পদ্মার ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন

পাবনা প্রতিনিধি: পাবনার সুজানগর উপজেলায় পদ্মা নদী তীরবর্তী এলাকায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। কর্তৃপক্ষ কোন ধরনের পদক্ষেপ না নেওয়ায় গত কয়েক দিনে উপজেলার সাতবাড়ীয়া, মানিকহাট, নাজিরগঞ্জ ও সাগরকান্দি ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী শত শত বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
হুমকির মুখে রয়েছে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বসতভিটাসহ বিভিন্ন স্থাপনা। অবৈধভাবে পদ্মা নদী থেকে প্রভাবশালী মহল অপরিকল্পিতভাবে বালি উত্তোলন নদী ভাঙনের অন্যতম কারণ বলে জানিয়েছেন স্থানীয় নদীপারের বাসিন্দারা। এদিকে ভাঙন রোধ ও নদীর তীর রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা।
গত বৃহস্পতিবার উপজেলার পদ্মা নদী তীরবর্তী সাতবাড়ীয়ার তারাবাড়ীয়া এলাকায় এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সাতবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ময়েন উদ্দিন মোল্লা, বিএনপি নেতা মোহাম্মদ আলী টুকু, সাতবাড়ীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক(ভারপ্রাপ্ত) শরিফুল ইসলাম, আবুল কালাম, আব্দুল আলীম, ওয়ালিদ হাসান, বিকাশ রায়, শিক্ষক খাজা মঈনুদ্দিন, মনোয়ার হোসেন, নুরুজ্জামান নুরু, সিসিডিবির পাবনা জোনাল এরিয়া ম্যানেজার রিচার্ড দোবে, আলাউদ্দিন বিশ্বাস, সৈয়দ আলী মাস্টার ও আব্দুর রশীদ প্রমুখ ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে খরস্রোতা এই পদ্মা নদী আমাদের যেমন দিয়েছে, আবার নিয়েছেও অনেক। ইতিমধ্যে ইউনিয়নের হরিরামপুর, ফকিৎপুর, নিশ্চিন্তপুরসহ অনেক গ্রাম, সাতবাড়ীয়া বাজার এবং শত শত বিঘা ফসলি জমি, অসংখ্য স্থাপনা ও জনপদ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
নতুন করে আবারও শুরু হয়েছে পদ্মার করালগ্রাসী ভাঙন। তারাবাড়ীয়া, হঠাৎপাড়া, ফকিৎপুর, সাতবাড়ীয়া, নতুনপাড়া, সিঁন্দুরপুর, নারুহাটিসহ দশটি গ্রামের সহস্রাধিক বাড়ি, আড়াইশো বছরের পুরোনো প্রায় দুইশো দোকান, সাতবাড়ীয়া ডিগ্রি কলেজ, শতবর্ষী সাতবাড়ীয়া উচ্চ বিদ্যালয়, সাতবাড়ীয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, সাতবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়, সাতবাড়ীয়া পরিবার স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ইউনিয়ন ভূমি অফিস, চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছয়টি মসজিদ, দুইটি মাদ্রাসা, পাঁচটি হিন্দু মন্দির, চারটি ব্যাংকসহ অনেক সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা আজ পদ্মার করাল গ্রাসের সম্মুখীন।
সাতবাড়ীয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা ও দৈনিক যুগান্তরের সার্কুলেশন ম্যানেজার সাইদুল হক জানান, এখনই দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে উল্লিখিত স্থাপনা ও জনপদসহ অসংখ্য জানমালের ভয়াবহ ক্ষতি সাধিত হবে।
তাই নদী ভাঙন রোধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।