দুই বছরে ১২ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান করতে চায় প্রাণ

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে দীর্ঘ ২২ বছর ধরে বন্ধ থাকা রাজশাহী টেক্সটাইল মিল পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) ভিত্তিতে ভাড়া নিয়েছে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পগ্রুপ প্রাণ-আরএফএল।
প্রতিষ্ঠানটি নতুনভাবে ‘বরেন্দ্র রাজশাহী টেক্সটাইল লিমিটেড’ নামে ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে যাত্রা শুরু করেছে। কাজ করছেন এক হাজার শ্রমিক। এখানে দুই বছরে ১২ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান করতে চায় প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ।
‘বরেন্দ্র রাজশাহী টেক্সটাইল লিমিটেড’ চালুর বিষয়ে গতকাল সোমবার রাজশাহীর একটি রেস্তোরাঁয় ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে জাাননো হয়, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিল করপোরেশনের (বিটিএমসি) সঙ্গে গত বছরের অক্টোবরে চুক্তি স্বাক্ষরের পর ডিসেম্বরেই কারখানার দায়িত্ব বুঝে নেয় প্রাণ-আরএফএল।
দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার তিন মাসের মাথায় কারখানায় পরীক্ষামূলক উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয়। আগামী দুই বছরের মধ্যে কারখানাটি পুরোদমে চালু হবে।
প্রায় ২৬ একর আয়তনের এই কারখানাকে প্রাণ-আরএফএল পরিণত করতে চায় উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ পরিবেশবান্ধব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে। শতভাগ রপ্তানিমুখী এ কারখানায় তৈরি করা হবে বিভিন্ন ব্যাগ, জুতা ও তৈরি পোশাক। তাছাড়া এখানে একটি আধুনিক কল সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হবে। আর কারখানায় বিনিয়োগ করা হবে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা।
অনুষ্ঠানে প্রাণ-আরএফএল গ্রপের বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল বলেন, ‘আমরা মনে করি দেশের উন্নয়নের জন্য ঢাকাকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বের হয়ে আসতে হবে। তাই আমরা উত্তরবঙ্গে এই বৃহৎ শিল্প প্রকল্প শুরু করেছি। এর মাধ্যমে রাজশাহীর হাজার হাজার মানুষ কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবেন এবং স্থানীয় অর্থনীতি গতিশীল হবে।
তিনি বলেন, ‘এই কারখানাটি হবে সম্পূর্ণ সাসটেইনেবল গ্রীন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক, যেখানে থাকবে সোলার এনার্জি, গ্রীন জোন ও ওয়াটার রিসাইক্লিং ব্যবস্থা। কারখানাটি শতভাগ রপ্তানিমুখী হবে।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান মাল্টি লাইন ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক আনিসুর রহমান অনুষ্ঠানে বলেন, ‘এরই মধ্যে কারখানায় থাকা পরিত্যক্ত একমাত্র শেডকে মেরামত করে স্বল্প আকারে জুতা ও ব্যাগ উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। এখানে রাজশাহী অঞ্চলের প্রায় এক হাজার লোক কাজের সুযোগ পেয়েছেন।
এছাড়া আরও এক হাজার লোক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। মোট ১২ হাজার কর্মী হবে দুই বছরে।’ তিনি আরও বলেন, স্থানীয় কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এখানে একটি ‘স্কিলস ডেভেলপমেন্ট সেন্টার’ স্থাপন করা হবে। রাজশাহীর শ্রমবাজারকে কাজে লাগিয়ে রাজধানীমুখী প্রবণতা রোধ করায় এ বিনিয়োগের অন্যতম উদ্দেশ্য।
আমরা আশাবাদী এই প্রকল্পটি সাফল্য পেলে ভবিষ্যতে রাজশাহী অঞ্চলে আরও বড় পরিসরে বিনিয়োগ ও সম্প্রসারণের পথে এগোতে পারবো। বর্তমানে রাজশাহী অঞ্চলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের বরেন্দ্র ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক ও প্রাণ এগ্রো লিমিটেড নামে দুইটি কারখানা রয়েছে, যেখানে প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (জনসংযোগ) তৌহিদুজ্জামান ও বরেন্দ্র রাজশাহী টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানার অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার শরীফ উদ্দিন আহমেদসহ গ্রুপটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।