ঢাকা | এপ্রিল ১৬, ২০২৫ - ৬:১৪ পূর্বাহ্ন

বিএমডিএর তিন প্রকৌশলীর বরখাস্তের আদেশ ও তদন্ত কমিটির কার্যক্রম স্থগিত

  • আপডেট: Friday, April 11, 2025 - 10:57 pm

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে অবস্থিত বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) এক প্রকৌশলীর বাধ্যতামূলক অবসর এবং দুজনের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে গঠন করা একটি তদন্ত কমিটির কার্যক্রমও স্থগিত করা হয়েছে। হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি রাজিক-আল-জলিল ও বিচারপতি তামান্না রহমান খালিদির বেঞ্চ গত বুধবার এই আদেশ দেন।

এর আগে গত ২৫ মার্চ বিএমডিএর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম খানকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয় কৃষি মন্ত্রণালয়। এছাড়া নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম রেজা ও সহকারী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরে ২৭ মার্চ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কৃষি মন্ত্রণালয়। হাইকোর্ট এই বাধ্যতামূলক অবসর, সাময়িক বরখাস্ত ও তদন্ত কমিটি গঠনে মন্ত্রণালয়ের আদেশ স্থগিত করেছেন।

জানা গেছে, ঘটনার সূত্রপাত মূলত বিএমডিএর সদ্য সাবেক নির্বাহী পরিচালক (ইডি) শফিকুল ইসলামকে তাঁর দপ্তর থেকে বের করে দেওয়াকে কেন্দ্র করে। আওয়ামী সরকারের আমলে গত বছরের ১৪ জুলাই ইডি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন সরকারের অতিরিক্ত সচিব শফিকুল ইসলাম। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি তাঁকে বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক হিসেবে বদলি করা হয়। কিন্তু এক মাস ধরেও তিনি বিএমডিএ ছাড়ছিলেন না। এই সময়ের মধ্যে তিনি আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তাদের নানা সুবিধা দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ।

ফলে গত ২৩ মার্চ একদল কর্মকর্তা-কর্মচারী গিয়ে শফিকুল ইসলামকে দপ্তর ছাড়তে বাধ্য করেন। এরপর হেনস্তার অভিযোগে মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করেন তিনি। পরে ১৩ কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম উল্লেখ করে শফিকুল ইসলাম মামলাও করেন। মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয় আরও ৫০ থেকে ৬০ জনকে। কোনো তদন্ত ছাড়াই শফিকুল ইসলামের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়। এর দুই দিন পর একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে মন্ত্রণালয়। ছয় সদস্যের এই কমিটিতে মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবকে কমিটির আহ্বায়ক ও উপসচিবকে সদস্যসচিব করা হয়েছিল।

বিএমডিএর কর্মকর্তারা বলছেন, তদন্ত কমিটি চলছিল ইডি শফিকুল ইসলামের কথায়। তাই অনুগতদের সাক্ষী করা হয়েছিল। তাঁর অনুগত এক নির্বাহী প্রকৌশলী ঘটনার দিন ছিলেন ভারতে, তাঁকেও সাক্ষী করা হয়। নাটোর ও লালমনিরহাটের প্রকৌশলী, যাঁরা ঘটনার দিন রাজশাহীতেই ছিলেন না, তাঁদেরও সাক্ষী করা হয়। এছাড়া কাজ দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে কিছু ঠিকাদারকে সাক্ষ্য দিতে রাজি করানো হয়েছিল।

বিএমডিএর ওই তিন প্রকৌশলীর আইনজীবী ফরিদুল ইসলাম বলেন, যেসব স্মারকে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীকে বাধ্যতামূলক অবসর, দুই প্রকৌশলীকে সাময়িক বরখাস্ত ও তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল, সেসব স্মারকের আদেশগুলো হাইকোর্ট ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছেন। পাশাপাশি তদন্ত কমিটি পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ করছিল, এটি হাইকোর্টকে জানানো হয়েছে। তাই তদন্ত কমিটি গঠনের আদেশও স্থগিত করা হয়েছে।

বিএমডিএর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম খান বলেন, ‘আমাদের প্রতি অবিচার করা হয়েছিল। আদালত ন্যায়বিচার করেছেন। এখন আমাদের অফিস করতে বাধা নেই। গত বুধবার হাইকোর্টের আদেশ পাওয়ার পর গতকাল বৃহস্পতিবার আমিও অফিস করেছি।’