ঢাকা | মে ৭, ২০২৫ - ৩:৫৮ পূর্বাহ্ন

বাগমারায় অবৈধ পুকুরখননের অভিযোগে কথিত সাংবাদিকের কারাদণ্ড

  • আপডেট: Tuesday, May 6, 2025 - 11:08 pm

স্টাফ রিপোর্টার: বাগমারায় ধানী জমিতে অবৈধভাবে পুকুর খননের অভিযোগে এক কথিত সাংবাদিককে হাতেনাথে আটক করা হয়েছে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে তার দুই লাখ টাকার অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে দুই মাসের বিনাশ্রমে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

কথিত ওই সাংবাদিকে নাম মাজহারুল ইসলাম চপল (৩৬)। সে মোহনপুর উপজেলার বিদিরপুর গ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।

উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নের করখন্ড গ্রামের মুনছুর রহমানের ছেলে এলাকার প্রভাবশালী বিদ্যুৎ হোসেন কিছুদিন আগে পশ্চিম দৌলতপুর গ্রামের অর্ধশতাধিক কৃষকের জমি দখল করে পুকুর খননের প্রক্রিয়া শুরু করেন। ওইসব জমিতে বোরো চাষ করা হয়েছে।

তিনি এক্সেভেটর (ভেকু) দিয়ে প্রায় ১০০ বিঘা জমির চারপাশে ঘিরে ফেলে পুকুর খনন শুরু করেন।

এসময় জমির মালিকেরা বাধা দিতে গেলে ভাড়াটে লোকজন দিয়ে হুমকি দেয়া হয়। নিরুপায় হয়ে কৃষকদের পক্ষে গৃহবধূর স্বামী মাইনুদ্দিনসহ দুই ব্যক্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার বিকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহাবুবুল ইসলাম সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এসময় পুকুর খননকারীদের একজন কথিত সাংবাদিক মাজহারুল ইসলাম ওরফে চপলকে হাতেনাতে আটক করা হয়। এ সময় পুকুর খনন কাজে ব্যবহৃত এক্সেভেটর (ভেকু) ভেঙে অকার্যকর করে দেয়া হয়।

স্থানীয় অর্ধশত কৃষক জানান, ভাড়াটে লোকজন নিয়ে তাঁদের ধানচাষ করা জমি দখল করে পুকুর খনন শুরু করা হয়েছে। জমির চারপাশে সন্ত্রাসীবাহিনী পাহারা বসিয়ে পুকুর খনন করা হচ্ছে। উপজেলার বাকশৈল গ্রামের গৃহবধূ রোকসানা বেগম ও তাঁর দেবব গোলাম রহমান জানান, তাঁদের ২৯ শতকসহ এলাকার কৃষকদের প্রায় ১০০ বিঘা জমি দখলে নিয়ে পুকুর খনন শুরু করা হয়েছে।

আর কয়েকদিন পরে ধান ঘরে তুলতে পারতেন তবে সে সুযোগও দেওয়া হয়নি। গৃহবধূ রোকসানা বলেন, ওই জমির ধান দিয়ে তার পরিবার চলে। জোর করে পুকুর খনন করছে প্রভাবশালীদের ছত্রছায়া বিদ্যুৎ হোসেন ও তার সহযোগিরা। বাধা দিলে তারা মারমুখীর শিকার হচ্ছেন। এতে বাধ্য হয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছি।

প্রশাসনের ব্যবস্থা নেয়ায় তিনি খুশি। তবে ভ্রাম্যমানের জরিমানার খবর পেয়ে ওই গৃহবধূর বাড়িতে বিদ্যুতের শ্যালক শাহীন আলম ও বিদ্যুতের বাবা মুনসুর রহমান গৃহবধূর ছেলে ও স্বামীকে বাড়ি থেকে বের হতে দেয়নি।

এতে তার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। এই বিষয়ে অভিযুক্ত বিদ্যুৎ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি পুকুর খননের কথা স্বীকার করেছেন। তবে কৃষকদের কাছ থেকে পুুকুর খননের জন্য জমি ইজারা নেয়া হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক মাহবুবুল ইসলাম বলেন, ফসলি জমিতে অবৈধভাবে পুকুর খনন আইনগত অপরাধ। কৃষকদের জমি দখল করে পুকুর খননের দৃশ্য দেখা গেছে। কৃষকদের জমি উদ্ধার করা হয়েছে।

এই বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। জোরপূর্বক জমি দখল করে পুকুর খনন করার অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালতে পুকুর খননের সহায়তা করার দায়ে ঘটনাস্থল থেকে মোজহারুল ইসলাম চপল নামে একজনকে আটক করা হয়।

পরে তাকে ভ্রাম্যমান আদালতে হাজির করা হলে সে নিজের দোষ স্বীকার করায় দুই লাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে দুই মাসের বিনাশ্রমে কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS