নগরীতে ১০ লাখ টাকা ছিনতাই: রিকশাচালকের জবানবন্দিতে বেরিয়ে এলো পরিকল্পনার ছক

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী মহানগরীর ঘোড়ামারা এলাকায় চোখে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে দিলীপ কুমার প্রামাণিক নামের এক দোকানের ব্যবস্থাপকের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় রিকশাচালককে ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।
ছিনতাইকারী চক্রটি এক মাস ধরে তাঁর ওপর নজরদারি চালায় এবং এ জন্য রিকশাচালককে প্রশিক্ষণও দেয়। গ্রেপ্তার রিকশাচালকের জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ এসব তথ্য জানিয়েছে।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেপ্তার রিকশাচালক মাসুম (৩০)। রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-২ আদালতের বিচারক মামুনুর রশিদের কাছে তিনি ১৬৪ ধারায় এই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
তার জবানবন্দির ভিত্তিতে পুলিশ জানায়, শুক্র ও শনিবার ব্যাংক বন্ধ থাকায় ওই দুই দিনের বিক্রির টাকা দিলীপ কুমার প্রামাণিকের বাসায় থাকে তথ্য পেয়ে ছিনতাইকারী চক্রটি রোববার সকালে তাকে লক্ষ্য করে পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা মতো কোন রাস্তায় রিকশা চালাতে হবে, কখন দাঁড়াতে হবে এসব নিয়ে চালক মাসুমকে মহড়া দেওয়া হয়। ঘটনার আগের রোববার মাসুম রিকশা নিয়ে কুমারপাড়ার চালপট্টির সামনে অবস্থান নেন, তবে সেদিন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি।
বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, “ওই রিকশাকে ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করেছে ছিনতাইকারীরা। এক মাস ধরে তারা ওই এলাকায় নজরদারি চালিয়েছে। আগেও এমন ফাঁদ পেতেছিল তারা, তবে সফল হয়নি। পরে গত রোববার তারা ঘটনা ঘটায়।”
গত রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বোয়ালিয়া থানা এলাকার ঘোড়ামারা মোড়ে ছিনতাইয়ের শিকার হন দিলীপ কুমার প্রামাণিক। তিনি রিলায়েন্স অটো নামের একটি অটোরিকশার যন্ত্রাংশ বিক্রির দোকানের ব্যবস্থাপক।
পুলিশ ও দোকান মালিক পক্ষ জানায়, আগের দিনের বিক্রির ১৩ লাখ টাকা নিয়ে দিলীপ কুমার রোববার সকালে শিরোইল ঢাকা বাস টার্মিনালের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে মাসুমের রিকশায় ঘোড়ামারা এলাকায় পৌঁছালে রিকশাটি হঠাৎ একটি সরু গলির দিকে মোড় নেয়।
তখন একটি মোটরসাইকেলে করে আসা দুই ব্যক্তি রিকশার গতি রোধ করেন। তাঁদের একজন দিলীপের চোখে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে দেন। এ সময় ছিনতাইকারীরা তাঁর পিঠে থাকা টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নিতে গেলে তিনি বাধা দেন।
ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে তাঁর ডান হাতের কনুই ও বাঁ হাতের আঙুল কেটে যায়। ছিনতাইকারীরা ব্যাগটি ছিনিয়ে পালানোর সময় প্রায় আড়াই লাখ টাকা রাস্তায় পড়ে যায়, তবে বাকি টাকা নিয়ে তারা পালিয়ে যায়।