একসময়ের স্রোতস্বিনী সোনাই নদী এখন মরা খাল

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া ইউনিয়নের রাউতরা বড়াল নদীর উত্তর দিক থেকে শাখা বের হয়ে পূর্ব-পশ্চিমে দিগন্ত জোড়া ফসলের মাঠ চিড়ে শান্তভাবে বয়ে গেছে সোনাই নদী।
এক সময়ের ভরা যৌবনা স্রোতস্বিনী এই নদীটি কালের বিবর্তে যৌবন হারিয়ে নাব্যতা সঙ্কটে এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। বৈশাখের শেষ লগ্নে শাহজাদপুরের বিভিন্ন নদ-নদী নয়া জোয়ারের পানিতে টইটুম্বুর হয়ে উঠলেও সোনাই নদীর তলায় হাঁটু পানি।
এর ফলে একদিকে এই নদীকে কেন্দ্র করে জীবিকা নির্বাহ করা স্থানীয় জেলে সম্প্রদায় যেমন কর্মহীন তেমনি স্থানীয় কৃষক ও গোখামারিরা পর্যাপ্ত পানির অভাবে ভুগছেন নানা সঙ্কটে।
এ নিয়ে স্থানীয় কৃষক ও জেলে সম্প্রদায় সোনাই নদীর তলায় পানির মধ্যে দাড়িয়ে খননের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় কৃষক ইসহাক, ফয়জাল, ফজর আলীসহ অনেকে। এসময় বক্তারা বলেন, সোনাই নদীর দুই তীর ঘেঁষে কয়েক হাজার হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে ধান।
অথচ নদীতে পানি না থাকায় সেচ মৌসুমে গভীর নলকূপের পানি ব্যবহার করা হয়েছে অতিরিক্ত খরচের মাধ্যমে। এছাড়া মাইলের পর মাইল ফসলের জমি থাকলেও রাস্তা না থাকায় নৌপথই একমাত্র ভরসা। এমন জনগুরুত্বপূর্ণ একটি নদীতে নাব্যতা সঙ্কটে নৌকা চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় কৃষকের ফসল ঘরে তোলা দূরূহ হয়ে পড়েছে।
বিকল্প পদ্ধতিতে মহিষ ও ঘোড়ার গাড়িতে করে ফসল আনলেও খরচ বাড়ছে দ্বিগুণ। অন্যদিকে বাংলাদেশের বৃহত্তম বাথান ভূমি বড়াল, ধলাই এবং সোনাই নদীকে কেন্দ্র করেই। এর ফলে হাজার হাজার গরু এই নদীর পানির ওপর নির্ভরশীল। একইসঙ্গে হাজার হাজার লিটার দুধ নৌপথে আনা-নেয়া করার জন্যই এই নদী খননের প্রয়োজন।
কৃষক ও খামারিদের বাচাতে দ্রুত নদী খনন করার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানান তারা। এ বিষয়ে শাহজাদপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুশফিকুর রহমান জানান, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।