মান্দায় গণপিটুনির শিকার সমবায় সমিতির সভাপতি

মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর মান্দায় গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেয়ায় গণপিটুনির শিকার হয়েছেন সোনালী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি আব্দুল মান্নান।
শনিবার সকাল ৯টার দিকে বিক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা গণপিটুনি দিয়ে সতিহাটের মসজিদ বাজার এলাকায় তাকে আটকে রাখে। পরে সমিতির সভাপতি আব্দুল মান্নানকে মৈনম এলাকায় নিয়ে নিজেদের কব্জায় রাখে বিক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা।
এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত স্থানীয়ভাবে বিষয়টি নিরসের চেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে। সংস্থার সভাপতি আব্দুল মান্নান মান্দা উপজেলার মৈনম ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা।
গ্রাহকদের অভিযোগ, বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে এফডিআরের নামে আমানত সংগ্রহ করেন আব্দুল মান্নান ও ওই সমবায় সমিতির সম্পাদক শাহিন আক্তার মিঠু। শুরুর দিকে মুনাফার টাকা দিলেও বেশ কিছুদিন টালবাহানা করেন তারা।
এ অবস্থায় আমানতের টাকা ফেরতের জন্য চাপ দিলে সমিতির সাইনবোর্ড গুটিয়ে নিয়ে সটকে পড়ার পাঁয়তারা করা হচ্ছিল।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সোনালী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি ও সম্পাদক আমানতের নামে শতাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে ২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা সংগ্রহ করেন। প্রত্যেক মাসে ১ লাখ টাকায় ২ হাজার টাকা করে মুনাফা দেয়ার চুক্তি ছিল। প্রথমদিকে সঠিকভাবে মুনাফার টাকা পরিশোধ করা হলেও গত ৬ মাস ধরে টালবাহানা শুরু করে।
গ্রাহক ফারমিন আক্তার বলেন, বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে ওই সংস্থার সভাপতি আব্দুল মান্নান আমার কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা নেয়। গত দেড় বছর ধরে মুনাফা দিচ্ছে না। আমানতের টাকা ফেরত দিতেও টালবাহানা করছে। সংস্থার সভাপতি আব্দুল মান্নান বলেন, গ্রাহকের কাছ থেকে নেয়া টাকা মাঠেই পড়ে আছে।
যারা সংস্থার কাছ থেকে ঋণ নিয়েছেন বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তারা টাকা ফেরত দিচ্ছে না। মাঠ থেকে টাকা উঠানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। টাকাগুলো উঠে এলেই গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত দেয়া হবে।
স্থানীয় গনেশপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বাবুল চৌধুরী বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে গ্রাহকেরা আমানতের টাকা ফেরতের জন্য আমার কাছে অভিযোগ দিয়ে আসছিল।
পর্যায়ক্রমে টাকা ফেরতের অঙ্গীকারও করেছিলেন সংস্থার সভাপতি ও সম্পাদক। এ অবস্থায় তাকে ধরে গণপিটুনি দেয় গ্রাহকেরা। মান্দা উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা আব্দুর রশীদ বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে সোনালী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেডের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
এ অবস্থায় গ্রাহকের টাকা আটকে রাখা সঠিক হয়নি। আমানতের টাকা ফেরত পাওয়া গ্রাহকের নায্য অধিকার।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনসুর রহমান বলেন, বিষযটি নিয়ে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।