ঢাকা | এপ্রিল ১৫, ২০২৫ - ১০:৩৭ পূর্বাহ্ন

বাঘার মেলায় হাত পাখার কদর

  • আপডেট: Friday, April 11, 2025 - 9:39 pm

বাঘা প্রতিনিধি: বিভিন্ন মেলাতে গ্রামের হাট বাজারে যে খানেই সুযোগ পা, সেখানেই এই পাখা নিয়ে যায়। যা বিক্রি হয় তাতেই পরিবারের খরচ উঠে আসে। তবে গরম কম পরলে বিক্রি কম হয়।

তখন চিন্তা করি পরিবারের খরচ কি উঠাতে পারবো? হাসতে-হাসতে জিজ্ঞাসা করি, মামা তাহলে আপনি তো চান অনেক গরম পরুক?  মামা মুচকি হাসি দিয়ে বলে-না মামা কিযে বলেন! গরমে বেশি বিক্রি সেটাই আপনাকে বললাম।

তাহলে শীতকালে কি করেন?  শীত কালে তো পাখা বিক্রি হয় না।  তখন অন্য কাজ করি। বিশেষ করে গরমের সময়ে আমার বেচাকেনা হয়।

এমন ভাবেই কথা হচ্ছিল রাজশাহীর বাঘা উপজেলার ৫০০ বছরের ঐতিহ্য বাঘা মেলাতে তালের পাতার হাত পাখা বিক্রি করতে আসা মাহাবুল রহমানের সাথে। তার বয়স ৫৫ বছর হবে।

মেলা ঘুরতেই দেখা মিলে পাখা হাতে মাহাবুল হাক দিচ্ছেন এই যে গরমের সাথী হাত পাখা, নিজের হাতে তৈরি হাত পাখা, কম দামে নিতে পারবেন। বাড়ির জন্য নিয়ে যান ৪০ টাকা, ৩০ টাকা, ২০ টাকা ১ পিচ। তার সাথে কথা বলে যানা যায়,  গত বছরের চেয়ে এ বছর খাজনার চাপ কম, বিক্রিও খারাপ হচ্ছে না।

মেলার দিন সম্পর্কে কথা বললে তিনি বলেন, ৭ দিনের ডাক হয়েছে, ৭ দিনের ডাক শেষে মেলা কমিটি ১২ দিনের জন্য আবেদন করেছেন। যদি আরও কিছু দিন বাড়ানো যেতো, খারাপ হতো না। সুন্দর পরিবেশে মেলা পরিচালনা হচ্ছে খারাপ কি!  মেলা চলুক না আরও কিছু দিন।

শুধু মেলাতে হাত পাখা না, আছে নানা রকম মনোহারি দোকান, নকশা করা জামা কাপড়, কাঠের আসবাবপত্র, মজার মজার খাবার, জাদু খেলা, নৌকা দোলানো, নাগরদোলা, সার্কাস  খেলাসহ নানা রকম খেলা। তবে এসএসসি পরীক্ষার জন্য সকল খেলা বন্ধ রয়েছে।

বর্তমানে বাঘা মেলাতে পাওয়া যাবে মনোহারি, জিলাপু, কমমেটিসসহ নকশা করা জামা কাপড়, কাঠের আসবাবপত্র, কালাই রুটি, মজার মজার খাবার, আরও পাওয়া যাচ্ছে নাটোরের বনলতা পান।

বাঘা মেলা একটি ঐতিহ্যবাহী ও জনপ্রিয় মেলা যা প্রতি বছর রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলায় অনুষ্ঠিত হয়। এটি মূলত একটি সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় এবং সামাজিক অনুষ্ঠান,  যেখানে বিভিন্ন ধরনের বাণিজ্যিক প্রদর্শনী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খেলা-ধুলা এবং স্থানীয় সংস্কৃতি প্রদর্শিত হয়।

বাঘা মেলার একটি প্রধান আকর্ষণ হলো তার ধর্মীয় উৎসব। বিশেষত, মেলা সংলগ্ন স্থানে অনুষ্ঠিত হয় ধর্মীয় আলোচনা, কীর্তন, এবং নানা ধরনের  দোয়া মাহফিল। এটি স্থানীয় মানুষদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠান।

স্থানীয় জনগণের মধ্যে এক অন্যরকম সামাজিক সম্পর্ক স্থাপন করে। মেলাতে দূর-দূরান্ত  থেকে লোকজন আসেন এবং একে অপরের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও আনন্দ বিনিময় করেন।