ঢাকা | এপ্রিল ২৮, ২০২৫ - ৭:৪৩ অপরাহ্ন

বরেন্দ্র’র তিন উপজেলায় সবুজের হাতছানি

  • আপডেট: Monday, April 28, 2025 - 12:12 am

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী জেলার বরেন্দ্র অঞ্চলখ্যাত তিন উপজেলায় দিতে যাচ্ছে সবুজের হাতছানি। পদ্মা নদীর পানি বরেন্দ্র এলাকায় সরবরাহ ও সেচ সম্প্রসারণ’ প্রকল্পের আওতায় গোদাগাড়ী, পবা ও তানোর উপজেলায় খালখনন প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এক ফসলি জমিতে হবে তিন ফসল ।

রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলের ফসল উৎপাদন বাড়াতে ডাবল লিফটিং পদ্ধতিতে ‘পদ্মা নদীর পানি বরেন্দ্র এলাকায় সরবরাহ ও সেচ সম্প্রসারণ’ প্রকল্পের (ইআইডিএল) কাজ শুরু হয়েছে। এই অঞ্চলের মধ্যে  গোদাগাড়ী, পবা ও তানোর উপজেলার আবহাওয়া অপেক্ষাকৃত শুষ্ক, উচ্চ তাপমাত্রা, অনিয়মিত বৃষ্টিপাত ও ভূ-উপরিস্থ পানি স্বল্পতাই প্রধান বৈশিষ্ট্য।

এ এলাকায় সাধারণত রোপা আমন, আউশ ও স্বল্প-পরিসরে রবি শস্যের চাষ হয়।

অনেক সময়ই বর্ষা মৌসুম দেরিতে শুরু হওয়ায় আমন ধানের ফলন বিপর্যয় ঘটে। এ ক্ষেত্রে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে এক ফসলি জমিকে তিন ফসলি জমিতে রূপান্তর করা সম্ভব হবে।

ফলে বছরে ফসলের উৎপাদন বাড়বে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে রাজশাহীর বরেন্দ্র এলাকার ১২০ কিলোমিটারের মজা খাল পুনঃখননের মাধ্যমে পানি ধারণ ক্ষমতা বাড়ানোর কাজ চলমান রয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় এই প্রকল্পের আওতায় পবা উপজেলায় প্রায় ১১.৫ কিমি খাল খনন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে পবা উপজেলার কুপেরহাট এলাকায় খালখনন শুরু হয়েছে।

গত শনিবার (২৬ এপ্রিল) পবার দর্শনপাড়া ইউনিয়নের কুপেরহাট এলাকায় খালখনন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরাফাত আমান আজিজ। এসময় উপস্থিত ছিলেন বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পবা উপজেলার সহকারী প্রকৌশলী  জামিনুর রহমান।

প্রকল্পটির বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, ডাবল লিফটিং পদ্ধতিতে সেচ সম্প্রসারণ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে ওই এলাকায় সেচের সমস্যার সমাধান হবে। পদ্মা নদীর পানি সেচকাজে ব্যবহারের মাধ্যমে সারা বছর ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হবে। বর্ষা ছাড়া অন্যান্য মৌসুমে ফসল ফলানো যাবে।

এটি বাস্তবায়িত হলে সেখানে তিন ফসল হবে। এতে যেমনি ফসল উৎপাদন বাড়বে, তেমনি দেশের খাদ্য সঙ্কট লাঘব হবে। তিনি আরও বলেন, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বাস্তবায়িত “ডাবল লিফটিং পদ্ধতিতে সেচ সম্প্রসারণ প্রকল্প (ইআইডিএল)” এর আওতায় খাল খনন চলমান রয়েছে।

পবা উপজেলায় এই প্রকল্পে প্রায় ১১.৫ কিমি খাল খনন করা হবে। বর্তমানে কুপের হাট এলাকায় খাল খনন শুরু হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে খননকৃত খালে পদ্মা নদী হতে পানি পাম্প করে বছরব্যাপী সংরক্ষণ করে সোলার পাম্প দারা পার্শ্ববর্তী জমিতে সেচ প্রদান করা হবে। এতে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপ কমবে এবং ভূউপরিস্থ পানির ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে।

এ বিষয়ে বিএমডিএ’র পবা উপজেলার সহকারী প্রকৌশলী জামিনুর রহমান বলেন, পদ্মা নদী থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পানি এনে সংশ্লিষ্ট এলাকার খালে সংরক্ষণ করে সারা বছর সেচ প্রদান করার জন্য এ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।

এছাড়াও প্রকল্প এলাকায় খাল পুনঃখনন ও সাবমার্জড ওয়্যার স্থাপন করে খালের পানি ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে এবং পদ্মা নদীর পানি সংরক্ষণ করা হবে। ওই পানি সোলার চালিত লো-লিফট পাম্পের (এলএলপি) মাধ্যমে সেচকাজে ব্যবহার করা সম্ভব হবে। তিনি আরও বলেন, ধানের পুষ্পায়নের সময়ে খরা হলে সম্পূরক সেচের প্রয়োজন হয়।

এ সম্পূরক সেচ না দিলে ওই এলাকায় আমন ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একইভাবে সময় মতো সেচের অভাবে গমসহ অন্যান্য রবি ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হয়। ফলে ফসলের নিবিড়তা কমে যায়। কিন্তু প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পদ্মা নদীর পানি সেচকাজে ব্যবহারের মাধ্যমে বরেন্দ্রে সারা বছর ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হবে।

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS