রাজশাহীতে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত

স্টাফ রিপোর্টার: বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের আয়োজনে নিরাপদ খাদ্য সংরক্ষণ, খাদ্য সরবরাহ, পরিবেশন ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার। প্রধান অতিথি বলেন, খাদ্যে কীভাবে বিষ প্রয়োগ করা হচ্ছে, পোল্ট্রি খামারে কীভাবে ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে, বাচ্চাদের কীভাবে জাঙ্কফুড খাওয়ানো হচ্ছে সেটা আমরা সকলেই জানি। এগুলো আমাদের জন্য বিপদ ডেকে আনছে। এগুলো প্রতিরোধে আইনের চেয়ে সচেতনতা বেশি জরুরি। তিনি বলেন, নিরাপদ খাদ্যের যে আইন আছে সেটা অনেক কঠোর আইন।
এই আইনের মাধ্যমে ২০১৩-১৪ সাল থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানার টাকা হয়তো আদায় হয়েছে কিন্তু সচেতনতা বাড়েনি। এটা পরিবর্তন করতে হলে একটি সিস্টেমে আসতে হবে, সেই সিস্টেম ডেভেলপ করতে হবে এবং উৎপাদন থেকে শুরু করে বিপণন পর্যন্ত প্রতিটা পর্যায়ে গুণগতমান নিশ্চিত করতে হবে।
জেলা প্রশাসক বলেন, পৃথিবীতে কোনো জাতি কী আছে যারা নিজেদেরকে ধ্বংস করে খাবার দিয়ে? আমরা করি। হোটেল রেস্তোরার কথা আমরা আলাদাভাবে কেন বলব; এটাতো আর বাইরের কোনো লোক পরিচালনা করে না। যারা রান্না করেন, খাবার পরিবেশন করেন তারা সকলেই আমাদের কারো না কারো ভাই। তাহলে সিস্টেমটা ডেভেলপ হচ্ছে না কেন? সিস্টেমটা ডেভেলপ করার জন্য আমাদের আইনের কঠোর প্রয়োগ করতে হবে। বাইরের খাবার পরিহার করে পারিবারিকভাবে ছোট ছোট স্কেলে নিজেরা খাবার উৎপাদন করতে পারি।
তিনি বলেন, ইচ্ছেমত ফুডকোর্ড তৈরি করা হচ্ছে যেখানে কোনো নিয়মের বালাই নেই। যুবকেরা ফুডকোর্ড ব্যবসায়ে ঝুঁকে পড়েছে, আমরা চাই আপনারা ব্যবসা করেন তবে নিয়ম মেনে, স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে। আপনাদের নৈতিকভাবে মজবুত থাকতে হবে। এক কথায় মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে।
স্বাস্থ্যকে আমানত হিসেবে উল্লেখ করে প্রধান অতিথি খাবার প্রস্তুতকারীদের উদ্দেশে বলেন, আপনার খাবারের মাধ্যমে আপনি একজন আমানতকারী।
এ খাবারের মাধ্যমে যদি আমার শারিরীক কোনো ক্ষতি হয় তাহলে আপনি আমানতের খেয়ানতকারী। এ সময় তিনি দেশকে ভালোবাসতে এবং পরবর্তী প্রজন্মের জন্য কিছু করে যেতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নিরাপদ খাদ্য অফিসার ইয়ামিন হোসেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মির্জা ইমাম উদ্দিন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবা খাতুন।
সেমিনারে সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের প্রধানগণ, হোটেল-রেস্তোরাঁ মালিক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি এবং প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ অংশগ্রহণ করে।