ঢাকা | মে ৯, ২০২৫ - ৪:৫২ পূর্বাহ্ন

চাঁপাইয়ে এবারও থাকছে না আম পাড়ার সময়সীমা

  • আপডেট: Friday, May 9, 2025 - 12:15 am

চাঁপাই ব্যুরো: দেশের বিভিন্ন জেলায় আম পাড়ার সময়সীমা বেঁধে দেয়া হলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জে কোন সময়সীমা নির্ধারণ করেনি জেলা প্রশাসন। ফলে পরিপক্ক এবং পাকলেই তা বিক্রি করতে পারবেন আমচাষিরা।

বৃহস্পতিবার বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ মঞ্চে ‘ম্যাংগো ক্যালেন্ডার’ প্রণয়ন, নিরাপদ ও বিষমুক্ত আম উৎপাদন, বিপনন, পরিবহন ও বাজারজাতকরণের লক্ষে আয়োজিত  মতবিনিময়  সভায় এ সিদ্ধান্তের কথা জানান জেলা প্রশাসক আব্দুস সামাদ।

সেই সাথে অপরিপক্ক আম কেউ যাতে বাজারজাত করতে না পারে সেজন্য তৎপর থাকবে ভ্রাম্যমান আদালত। তবে কোন অসাধু ব্যবসায়ী এর সুযোগ নিলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও মতবিনিময় সভা থেকে জানানো হয়।

জেলা প্রশাসক আব্দুস সামাদের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আফাজ উদ্দিন, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. ইয়াছিন আলী, হর্টিকালচার সেন্টার উপ-পরিচালক একেএম মনজুরে মাওলা, আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোশারফ হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম শাহীদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বারের সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ, বিপণন কর্মকর্তা মমনিুল হক, রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের ডেপুটি চীফ কর্মাশিয়াল ম্যানেজার (বাণিজ্যিক) আনোয়ার হোসেন, রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের পাকশীর বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা মোঃ নাসির উদ্দিন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মুনজের আলম মানিক, শিবগঞ্জ ম্যাংগো প্রডিউসার কো-অপারেটিভ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খান শামীম প্রমুখ।

এছাড়াও মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন আমচাষি, ব্যবসায়ী, আড়তদারসহ বিভিন্ন স্টেক হোল্ডার। সভায় সকল স্টেক হোল্ডারের সম্মতিতে জানানো হয়, গাছে পাকলেই আম নামিয়ে বিক্রি করা যাবে। আম পাড়ার জন্য কোন ক্যালেন্ডার ঘোষনা করা হচ্ছেনা এবারও। চাষিদের সুবিধার্থে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এসময় জেলা প্রশাসক জানান, আম পচনশীল পণ্য এবং গন্তব্যে পৌছানোর আগেই যাতে নষ্ট হয়ে না যায়, সেদিকে পরিবহনসহ সংশ্লিষ্টরা সজাগ থাকবেন। আসন্ন আম মৌসুমে সহনশীল দর ও যত্নের সাথে কুরিয়ার সার্ভিসে আম পরিবহনের আহ্বান জানান তিনি।

সভায় আম পরিবহনের সময় পথে ট্রাকে চাঁদাবাজী রোধের ব্যাপারে সকলকে সজাগ এবং সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে আসার আহবানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আমচাষি, উদ্যোক্তা ও ব্যবসাায়ীরা আম শিল্পের উন্নয়ন ও নায্যমূল্য নিশ্চিতে উপযুক্ত বাজার ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি বিদেশে আম রফতানি ও রফতানির বাধা দূরীকরণ, প্যাকেজিং হাউস নির্মাণসহ আমের প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং সারা জেলায় আমের ওজন একই করার দাবি জানালে এসব বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণের কথা জানানো হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

মতবিনিময় সভায় আম চাষি, ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে জোরালো দাবি উঠে আম পরিবহনে কুরিয়ার সার্ভিসগুলোর অতিরিক্ত ভাড়া, রাস্তায় চাঁদাবাজি, কানসাট আম বাজারের যানজটসহ ৪০ কেজির পরিবর্তে ৫০ থেকে ৫৫ কেজিতে কাঁচা আম মন হিসেবে বিক্রি করতে বাধ্য করা হয়।

তবে এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনসহ সকল স্টেক হোল্ডাররা প্রাথমিকভাবে পাকা আম সাড়ে ৪২ কেজিতে এবং কাঁচা আম ৪৫ কেজিতে মন হিসেবে বিক্রির প্রাথমিক সিদ্ধান্তে উপনীত হন। যদিও এটি চূড়ান্ত সিধান্ত নয় এবং অন্যান্য সদস্যাগুলো খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসও দেন জেলা প্রশাসন।

এদিকে আম পাড়ার সময়সীমা নির্ধারত না হওয়ায় খুশি আম চাষি, ব্যবসায়ী ও বাগান মালিকরা। তারা বলছেন, বর্তমানে আবহাওয়া ভালো থাকায় এ সিধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন তারা। চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবার প্রায় ৪ লাখ মেট্রিকটন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধালন করেছে কৃষি বিভাগ। আর আম চাষ হয়েছে ৩৭ হাজার ৫০৪ হেক্টর জমিতে।

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS