ঢাকা | মে ২২, ২০২৫ - ১১:৩০ অপরাহ্ন

থমকে গেছে জনগণের বহুল আকাক্সিক্ষত সেতুর নির্মাণকাজ

  • আপডেট: Tuesday, April 29, 2025 - 12:53 am

জমি অধিগ্রহণসহ নানা জটিলতা:

আতিক ইসলাম সিকো, শিবগঞ্জ থেকে: চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে জমি অধিগ্রহণসহ নানা জটিলতার কারণে জনগণের বহুল কাঙ্খিত পাগলা নদীর উপর সেতু নির্মাণের কাজ থমকে গেছে।

তিন বছর মেয়াদের এ সেতুর কাজ গত দেড় বছরের মাত্র ৪৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। সেতুর দুই দিকে প্রায় ৩৪-৩৫ বাড়ি দীর্ঘদিনেও উচ্ছেদ প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। ফলে বিঘ্নিত হচ্ছে সেতু নির্মাণ কাজ বলে জানান সেতু নির্মাণের সংশ্লিষ্টরা।

তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, আগামী ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হবে। উচ্ছেদের জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করা হয়েছে। সেটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সরেজমিনে নিমার্ণাধীন সেতু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মাত্র দুটি পাইলিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে।

বাকিগুলোর কাজ অত্যন্ত ধীর গতিতে চলছে। সরঞ্জামাদি দীর্ঘদিন ধরে চারিদিকে পড়ে আছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, শুরু থেকে সেতু নির্মাণের কাজে অনিয়ম করায় এলাকাবাসী বাধা দিয়েছিল।

যা তদন্ত সাপেক্ষে অনিয়ম দূর করা হয়েছে। তবে এখনো সেতু নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। সেতু নির্মাণ সামগ্রী খোলা আকাশের নিচে পড়ে থেকে রোদে পুড়ছে ও বৃষ্টিতে ভিজছে। এতে কর্তৃপক্ষের কোন পদক্ষেপ নেই।

তারা আরো জানান, সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করার পর ঠিকাদার বন্যা, বৃষ্টি ও নদী বিলাসের জমি অধিগ্রহণের অজুহাতে তিন দফা কাজ বন্ধ রেখেছিল।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ (২য় পর্যায়ে) প্রকল্পের আওতায় বীরমুক্তিযোদ্ধা ডা. মইন উদ্দিন আহমেদ মুন্টু নামে ২০২৩ সালের ১৪ অক্টোবর সেতুটির নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭ কোটি ৫৫ লাখ ৪৮ হাজার ৭৩৮ টাকা। সেতুটির দীর্ঘ ১৭২ দশমিক ৩০০ মিটার।

সেতুর দুই দিকে সরকারি জমিতে বাড়ি করে বসবাস করছে অনেকগুলো পরিবার। যেগুলো উচ্ছেদ না করলে সেতু নির্মাণের কাজ শেষ করা অসম্ভব হবে বলে জানান সেতু নির্মাণের নিয়োজিত সংশ্লিষ্টরা। ১৯৯১-৯২ সালে স্থানীয় ৯ জনের দুই একর ৩৯ শতক জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।

কিন্তু মাত্র দুজনকে  অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে বলে নথি সূত্রে জানা গেছে। বাকি সাতজন এখন পর্যন্ত কোন ক্ষতিপূরণ পাননি। তবে সকলেই অধিগ্রহণ করা জমিতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছে।

তারা জানান, গত ২০২৪ সালের ৫ মার্চ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ০১-২০২৯১-২০৯২ স্মারক মোতাবেক সাত জনের নামে অধিগ্রহণ করা জমি থেকে সাতদিনের মধ্যে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু তারা বলছেন, তাদের যাওয়া মতো সামর্থ নেই। চলতি মাসের ২৭ এপ্রিল সহযোগিতা চেয়ে জেলা প্রশাসকের নিকট একটি আবেদন করেছেন তারা।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, সেতুর দুই পাশে ৩৪টি বাড়ি উচ্ছেদের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর একাধিকবার আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত উচ্ছেদ কাজ শুরু হয়নি।

স্থানীয় অভিযোগ অস্বীকার করে সেতু নির্মাণকাজের ঠিকাদার আবদুল মান্নান বলেন, সেতুর দুই দিকে প্রয়োজনীয় জমিঅধিগ্রহণ ও বাড়িঘর উচ্ছেদ করা না হলে সেতু নির্মাণকাজ শেষ করা অসম্ভব।

এ পর্যন্ত সেতুর কাজ ৫৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সেতু নির্মাণকাজ শেষ হবে। এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ জানান, সেতু নির্মাণের জন্য অধিগ্রহণ করা জমি থেকে বাড়ি ঘর উচ্ছেদের জন্য সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন বলেন, সেতুর দুই দিকে জমিগ্রহণ করা বাড়িঘর উচ্ছেদের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। শিগগির উচ্ছেদ করা হবে। এছাড়া যথা সময়ে সেতু নির্মাণ কাজ শেষ হবে।

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS