াকা | এপ্রিল ২৩, ২০২৫ - ৩:৫ পূর্বাহ্ন

শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় কুমার শরৎকুমার রায়কে স্মরণ

  • আপডেট: Wednesday, April 23, 2025 - 12:18 am

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীর ‘বরেন্দ্র রিসার্চ মিউজিয়াম’র প্রতিষ্ঠাতা ও বরেন্দ্রভূমির কৃতিপুরুষ কুমার শরৎকুমার রায় এঁর ১৪৯তম জন্মবার্ষিকী স্মরণে তাঁর জীবন-কর্ম নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার নগরীর কুমারপাড়ায় অবস্থিত বরেন্দ্র ইতিহাস পরিষদ রাজশাহীর আয়োজনে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভা শুরুর আগে অতিথিবৃন্দ কুমার শরৎকুমার রায়ের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

বরেন্দ্র ইতিহাস পরিষদের পক্ষে ‘স্মরণে-বরণে কুমার শরৎকুমার রায়’ শীর্ষক  সফিকুল ইসলাম রচিত স্মারকপত্র প্রচার করা হয়।

বরেন্দ্র ইতিহাস পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় সংস্কৃতিজন ও সমাজসেবক সুলতানুল ইসলাম টিপুর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের সাবেক ডিন এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রফেসর ইতিহাসবিদ ড. মো. ফজলুল হক।

এসময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার সফিকুল ইসলাম এর সঞ্চালনায় স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন- প্রফেসর ড. ইকবাল মতিন, কলেজিয়েট স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মনিরুল ইসলাম, শিক্ষাবিদ জিতেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মুহম্মদ আলমগীর প্রমুখ।

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন- রাজশাহীর ‘বরেন্দ্র রিসার্চ মিউজিয়াম’র প্রতিষ্ঠাতা কুমার শরৎকুমার রায় বাংলার ইতিহাসচর্চার এই শ্রেষ্ঠ পাদপীঠ প্রতিষ্ঠা করে ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন। নাটোরের বর্তমান উত্তরা গণভবন ছিল সে সময়ের দিঘাপতিয়ার জমিদার বাড়ি। এই বাড়িতেই শরৎকুমার রায় জন্মগ্রহণ করেন ১৮৭৬ সালের ২২ এপ্রিল।

কুমার শরৎকুমার রায় ছিলেন নাটোরের দিঘাপতিয়ার জমিদার বংশের সন্তান ও দয়ারামপুরের খ্যাতিমান রাজা। তিনি নিজে ও তার বংশের রাজা-মহারাজা-জমিদাররা ছিলেন ভীষণ বিদ্যানুরাগী ও প্রজাহিতৈষী। তারা বাংলার ইতিহাস-সংস্কৃতি, বিশেষ করে বরেন্দ্র অঞ্চলের লুপ্ত ইতিহাস-ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার ও বিকাশে রেখেছেন কৃতিত্বপূর্ণ অবদান।

বক্তারা আরও বলেন- কুমার শরৎকুমার রায় ছিলেন একাধারে সাহিত্যিক, ইতিহাসবিদ ও প্রত্নতত্ত্ববিদ। তিনি ছিলেন প্রথিতযশা লেখকও। তাঁর শিক্ষা জীবন শুরু হয় রাজশাহী শহরে। তিনি সেখানকার কলেজিয়েট স্কুলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েন। এরপর তিনি পড়ালেখা করেন কলকাতায়।

শরৎকুমারের বেশ কয়েকটি বই ও অনেক প্রবন্ধের মধ্যে ৫৪৭ পৃষ্ঠার ঐতিহাসিক উপন্যাস ‘মোহনলাল’ শ্রেষ্ঠ কীর্তি ও ইতিহাসের অমূল্য দলিল। তার ‘শিখগুরু ও শিখজাতি’ বইয়ের ভূমিকা লিখেছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এতে বোঝা যায় যে তাদের সম্পর্ক কতোটা গভীর ছিল।

বাংলার ইতিহাসের মহানসেবক শরৎকুমার রায় ১৯৪৫ সালের ১২ এপ্রিল হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসারত অব¯’ায় কলকাতায় মারা যান।

তিনি যতদিন বেঁচে ছিলেন ততদিন তার জীবন আবর্তিত হয়েছিল বরেন্দ্র রিসার্চ মিউজিয়ামটিকে ঘিরেই। শরৎকুমারের গড়া এই মিউজিয়ামের বিপুল প্রত্নসম্পদ অতীত বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি।