গোদাগাড়ী ও নওগাঁসহ দেশের ৩৫ সাব রেজিস্ট্রি অফিসে দুদকের অভিযান

সোনালী ডেস্ক: অনিয়ম, দুর্নীতি, গ্রাহকদের সেবাবঞ্চিত করা অতিরিক্ত ফি আদায়সহ বিভিন্ন অভিযোগে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা ও নওগাঁ জেলাসহ দেশের ৩৫ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে একযোগে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার সকালে দুদকের বিভিন্ন জেলার সমন্বিত কার্যালয় থেকে পৃথকভাবে এ অভিযান শুরু করে ৩৫টি এনফোর্সমন্টে টিম। রাজশাহীর গোদাগাড়ী সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি এনফোর্সমেন্ট টিম এই অভিযান পরিচালনা করে। গোদাগাড়ীর অভিযানে অংশ নেন সহকারী পরিচালক তানভীর আহমেদ সিদ্দীক ও উপ-সহকারী পরিচালক মাহবুবুর রহমান।
আমির হোসাইন জানান, দলিল সম্পাদনের পর খোলা জায়গায় চেয়ারে বসে এক কর্মচারী নিয়মিত ঘুষ আদায় করেন। সাব-রেজিস্ট্রার সাদেকুল ইসলাম ঘুষ ছাড়া কোনো দলিলে সই করেন না বলেও অভিযোগ রয়েছে। অভিযানের সময় তিনি অনুপস্থিত থাকায় দুদক কর্মকর্তারা অফিস সহকারী লাইলুন নাহারের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করেন। তিনি আরও জানান, দলিলের সার্টিফায়েড কপি প্রদানে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়টি তারা সরেজমিনে দেখেছেন।
তারা গত তিন দিনের মধ্যে সম্পাদিত সব দলিলের কপি চেয়েছেন এবং সেবাপ্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত প্রতিবেদন তৈরি করে তা দুদকের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হবে। সহকারী পরিচালক আমির হোসাইনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি এনফোর্সমেন্ট টিম এই অভিযান পরিচালনা করে। গোদাগাড়ীর অভিযানে অংশ নেন সহকারী পরিচালক তানভীর আহমেদ সিদ্দীক ও উপসহকারী পরিচালক মাহবুবুর রহমান।
এদিকে দলিল রেজিস্ট্রেশন, তল্লাশি ও নকল উত্তোলনসহ অন্যান্য কাজে সেবা প্রার্থীদের হয়রানি এবং ঘুষ দাবিসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে নওগাঁয় অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত নওগাঁ জেলা রেজিস্ট্রার ও সদর সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে এ অভিযান পরিচালনা করে দুদক সমন্বিত কার্যালয় নওগাঁ।
দুদক সমন্বিত কার্যালয় নওগাঁর উপসহকারি পরিচালক মেহেবুবা খাতুন রিতা বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযানটি পরিচালনা করা হয়। যেখানে সাব-রেজিস্ট্রার অফিস ও দলিল সম্পাদনকারিরা (দলিল লেখক) যোগসাজসে জমির ক্রেতা-বিক্রেতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হয়। সেই সাথে হয়রানি করা হয় জমির ক্রেতা-বিক্রেতাদের। অভিযান পরিচালনার সময় প্রাথমিক ভাবে কিছু তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। পরবর্তীতে পুর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন আকারে কমিশন বরাবর পাঠানো হবে।
অন্যদিকে দুদকের সহকারী পরিচালক তানজির আহমেদ বলেন, আমার জানামতে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসসহ সব মিলিয়ে দুদকের এটি সবচেয়ে বড় এনফোর্সমেন্ট অভিযান। সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে নানাবিধ অনিয়ম-দুর্নীতি খুঁজতে দুদকের ৩৫টি অভিযান একযোগে চালানো হয়েছে। গতকাল ঢাকা বিভাগের ঢাকা-১, ঢাকা-২, গাজীপুর, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, টাঙ্গাইল ও কিশোরগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে অভিযান পরিচালনা করেছে দুদক।
একই দিনে চট্টগ্রাম বিভাগের সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-১ ও ২, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও চাঁদপুর, কক্সবাজার। ময়মনসিংহ বিভাগের ময়মনসিংহ ও জামালপুর। সিলেটে বিভাগের সিলেট ও হবিগঞ্জ, খুলনা বিভাগের খুলনা, যশোর, বাগেরহাট ও ঝিনাইদহ। বরিশাল বিভাগের বরিশাল, পটুয়াখালী ও পিরোজপুর, রাজশাহী বিভাগের পাবনা, বগুড়া, রাজশাহী ও নওগাঁয়, রংপুর বিভাগের দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, রংপুর ও কুড়িগ্রাম, ময়মনসিংহ বিভাগের ময়মনসিংহ ও জামালপুর জেলার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে অভিযান পরিচালনা করেছে দুদক।