ইজারা নিয়েও বালি উত্তোলন করতে পারছে না মাম এন্টারপ্রাইজ

স্টাফ রিপোর্টার: বাংলা চলতি সনের বালি মহাল ইজারা দেয়ার জন্য জেলা প্রশাসক কর্তৃক দরপত্র আহ্বান করা হয়। সেই মোতাবেক ঠিকাদারগণ দরপত্র প্রদান করেন। এক পর্যায়ে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে বালিমহাল ইজারা পায় মাম এন্টারপ্রাইজ।
মাম এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্বাধিকারী আব্দুল মান্নাফ বলেন, তিনি ৮ কোটি ২৪ লক্ষ টাকা দরপত্রে প্রদান করে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে এই ইজারা পান। ভ্যাট ও ট্যক্সসহ তাঁকে ১০ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা সরকারকে প্রদান করতে হবে। পূর্বে ছিলো মাত্র ৪ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা।
তিনি বলেন, এর আগে আওয়ামী দোসররা অল্প টাকায় ইজারা নিয়ে একদিকে সরকারকে ভ্যাট ট্যাক্স থেকে বঞ্চিত করেছে। অন্যদিকে এখন আবার তাদের মজুদকৃত বালি রাতের অন্ধকারে বিক্রি করে সরকারকে ভ্যাট ট্যাক্স ফাঁকি দিচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এগুলো করে সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতে আওয়ামী লীগের দোসররা এখনো তৎপর রয়েছে।
তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখ থেকে ইজারার ওয়ার্ক অর্ডার দেয়ার কথা ছিলো। কিন্তু এর আগেই আওয়ামী লীগের দোসর সাবেক ইজারাদার হুন্ডিমুকুল ওরফে মখলেসুর রহমান মুকুল, রাসিক ১নং সাবেক কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা রজব আলী, স্বেচ্ছাসেবক লীগের আনোয়ার হোসেন ও রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল আলম বেন্টু ষড়যন্ত্র করে ওয়ার্ক অর্ডার দেয়া থেকে বিরত রাখতে হাইকোর্ট থেকে ছয়মাসের স্টে-অর্ডার নিয়ে আসেন। আর কোর্টে আবেদন করেছেন রজব আলী ও মাহফুজা মোরশেদ।
তিনি আরও বলেন, এই নিষেধাজ্ঞার মূল কারন হচ্ছে বিগত সময়ের ঠিকাদাররা পুরো গোদাগাড়ী জুড়ে বালি উত্তোলন করে পাহাড় সমান করে রেখেছে।
কিন্তু শেষ সময়ে এসে তাদের বালি উত্তোলন করার কোন এখতিয়ার ছিলো না। কিন্তু জোরপূর্বক ঘাট দখল করে রাখার জন্য তারা এই কাজ করেছেন। যখন টেন্ডারে তারা বালিমহাল ইজারা পায়নি, ঠিক তখনি এই ষড়যন্ত্র করে নতুন করে বালি উত্তোলন ও বিক্রয়ের ওপরে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে এসেছে বলে উল্লেখ করেন মান্নাফ।
তিনি আরো উল্লেখ করেন, এই সমস্ত বালি উত্তোলন ও বিক্রি করা বন্ধ থাকলেও নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাতের অন্ধকারে ড্রাম ট্রাকে করে শত শত সিএফটি বালি বিক্রি করছে সাবেক ইজারাদারের দোসররা। রাতভর চলে তাদের বালি বিক্রি। কিছুদিন আগেও এক ট্রাক বালি বিক্রি করতো ৫ হাজার টাকায়। এখন সেই বালি তারা বিক্রি করছে ট্রাক প্রতি ১০ হাজার টাকায়।
মান্নাফ বলেন, বালি মহাল ইজারা নিয়ে তিনি এখন পড়েছেন মহা বিপদে। কারন এখন চলছে বালি উত্তোলনের ভার মৌসুম। এখন যদি বালি উত্তোলন ও বিক্রি করতে না পারেন তাহলে তাদের অনেক টাকার ক্ষতি হবে।
সেই সাথে রাজশাহী অঞ্চলের আবাসন শিল্পসহ কন্ট্রাকসন সেক্টরের ব্যাপক ক্ষতি হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। দ্রুত নিষেধাজ্ঞা পরিহারের জন্য তিনি এখন কোর্টের বারান্দায় ঘুরছেন। আর সাবেক ইজারাদারের লোকজন এই সুযোগ নিয়ে রাতের অন্ধকারে শত শত ট্রাক বালি বিক্রি করে দিচ্ছে।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার সাংবাদিকদের বলেন, নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি আদালতের। আদালত যা নির্দেশনা দেবেন তিনি সে মোতাবেক ব্যবস্থা নেবেন। বিগত ইজারাদারের উত্তোলনকৃত বালি বিক্রি করা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বালি বিক্রি করা যাবে কিনা সে বিষয়ে তিনি জানেন না।