফেলার পরিচালক নূর হোসেন সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেছেন। রোববার সকালে রাজশাহী নগরীর পূবালী মার্কেটে নিজের কার্যালয়ে তিনি এই সংবাদ সম্মেলনের অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, গিয়াস উদ্দিন মাস্টার ও মকবুল হোসেন নামের এক ব্যক্তি অন্তত ১৬ জন ব্যক্তির কাছ থেকে ২০ থেকে ৫০ হাজার করে মোট প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
মকবুলের বাড়ি জেলার বাগমারা উপজেলার সুজনপালশা গ্রামে। মকবুল ও গিয়াস উদ্দিন যমুনা হজ্ব কাফেলার নামে টাকা নিলেও রশিদ দিয়েছেন পদ্মা হজ্জ্ব কাফেলার নামে। এখন একজন প্রতারিত ব্যক্তি মামলা করেছেন। এই মামলায় আসামি করা হয়েছে যমুনা হজ্ব কাফেলার পরিচালক নূর হোসেনকে। অথচ তিনি টাকা নেননি।
নূর হোসেন বলেন, ‘করোনাকালীন সময়ে আমার কাফেলা থেকে রাজশাহীর কয়েকজনকে হজ্বে পাঠানোর কথা হয়। ওই সময় তৎকালীন এমপি আয়েন উদ্দিনের ভাইরা ভাই গিয়াস উদ্দিন মাস্টারের সাথে পরিচিত হই। তাঁর মারফত মকবুলের সঙ্গে পরিচয়। মকবুল জানান, তিনি আমার কাফেলায় হজযাত্রী পাঠাতে সহযোগী হিসেবে কাজ করবেন।
এরপর আমি হাজীদের জন্য জায়গা বুকিং করতে সৌদি আরবে যাই। সেখানে গিয়ে অর্থ সংকটে পড়লে বিষয়টি মকবুল ও গিয়াস উদ্দিনকে জানাই। পরে তারা আমার নাম ভাঙিয়ে বাগমারার হজ্বযাত্রীদের কাছ থেকে ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে তোলেন। কিন্তু ওই টাকা আমাকে দেননি।
তিনি দাবি করেন, তার হজ্ব কাফেলার নাম যমুনা হলেও পদ্মা হজ্ব কাফেলা নামের একটি ভুয়া মেমো তৈরি করে গিয়াস উদ্দিন ও মকবুল টাকা তুলে নেন। পরবর্তীতে হাজিদের কাছ থেকে তিনি বিষয়টি জানতে পারেন।
এরপর দুজনের কাছে টাকা ফেরত চাইলে তারা দলীয় প্রভাব দেখান। নানারকম হুমকি-ধমকি ও ভয়ভীতি দেখাতে থাকেন দুজনে। ফলে তিনি টাকা আদায় করে হাজিদের ফেরত দিতে পারেননি। এরই মধ্যে গত বছরের শেষের দিকে আবদুল কাইয়ুম নামের একজন মামলা করেন।
এতে ২ লাখ ৪১ হাজার টাকা দাবি করা হয়। নূর হোসেনের দাবি, প্রতারক মকবুল কাইয়ুমকে দিয়ে এই মামলাটি করিয়েছেন। এ মামলায় মকবুল নিজে সাক্ষীও হয়েছেন। তিনি এখন মিথ্যা মামলার ঘানি টানছেন।
সংবাদ সম্মেলনে নূর হোসেন ঘটনাগুলোর যথাযথ তদন্ত দাবি করে বলেন, ‘এই প্রতারক চক্রের কবল থেকে আমি বাঁচতে চাই। আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলতে চাই যে, সুষ্ঠু তদন্ত করে আমার বিরুদ্ধে করা মিথ্যা মামলা নিষ্পত্তি করা হোক। দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে আমি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতিও অনুরোধ জানাই।’
অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত মকবুল হোসেনকে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি। সাবেক এমপি আয়েন উদ্দিনের ভাইরা ভাই গিয়াস উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি হাইস্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক।
মকবুলের মাধ্যমে আমি যমুনা কাফেলা থেকে ওমরাহ করেছি। কিন্তু ওই কাফেলার নামে কারও কাছ থেকে কোনো টাকা নিইনি। মকবুল টাকা নিয়েছিল, সেই টাকা নূর হোসেনকেই দিয়েছেন। কিন্তু নূর হোসেন এখন অস্বীকার করে যাচ্ছেন।’