বাঘা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাঘায় আদিবাসীদের সর্বজনীন শিব মন্দিরে গভির রাতে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে উপজেলার বলিহার মন্দিরে এই আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে। শিব মন্দিরের সভাপতি সত্যেন্দ্রনাথ মল্লিকের দাবি, জমি নিয়ে বিরোধ থাকার জের ধরে এ ঘটনা ঘটতে পারে।
বৃহস্পতিবার খবর পেয়ে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাম্মি আক্তার, রাজশাহী জেলা সহকারী পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম, চারঘাট সার্কেলের এএসপি আব্দুল খালিদ, বাঘা থানা অফিসার ওসি আ.ফ.ম আসাদ্দুজ্জামান ও স্থানীয় বিএনপি এবং জামায়াতের নেতৃবৃন্দ। তাঁরা মন্দির কতৃপক্ষকে এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন।
বলিহার শিব মন্দির কতৃপক্ষ জানান, এখানে সরকারি ৭৯ শতাংশ খাস জমি আছে। এর মধ্যে বিগত সরকার আমলে ১৫ জন আদিবাসী পরিবারের নামে সাড়ে ৬৭ শতাংশ জমি বরাদ্দ দেয়ার মাধ্যমে গুচ্ছগ্রাম নির্মাণ করা হয়। প্রকৃত অর্থে আমরা ভোগ করছি ৪২ শতাংশ জমি।
তাই পরবর্তীতে এখানে দুই শতক জায়গার উপরে সর্বজনীন শিব মন্দির স্থাপন করা হয়। অবশিষ্ট জমি ভোগ করছেন স্থানীয় নুর মোহাম্মদ দ্বিগরের ওয়ারিশগণ। তিনি আরো বলেন, গত বুধবার রাত ২টার দিকে কে-বা কারা এই মন্দিরে আগুন দেয়। এসময় আমাদের সম্প্রদায়ের কবিতা রানী প্রকৃতির টানে সাড়া দিয়ে বাইরে এলে ঘটনা দেখতে পান এবং আগুন-আগুন বলে চিৎকার দিলে আমরা সবাই পানি ঢেলে আগুন নিয়ন্ত্রণ করি।
বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাম্মি আখতার বলেন, খবর পেয়ে সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভুক্তভুগিদের আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। একই সাথে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যাতে ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট না হয়, সে জন্য স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের পরামর্শ দিয়েছি।
বাঘা থানার ওসি আ.ফ.ম আসাদ্দুজ্জামান জানান, খবর পেয়ে আমিসহ পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত পুর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে খবর পেয়ে বাঘা উপজেলা পূজা উৎযাপন পরিষদের নেতা শ্রী অশিত কুমার বাকু পান্ডে ও অপুর্ব কুমার সাহা-সহ উপজেলা বিএনপির আহবয়ক ফকরুল ইসলাম বাবলু, বাঘা পৌর বিএনপির সভাপতি কামাল হোসেন, সাধারণন সম্পাদক তফিকুল ইসলাম তফু এবং পৌর জামায়াতের আমির অধ্যপক সাইফুল ইসলমসহ দলীয় নেতৃবৃন্দরা সেখানে যান এবং এ জঘন্য ঘটনার তিব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান।
একইসাথে তদন্তপূর্বক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীরদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।