নির্যাতনের পর প্রবাসীর স্ত্রীর মাথার চুল কাটার অভিযোগ, শাশুড়ি গ্রেপ্তার

বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ার আদমদীঘিতে পারিবারিক কলহে আয়শা সিদ্দিকা (২০) নামে এক গৃহবধূকে নির্যাতনের পর কাঁচি দিয়ে মাথার চুল কেটে দেয়া হয়েছে।
বুধবার সকালে উপজেলার চাঁপাপুর ইউনিয়নের বেজার গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তাকে বগুড়া শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে গৃহবধূর বাবা ইদ্রিস আলী রাতে আদমদীঘি থানায় তার মেয়ের শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। পুলিশ শাশুড়ি তানজিলা বেগমকে (৩৯) গ্রেপ্তার করেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেলহাজতে পাঠিয়েছে। মামলা ও পুলিশ সূত্র জানায়, বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার চাঁপাপুর ইউনিয়নের বেজার গ্রামের লিটন হোসেনের ছেলে আরমান হোসেন গত ২০২৩ সালে পার্শ্ববর্তী নাটোরের সিংড়া উপজেলার নিখিরা গ্রামের ইদ্রিস আলীর মেয়ে আয়শা সিদ্দিকাকে বিয়ে করেন।
তাদের সংসারে দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। সংসারে সচ্ছলতা আনতে আরমান কিছুদিন আগে স্ত্রী-সন্তানকে বাড়িতে রেখে প্রবাসে যান। এদিকে বিয়ের পর থেকেই পারিবারিক নানা কলহে গৃহবধূ আয়েশা সিদ্দিকাকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছেন।
নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে তিনি বিষয়টি তার বাবা ইদ্রিস আলীকে অবহিত করেন। এরপর তিনি (ইদ্রিস) তার মেয়েকে নির্যাতন না করতে অনুরোধ করেন। এতে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার ওপর আরও ক্ষিপ্ত হন।
বুধবার সকালে শ্বশুর লিটন হোসেন, শাশুড়ি তানজিলা বেগম ও ননদ সাদিয়া বিবি তাকে (আয়েশা) হত্যার উদ্দেশে বেদম মারপিট করে রক্তাক্ত জখম করেন। এরপর কাঁচি দিয়ে তার মাথার অর্ধেক চুল কেটে দেয়া হয়। এদিকে গ্রামবাসী টের পেয়ে নির্যাতনের শিকার গৃহবধূকে উদ্ধার করে প্রথমে আদমদীঘি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বুধবার রাতে আয়েশার বাবা আদমদীঘি থানায় মেয়ের শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
পুলিশ বৃহস্পতিবার সকালে এলাকা থেকে শাশুড়ি তানজিলা বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে। ওসি এসএম মোস্তাফিজুর রহমান জানান, আসামিকে আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্য পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।