ঢাকা | এপ্রিল ১৩, ২০২৫ - ২:৫৯ পূর্বাহ্ন

সামিত সবুজ সংকেত দিয়েছেন,তাকিয়ে এখন ফিফার দিকে

  • আপডেট: Saturday, April 12, 2025 - 12:22 pm

অনলাইন ডেস্ক: গেল মাসে বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ খেলা ফুটবলার হামজা চৌধুরীর অভিষেক হওয়ার পর থেকেই দেশের ফুটবলের দিগন্তে উঠেছে নতুন সূর্য।

তার লাল-সবুজের শিবিরে যোগ দেওয়ার পর গোটা দেশব্যাপী দেখা গিয়েছিল উৎসবের আমেজ, যা ছড়িয়েছে গোটা ফুটবল বিশ্বেও। এবার সেই পথে দেশের ফুটবলে আরো একজন বংশোদ্ভূত হাইপ্রোফাইল ফুটবলারের আগমন হতে যাচ্ছে।

তিনি হলেন কানাডিয়ান ফুটবলার সামিত সোম। বাফুফে ও সামিতের মধ্যে গেল কয়েক সপ্তাহ ধরে আলোচনা চলছিল। নিজের সিদ্ধান্ত জানাতে সামিত সময় চেয়েছিলেন সেটাই গতকাল জানিয়েছেন বাফুফেকে।

২৭ বছর বয়সি সামিতের বাবা-মা দুজনেই বাংলাদেশি। বাবা মানস সোম ও মা নন্দিতা সোম সিলেট অঞ্চল থেকে কানাডায় প্রবাসী হন। সেখানেই জন্ম ও বেড়ে ওঠা সামিতের। খেলেছেন দেশটির হয়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচও। তবে সেটি পাঁচ বছর আগের ঘটনা। তবে তিনি বর্তমানে বাংলাদেশের হয়ে খেলতে রাজি হয়েছেন।

গতকাল এ বিষয়ে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বাফুফের সহসভাপতি ফাহাদ করিম বলেন, ‘আজ (গতকাল) বাংলাদেশ সময় দুপুরের দিকে সামিত আমাকে মেসেজ দিয়েছে সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং বিস্তারিত কথা বলতে চায়। এখন কানাডায় মধ্যরাত। বাংলাদেশ সময় রাতে তার সঙ্গে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।’

সব কিছু ঠিক থাকলে বাবা-মায়ের সূত্রে সামিত বাংলাদেশের হয়ে খেলতে পারবেন নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করে। যেটার জন্য আজ থেকেই লেগে পড়বে বাফুফে। যদিও তার কাছ থেকে সবুজ সংকেত পাওয়ার আগ থেকেই প্রাথমিক কাজ এগিয়ে রাখছিল বাফুফে। তারা নিশ্চিত ছিল সামিত রাজি হবে। হয়েছেও সেটা।

আজ পরবর্তী প্রক্রিয়া নিয়ে বাফুফে নিজেদের মধ্যে বসেই পরবর্তী ধাপের দিকে অগ্রসর হবে। প্রথম কাজ হবে সামিতের জন্মনিবন্ধন ও পাসপোর্ট তৈরি করা। ফাহাদ করিম বলেন, ‘সামিত আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন পাসপোর্ট করতে কোন প্রক্রিয়ায় এগোতে হবে এবং কত দিন লাগবে এসব।

একই সঙ্গে তাকে কোন কোন খেলায় আমরা পেতে পারি সেটাও আমরা দেখব। তো তারপরই বলতে পারব কবে তাকে আমরা মাঠে নামাতে পারব। তবে অবশ্যই এটা (সামিতের বাংলাদেশের হয়ে খেলতে চাওয়া) অবশ্যই খুবই ভালো একটা খবর, আমাদের জন্য এবং দেশের ফুটবলের জন্য।’

এর আগে ২০১৬ সাল থেকে কানাডার হয়ে বয়সভিত্তিক দলে খেলেছেন তিনি। পরে ২০২০ সালে দলটির মূল দলের হয়ে আন্তর্জাতিক অভিষেকও হয় তার। সব মিলিয়ে কানাডার হয়ে খেলেছেন দুইটি ম্যাচ। তবে তারপর আর কানাডিয়ান জার্সিতে তাকে দেখা যায়নি। বর্তমানে কানাডা প্রিমিয়ার লিগের দল ক্যাভালরি এফসির হয়ে খেলছেন।

পাশাপাশি এখন বাংলাদেশের হয়ে খেলার জন্য সম্মতি জানিয়েছেন। লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়িয়ে তার খেলার জন্য ফিফার পক্ষ থেকেও খুব বেশি ঝামেলা হবে না মনে করছেন বাফুফের সহসভাপতি। বলেন, ‘লিগ্যাল কোনো জটিলতা নেই (তার খেলতে)। তবে সঠিক প্রক্রিয়ায় এগোতে হবে। এক্ষেত্রে দুটি ধাপ রয়েছেন।

প্রথমত আমাদের দেশে উনার জন্মনিবন্ধন, পাসপোর্ট যেটা আমার বিশ্বাস সকলের সহায়তায় খুব তাড়াতাড়ি করতে পারব। আরেকটা যেটা ধাপ সেটা ফিফার ওপরে। যেহেতু উনি (সামিত) জাতীয় দলে ও বয়সভিত্তিক দলে খেলেছেন কানাডার জন্য সেহেতু তাদের অবশ্যই কিছু প্রক্রিয়া অনুসারে এগোতে হবে। এটা কোনো চ্যালেঞ্জ নয়, তবে সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।

এখানে আমাদের কন্ট্রোল নেই তবে আমরা তাদের অনুরোধ করতে পারব, যাতে যতটা দ্রুত সম্ভব প্রক্রিয়াটা সম্পন্ন করা যায়। কিন্তু সেটার আগে পাসপোর্টটা করতে হবে তারপর ফিফা।’

বাংলাদেশ জাতীয় দলের পরবর্তী ম্যাচ আগামী জুনে। এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচ ঢাকায় সিংগাপুরের বিপক্ষে ১০ জুন। ঐ ম্যাচে দেশের মাটিতে অভিষেক হবে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ফুটবলার হামজা চৌধুরীর। এই ম্যাচের আগেই সেই সামিতের পাসপোর্ট ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে চায় বাফুফে। লক্ষ্য একটাই যাতে তাকেও ঐ ম্যাচ দিয়ে অভিষেক করানো যায়, যদিও কাজটা বেশ কঠিন কারণ হাতে খুব বেশি সময় নেই।

ফাহাদ করিম বলেন, ‘সত্য বলতে কাজট কঠিন। তবে আমি আমার সভাপতিকে (বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল) বলেছি যে আমরা জুন ১০ মাথায় রেখেই প্রক্রিয়ায় এগোবো। সর্বাত্মক চেষ্টা করব। হলে তো ভালো তবে দুর্ভাগ্যক্রমে না হলে আমরা পরবর্তী ম্যাচকে লক্ষ্য রাখব। তবে এখন জুনটাই মাথায় আছে।’