ঢাকা | মে ১২, ২০২৫ - ৯:০৪ অপরাহ্ন

শিরোনাম

নওগাঁ, চাঁপাইসহ বিভিন্ন জেলায় একদিনে বজ্রাঘাতে প্রাণ গেল ১১ জনের

  • আপডেট: Monday, May 12, 2025 - 12:20 am

সোনালী ডেস্ক: নওগাঁ, চাঁপাইসহ সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে বজ্রাঘাতে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঁচজন, কিশোরগঞ্জে তিনজন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ ও হবিগঞ্জে একজন মারা গেছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৃথক বজ্রাঘাতের ঘটনায় পাঁচজন নিহত হয়েছে।

গতকাল রোববার বিকালে জেলার নাসিরনগর ও আখাউড়ায় উপজেলায় এসব ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন-সরাইলের কালিকচ্ছ গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক, নাসিরগরের গোর্কণ গ্রামের শামসুল হুদা, ভলাকুট ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের জাকিয়া বেগম (৮), আখাউড়া উপজেলার রুটি গ্রামের সেলিম মিয়া, বনগজ গ্রামের জামির খাঁ।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বিকালে নাসিরনগরের টেকানগর গ্রামে ধান কাটছিলেন আব্দুর রাজ্জাক নামে (৩৫) নামে এক কৃষক। এ সময় বজ্রাঘাত হলে তিনি আক্রান্ত হন। এতে ঘটনাস্থলে মারা যান।

তিনি জেলার সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ গ্রামের জুয়াদ আলীর ছেলে। তিনি নাসিরনগরে ধান কাটতে গিয়েছিলেন।  এছাড়াও এই উপজেলার গোকর্ণ গ্রামের বেড়িবাঁধ এলাকায়ও ফসলি মাঠে কাজ করার সময় শামসুল হুদা (৬৫) নামে এক কৃষক বজ্রাঘাতে মারা যায়। তিনি নোয়াখালী জেলার আব্দুস সালামের ছেলে। তিনি শ্বশুড়বাড়িতে নাসিরনগরের গোকর্ণ গ্রামে বসবাস করেন।

এছাড়া ভলাকুট ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের ফুফুর বাড়িতে বেড়াতে এসে নিহত হয় জাকিয়া বেগম নামের ৮ বছরের এক শিশু। সে বিকালে শিশুদের সঙ্গে খেলা করার হঠাৎ বজ্রাঘাতের শিকার হন। এতে ঘটনাস্থলেই সে মারা যায়। এদিকে, আখাউড়া উপজেলার বনগজ গ্রামের ধান কাটার মেশিন নিয়ে মাঠে যাচ্ছিলেন জামির খাঁ। বজ্রাঘাতের শিকার হয়ে তিনিও মারা যান।

তিনি বনগঞ্জ গ্রামের মদন খার ছেলে। এছাড়াও রুটি গ্রামে নিজ ধানি জমিতে ধান কাটার পর খড় গুছিয়ে রাখার কাজে ব্যস্ত ছিলেন সেলিম মিয়া (৬০) । এ সময় বজ্রাঘাতে তিনিও নিহত হন। আখাউড়া ও নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা পাঁচজন মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে খোঁজ খবর নেয়া হয়েছে।

কিশোরগঞ্জের ভৈরব ও কুলিয়ারচরে পৃথক স্থানে বজ্রাঘাতে তিন কৃষক নিহত ও আহত হয়েছেন একজন। রোববার (১১ মে) বিকাল ৩টার দিকে ভৈরব উপজেলার শ্রীনগর গ্রামে ও কুলিয়ারচর এবং হোসেনপুর উপজেলায় বজ্রাঘাতের ঘটনায় এসব হতাহতের ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- ভৈরব উপজেলার শ্রীনগর গ্রামের ইউনুস মিয়ার ছেলে ফয়সাল মিয়া (২৮) ও রসুলপুর গ্রামের আফছর উদ্দিন মিয়ার ছেলে ফারুক মিয়া (৬৫) এবং কুলিয়ারচর উপজেলার হাজারিনগর গ্রামের সফিকুল ইসলাম সফু মিয়ার ছেলে কবির মিয়া (২৫)। আহত হয়েছেন হোসেনপুর উপজেলার আড়াইবাড়িয়া গ্রামের আবু বকর (৬০)।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিকাল তিনটার দিকে বজ্রাঘাতসহ বৃষ্টি শুরু হয়। আগে থেকেই জমিতে কাজ করছিলেন ওই তিন কৃষক। বজ্রাঘাতে আক্রান্ত হয়ে তিনজন গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয় লোকজন তাদেরকে উদ্ধার করে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

অপরদিকে হোসেনপুর উপজেলার কুড়িঘাটে এলাকায় বজ্রাঘাতে আহত হন আড়াইবাড়িয়া গ্রামের আবু বকর। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হোসেনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

তিনি বর্তমানে সুস্থ আছেন। ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. উম্মে হাবিবা জুঁই ও হোসেনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তানভীর হাসান জিকো এসব হতাহতের ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, ধান কাটার সময় বিকালে সদর উপজেলার বুলনপুর গ্রামে বজ্রপাতে  কাইমুল (৪০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নওগাঁ প্রতিনিধি জানান, নওগাঁয় হঠাৎ কালবৈশাখী তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়েছে কিছু এলাকা।

রোববার বিকাল ৫টার দিকে শুরু হয় এই তাণ্ডব। এতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে জেলায়। বিশেষ করে জেলার মান্দা, সাপাহার ও পত্নীতলা উপজেলার কিছু এলাকার ওপর দিয়ে এই ঝড় বয়ে যায়। ঝড় বৃষ্টির সময় বজ্রাঘাতে উপজেলার কুসুম্বা দিয়াড়াপাড়া গ্রামে জিলুর রহমান নামে এক যুবককে মৃত্যু হয়েছে।

নিজের জমিতে কাজ করছিলেন জিল্লুর। ঝড় বৃষ্টি দেখে বাড়ি ফিরছিলেন তড়িঘড়ি করে। কিন্তু পথে ফাঁকা মাঠে বজ্রাঘাতে মারা যান তিনি। এ সময় আহত হন শফিকুল ইসলাম নামে এক যুবক। তাকে চিকিৎসার জন্য মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়েছে। জানা যায়, হবিগঞ্জে বিকাল ৫টার দিকে জেলার আজমিরীগঞ্জে ড্রেনে গোসল করার সময় বজ্রপাতে সাজু মিয়া (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি উপজেলার কাকাইলছেও ইউনিয়নের ডেমিকান্দি গ্রামের তজম আলী মিয়ার ছেলে।

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS