রাবি রেজিস্ট্রারের বাসভবনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি

রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদের বাসভবনে ককটেল বিস্ফোরণ করেছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এই হামলার সঙ্গে জড়িতদের আগামী ১২ ঘন্টার মধ্যে তদন্ত করে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। দাবি মানা না হলে পরবর্তীতে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
আজ বৃহস্পতিবার (০১ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে ‘সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ’-এর ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
গতকাল বুধবার গভীর রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ও আরবি বিভাগের অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদের বাসভবনে ককটেল বিস্ফোরণ করে দুর্বৃত্তরা।
বিনোদপুরের মন্ডলের মোড়ে তাঁর নিজ বাড়ির দরজার সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। তবে এ ঘটনায় কেউ আহত হননি।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে শিক্ষার্থীরা ‘আমার সোনার বাংলায় সন্ত্রাসীদের ঠাঁই নাই’, ‘সন্ত্রাসীদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘ক্যাম্পাসে বোমাবাজি বন্ধ কর’, ‘ককটেল ও বোমাবাজির অপরাজনীতি বন্ধ করুন’, ‘মাসউদ স্যারের কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে’,’সন্ত্রাসীদের দ্রুত চিহ্নিত করে কঠিন বিচারের আওতায় আনতে হবে’, প্রভৃতি লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন ও স্লোগান দেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজীব বলেন, ‘মাসউদ স্যার জুলাই আন্দোলনে আমাদের সহযোদ্ধা ছিলেন। রুয়া (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন) নির্বাচনে তিনি একজন প্রার্থী।
রুয়া-রাকসু নিয়ে যখনই আমরা জোর দাবি জানিয়ে আসছি, তখনি এ রকম একটা হামলার ঘটনা ঘটেছে। সেই জায়গা থেকে একটি প্রশ্ন থেকেই যায় যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কতটুকু নিরাপদ।
অবিলম্বে এই ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দিতে হবে। সেইসঙ্গে আগামী ১২ ঘন্টার মধ্যে সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করতে না পারলে আমরা কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘আমাদের জুলাই আন্দোলনের অন্যতম পথযোদ্ধা মাসউদ স্যারের বাড়ির সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ও হামলার ঘটনা ঘটেছে। যতক্ষণ এ ঘটনার তদন্ত চলমান, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা কোনো পক্ষকেই দোষারোপ করব না।
আমরা দেখতে চাই বিপ্লবের নয় মাস পরে এসেও প্রশাসন ঠিক কতটা সচল হয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন শিক্ষকের যদি কোনো ধরনের নিরাপত্তা না থাকে তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা কোথায়?’
দুর্বৃত্তদের ষড়যন্ত্রকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শেখ ফাহির আমিন বলেন, ‘আজকে অত্যন্ত লজ্জাজনক পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছে।
আমরা ভাবতে পারিনি জুলাই অভ্যুত্থানের কোনো অগ্রনায়ককে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে জীবনের হুমকির সম্মুখীন হতে হবে।
যখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গণতান্ত্রিক উপায়ে শিক্ষার্থীদের আকাঙক্ষা বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে, ঠিক এমন মুহুর্তে জুলাইয়ের অগ্রনায়ক মাসউদ স্যারের বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে।
আমরা মনে করছি যারা এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দিতে চায়।’
মানববন্ধনটি সঞ্চালনা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক ফজলে রাব্বি মো. ফাহিম রেজা।
এ সময় আরও বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক গোলাম কিবরিয়া মো. মেশকাত চৌধুরি, রাবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মাহায়ের ইসলাম, মো. আতাউল্লাহ প্রমুখ।
এ সময় কর্মসূচিতে বিভিন্ন বিভাগ ও ইন্সটিটিউটের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।