শিক্ষাবিদ এলতাস উদ্দীনের জানাজা চাঁপাইনবাবগঞ্জে অনুষ্ঠিত

চাঁপাইনবাবগঞ্জ ব্যুরো: জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশের প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ ও গবেষক-প্রফেসর এলতাস উদ্দিনের তৃতীয় জানাজার নামাজ নিজ বিদ্যাপীঠ চাঁপাইনবাবগঞ্জের হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে গতকাল সোমবার বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত হয়।
জানাজায় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক আব্দুস সামাদ, হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকবৃন্দ, প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্রবৃন্দ, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
শ্রদ্ধা নিবেদন করেন হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পক্ষে বর্তমান ছাত্রবৃন্দ ও শিক্ষক-কর্মচারিবৃন্দ, হরিমোহন প্রাক্তন ছাত্র সমিতি ও দৈনিক প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যবৃন্দ।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ ও গবেষক- প্রফেসর মুহম্মদ এলতাসউদ্দিন গত ১১ মে রোববার দুপুর ১২টার সময় ঢাকায় ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। তিনি ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের চাঁদলাই গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
তাঁর পিতা এসাহাক মন্ডল ও মাতা আফরোজা বেগম। ১৯৪৮ সালে নবাবগঞ্জ কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় ১ম বিভাগে প্রথম হন। প্রফেসর এলতাস উদ্দিন ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনে ইন্টারভিউ দিয়ে সরাসরি উপাধ্যক্ষ নিযুক্ত হন এবং রাজশাহী টিচার্স ট্রেনিং কলেজে যোগদান করেন।
এক বছরের মাথায় তিনি অধ্যক্ষ হয়ে দীর্ঘ ১১ বছর অতিবাহিত করেন। তিনি ১৯৮২ হতে ১৯৮৩ পর্যন্ত প্রায় দেড় বছর যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং সেখান থেকে বদলি হয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, ঢাকায় চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত হন।
সেখানে তিনি দীর্ঘ পৌনে পাঁচ বছর চাকরি করে ১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দে অবসর গ্রহণ করেন। এরপর থেকে তিনি মাঝে মধ্যে কনসালট্যান্ট হিসেবে কাজ করেছেন শিক্ষার বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে। তিনি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের বিভিন্ন সাধারণ বিজ্ঞান বই রচনাসহ বেশ কিছু পাঠ্যপুস্তক সম্পাদনা করেছেন।
তিনি সি-ইন-এড, বি.এড. শ্রেণির বেশ কিছু পাঠ্যপুস্তক রচনা ও সম্পাদনাও করেছেন। তিনি কয়েকটি বই অনুবাদও করেছেন। তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ: উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থাপনা (২০০২), শিক্ষা-সংস্কৃতি ও অন্যান্য প্রসঙ্গ (২০০৭), যাঁদের সান্নিধ্যে ধন্য হয়েছি (২০০৮), আমার দেখা মুক্তিযুদ্ধ (২০০৯), দাদীর আমলের কথা (২০১০), বাবার আমলের কথা (২০১২) চাঁপাইনবাবগঞ্জ পরিচিতি ও লোক সংস্কৃতি (২০১২), নির্বাচিত প্রবন্ধ (২০১৩) এবং বিংশ শতাব্দির চিকিৎসা বিজ্ঞান (২০১৪)।