াকা | এপ্রিল ২৫, ২০২৫ - ৫:৪২ পূর্বাহ্ন

কম্পিউটার অপারেটরকে টাকা দিলে মিলত পাসপোর্ট, প্রমাণ পেল দুদক

  • আপডেট: Thursday, April 24, 2025 - 10:57 pm

পাবনা প্রতিনিধি: পাবনা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে দালাল, কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে গ্রাহক হয়রানি, জিম্মি করে গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ নানা অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগ তদন্তে গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

অভিযানে প্রাথমিকভাবে গ্রাহক হয়রানি ও অফিস কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিকাশে টাকা নিয়ে কাজ করার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে দুদক।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাবনা সিরাজগঞ্জ দুদকের জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাধন চন্দ্র সুত্রধর। তিনি বলেন, বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান চালানো হয়। এ সময় এই অফিসের কম্পিউটার অপারেটর আমিনুলের বিরুদ্ধে বিকাশে টাকা নিয়ে পাসপোর্ট করে দেয়ার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।

এ ছাড়া আমরা লক্ষ করেছি, অতিরিক্ত টাকা দিয়ে দালালদের মাধ্যমে আসা আবেদনগুলোতে একটি বিশেষ সাইন বা সিল রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এই সাইন থাকলে সেই ফাইল সঙ্গে সঙ্গে অনুমোদন পায়। এই সাইনের বিষয়ে অফিসের সহকারী পরিচালককে জিজ্ঞাসা করেছি। তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

সাধন চন্দ্র সুত্রধর আরও বলেন, অভিযানের শুরুতেই আমরা বিভিন্ন গ্রাহকের সঙ্গে কথা বলেছি। তারাও নানা ভোগান্তির কথা জানিয়েছেন এবং এসবের বেশ কিছু অভিযোগের সত্যতাও রয়েছে। অভিযান শেষ করে সংশ্লিষ্ট একটি প্রতিবেদন দুদক প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হবে এবং নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অভিযান চলাকালে পাসপোর্ট অফিসের নানা অনিয়ম ও ভোগান্তির বিষয়ে জানতে কথা হয় উপস্থিত কয়েকজন গ্রাহকের সঙ্গে। গ্রাহক শাহিন হোসেন জানান, দালাল ধরা ছাড়া কোনো কাজ হয় না পাসপোর্ট অফিসে। দালাল ছাড়া এলে দিনের পর দিন ঘুরতে হয়। দালাল ধরলেই সব সহজ।

এ দালাল চক্রের সঙ্গে এই অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও জড়িত। কম্পিউটার অপারেটর আমিনুল আমার একটি পাসপোর্ট করার জন্য বিকাশে ২৪০০ টাকা নিয়েছে। টাকা দেওয়ার আগে দিনের পর দিন ঘুরিয়েছে। বিকাশ লেনদেনের তথ্য আমি দুদককে দিয়েছি। ঈশ্বরদী থেকে আসা তৌশিক আহমেদ বলেন, সেই ঈশ্বরদী থেকে এসে বারবার ঘুরতে হয়।

এর আগে আমি বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বসে থেকেও সংশোধনের কাজ হয়নি। অথচ বেলা ২টার পর কয়েকজন এসে কাজ করে নিয়ে চলে গেল। কারণ, তারা দালাল ধরেছে। আমি দালাল ধরিনি, এ জন্য একটার পর একটা সমস্যা দেখিয়ে ঘুরিয়েছে। এখন আপনাদের (দুদক ও সাংবাদিক) দেখে কাজ করে দিল।

সদর উপজেলার হাজিরহাট এলাকার গাফফার হোসেন বলেন, ছবি ওঠার পর আমাকে ১৪ দিন ধরে বিভিন্নভাবে ঘুরাচ্ছে। একেক দিন একেক সমস্যা দেখিয়ে ঘোরানো হয়। এটি সর্বোচ্চ তিন দিনের কাজ। অথচ আমাকে এত দিন ঘোরানো হয়েছে। কারণ আমি দালাল ধরিনি। যারা ধরেছে, তাদের এত ঘুরতে হয়নি।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে পাবনা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক আহসান উদ্দিন বলেন, এখানে কোনো দালাল চক্র নেই। সব নিয়মিত পরিচালনা হয়ে থাকে। দুদক অভিযান করছে। দুদকের অভিযোগের বিষয়টি দেখা হবে।

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS