নিয়ামতপুরে জীবিত নবজাতককে মৃত ঘোষণা!

নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর নিয়ামতপুরে জীবিত নবজাতককে মৃত ঘোষণার অভিযোগ উঠেছে নিয়ামতপুর ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
এছাড়াও ওই অপারেশনে অংশ নেয়া চিকিৎসক ডাক্তার রুহুল আমিনের বিরুদ্ধেও চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ তুলেছেন প্রসূতির পরিবার। জানা গেছে, গত শুক্রবার বিকালে উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের গোপাল চক এলাকার ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা নারী নাজমা বেগমের (২৫) রক্তক্ষরণ হলে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে তিনি ওই ক্লিনিকে ভর্তি হোন।
ক্লিনিক কর্র্র্তৃপক্ষ অন্তঃসত্ত্বা নারীর অবস্থা দেখে তার পেটের বাচ্চা মারা গেছ বলে তাদের জানান এবং দ্রুত অপারেশনের পরামর্শ দেন। তারা এও বলেন, দ্রুত অপারেশন না করলে প্রসূতিকে বাঁচানো যাবে না বলেই তাড়াহুড়ো শুরু করেন।
তাদের তাড়াহুড়োয় ভয় পেয়ে অপারেশন করার জন্য বলেন প্রসূতির বাবা-মা। এ ঘটনায় রাজশাহী মেডিকেলের সার্জন ডাক্তার রুহুল আমিন অপারেশন করেন। এরপর প্রসূতি নারী ও নবজাতক শিশুকে রেখে চলে যান তিনি। পরবর্তীতে নবজাতকের শ্বাস-প্রশ্বাস পরিলক্ষত না হলে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ।
কিছু সময় পর ক্লিনিক মালিক শরিফুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী পারমিতা নবজাতককে মৃত ঘোষণা করে তার মরদেহ প্যাকিং করে রাত ৮ টার দিকে পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেন। ভুলক্রমে প্যাকিং বাক্সে অপারেশনের কাঁচিও রেখে দেন তারা।
বাড়ি ফিরে পরিবারের সদস্যরা দাফনের প্রস্তুতির সময় হঠাৎ সেই নবজাতক নড়ে ঊঠতে দেখে। শিশুটির প্রাণ আছে বুঝতে পেরে দ্রুতই উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যান তারা এবং বিষয়টি থানায় অবহিত করলে তাঁরা উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দেন।
প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক কায়সার রহমান শিশুটি জীবিত রয়েছে বলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। রাজশাহী মেডিকেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক নবজাতকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই অন্তঃসত্ত্বার মা নাজমা বলেন, ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের তাড়ার কারণে দ্রুত অপারেশন করা হয়েছে। শিশুটি মারা গেছে বলে আমাদের কাছে তুলে দেয়। দাফন করার উদ্দেশ্য নিয়ে গেলে শিশুটি নড়ে ওঠে। আমরা খুব গরিব অসহায় মানুষ, এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
ক্লিনিকের মালিক শরিফুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী পারমিতার দাবি, অন্তঃসত্ত্বা নারীর পরিবারের সাথে আলোচনার মাধ্যমেই অপারেশন করা হয়েছে। নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনাটি দুর্ঘটনা বলছেন তাঁরা। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন, মৃত নবজাতককে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।