ঢাকা | এপ্রিল ২১, ২০২৫ - ১১:৪৫ পূর্বাহ্ন

পত্নীতলায় আলো ছড়াচ্ছে দেশ সেরা প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়

  • আপডেট: Saturday, April 19, 2025 - 11:11 pm

বিনা বেতনে চলে পাঠদান, এমপিওভুক্তির দাবি

পত্নীতলা (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর পত্নীতলায় প্রত্যন্ত এলাকায় সমাজের পিছিয়ে পড়া অবহেলিত প্রতিবন্ধী শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে আমবাটি বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়। জানা যায়, সমাজের পিছিয়ে পড়া শিশুদের কথা চিন্তা করে ২০১৫ সালে স্থানীয়  রিজওয়ানুর রহমান রেজা নামের এক ব্যক্তি নিজে ২০ শতক জমি দান করে  আমবাটী বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।

পরবর্তীতে তিনি নিজ টাকায় আরও ৩ শতক জমি ক্রয় করেন বিদ্যালয়ের জন্য। উপজেলার পাটিচড়া ইউনিয়নের আমবাটি বাজারের পাশে  অবস্থিত এটিই  উপজেলায় সর্বপ্রথম প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়। শুরুতে  ৫০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে বিদ্যালয়টির যাত্রা শুরু হলেও ও বর্তমানে এখানে ১৭১ জন শিক্ষার্থী লেখাপড়া,  চিকিৎসা ও অন্যান্য সেবা পাচ্ছেন।

ওই বিদ্যালয়ে ৮ জন শিক্ষিকা, ১৩ জন শিক্ষিক সহায়ক, ২ জন গাড়ি চালক ও ১ জন নৈশ্যপ্রহরী রয়েছেন। এখানে শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করা হয়। পাঠদান করার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের টিফিনের খাওয়ানো,  শিক্ষা উপকরণ যেমন- খাতা কলম, পেন্সিল, প্রতিবন্ধী জরিপ করা হয়, চিকিৎসা সহায়তা করা হয়, হুইলচেয়ার প্রদান করা হয়, পাঠদানসহ দৈনন্দিন জীবনের কার্যক্রম শেখানো হয়। ইতিমধ্যে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে বিভিন্ন পুরস্কার অর্জন করেছেন।

এছাড়াও ২০২৩ সালে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে অটিজম বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন ও সুরক্ষার ক্ষেত্রে সমগ্র দেশের মধ্যে ১ম স্থান অর্জন করেন। বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ফারহান এর মা ইয়াসমিন বলেন, এই বিদ্যালয়টি হওয়ার কারণে আমার সন্তান লেখা পড়ার সুযোগ পাচ্ছে ও শিক্ষিকাগণ মাতৃস্নেহের পাঠদান করান। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা রকিবা মোস্তারী বলেন, বিনা বেতনে ১০ বছর যাবৎ শিক্ষকতা করছি। আমার প্রতিদিন বিদ্যালয়ে আসার জন্য ৪০ টাকা ভাড়া লাগে। এ বিদ্যালয় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস পালন করে আসছেন। বিদ্যালয়টি জেলা প্রাসাশক আব্দুল আউয়াল ও জেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ সহ অনেকই পরিদর্শন করছেন  ।

প্রধান শিক্ষিকা আখিঁ আক্তার বলেন, প্রতিবন্ধীরা সমাজের বোঝা নয়, সঠিক যত্ন নিলে তারাও সমাজের সম্পদ হতে পারে। এমনি চিন্তা থেকে বিনা বেতনে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছি। বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্তি ও সরকারের সুদৃষ্টি একান্ত প্রয়োজন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিদ্যালয়ের সভাপতি আলীমুজ্জামান মিলন বলেন বিদ্যালয়টি মূলত স্থানীয় বিত্তবানের সহযোগিতায় চলছে।

আমাদের যতটুকু সহযোগিতা করার সুযোগ আছে আমরা উপজেলা পরিষদ থেকে হোক বা জেলা পরিষদ থেকে হোক করি। জেলা প্রসাশকও এটাতে সহযোগিতা করছেন। শীতবস্ত্র বিতরণ, আরও কিছু ইকুইপমেন্ট ক্রয় বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণের জন্য আমরা সহযোগিতা করেছি। তারা এমপিওভুক্ত করার চেষ্ট করছেন।