ঢাকা | এপ্রিল ১৯, ২০২৫ - ২:১০ অপরাহ্ন

কালবৈশাখীর বৃষ্টিতে রাজশাহীর চাষিদের স্বস্তি

  • আপডেট: Thursday, April 10, 2025 - 11:05 pm

বৃষ্টিবলয়ে পুরো দেশ, ধেয়ে আসছে ঝড়

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে দফায়-দফায় কালবৈশাখী ঝড়ের সাথে বৃষ্টিপাত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার হওয়া এই বৃষ্টিতে রাজশাহী অঞ্চলের বিভিন্ন ফসল ও ফলের উপকার হওয়ায় স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলছেন চাষিরা।

বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে কালবৈশাখীর প্রভাবে রাজশাহীতে দফায়-দফায় ঝড়-বৃষ্টি হয়। গতকাল রাত ৯টা পর্যন্ত রাজশাহীতে ৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

রাত ১০টায় এই রিপোর্ট লেখার সময় বৃষ্টিপাত অব্যাহত ছিল। চৈত্রের শেষে এসে এই বৃষ্টিতে নগরীর লোকজনকে বেকায়দায় পড়তে দেখা গেছে। অনেককে পানিতে ভিজেই নিজ গন্তব্যে গেছেন। ঝড়-বৃষ্টির সাথে বজ্রপাত ও মেঘের তর্জন-গর্জনে মানুষজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।

এতে সন্ধ্যার পরেই নগরীর রাস্তাঘাট প্রায় ফাকা হয়ে যায়। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া মানুষজন রাস্তায় বের হয়নি। তবে এই বৃষ্টিতে পাকা গমের কিছুটা ক্ষতি হলেও বোরো, ভুট্টা, পাট, সবজি, আম, লিচু, কাঠালসহ বিভিন্ন ফসলের উপকার হবে বলে জানান চাষিরা।

এদিকে ঝড়-বৃষ্টির অজুহাতে নগরবাসিকে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে ফেলে বিদ্যুৎ। সন্ধ্যার পরে বৃষ্টির সময় নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ না থাকায় এসএসসি পরীক্ষার্থীরা বেশি সমস্যায় পড়ে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক সালমা খাতুন বলেন, এই বৃষ্টিতে পাকা গমের কিছুটা ক্ষতি হতে পারে। তবে বৃষ্টি উপকার করেছে ভুট্টা, বোরো, পাট, সবজি, আম, লিচুসহ বিভিন্ন ফলের।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানায়, গতকাল রাত ৯টা পর্যন্ত রাজশাহীতে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৫ মিলিমিটার। রাতে এই রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত আকাশ মেঘলা থাকায় আরো ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কালবৈশাখীর প্রভাবে এই ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে বলে জানান তারা। রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫.৫ ডিগ্রী এবং সর্বনিম্ন ২৩.৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস।

অন্যদিকে, আগামী ১৩ দিন দেশের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ এলাকায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিম (বিডব্লিউওটি)। একই সঙ্গে কালবৈশাখী ঝড় এবং বজ্রপাতের শঙ্কাও রয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

বিডব্লিউওটি জানায়, চলতি বছরের দ্বিতীয় ক্রান্তীয় বৃষ্টিবলয় এটি। যা গতকাল বৃহস্পতিবার এবং আজ শুক্রবার (১১ এপ্রিল) চট্টগ্রাম, রংপুর, রাজশাহী, সিলেট, ময়মনসিংহ বিভাগে বেশি সক্রিয় হতে পারে এবং ১৪ এপ্রিল থেকে দেশের অনেক এলাকায় সক্রিয় হতে পারে।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় থাকবে সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে। মাঝারি ধরনের সক্রিয় থাকবে রাজশাহী, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে এবং কম সক্রিয় থাকবে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু অংশে। সংস্থাটি জানায়, এই বৃষ্টিবলয় ১০ এপ্রিল থেকে আগামী ২২ এপ্রিল পর্যন্ত সক্রিয় থাকবে।

এই ১৩ দিনের বৃষ্টিবলয়ের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় কালবৈশাখী ঝড় ও বজ্রপাত হতে পারে। বৃষ্টিবলয়টি (বৃহস্পতিবার) উত্তরবঙ্গ, রংপুর বিভাগ ও কক্সবাজার হয়ে দেশে প্রবেশ করতে পারে এবং ২২ এপ্রিল সিলেট হয়ে দেশ ত্যাগ করতে পারে।

বৃষ্টিবলয় চলাকালে দেশের প্রায় ৫০ শতাংশ এলাকায় পানি সেচের চাহিদা পূরণ হতে পারে। এ ছাড়া বৃষ্টিবলয় চলাকালে দেশের আকাশ অধিকাংশ এলাকায় আংশিক মেঘলা থাকতে পারে এবং অধিক সক্রিয় এলাকায় মেঘলা থাকতে পারে। এই সময়ে অধিকাংশ বৃষ্টিপাত হতে পারে আকস্মিকভাবে ও স্বল্পস্থায়ীভাবে। হঠাৎ উত্তর-পশ্চিমে কালো মেঘ প্রচণ্ড দমকা হাওয়া, তারপর বজ্রসহ বৃষ্টি।

এরপর আবহাওয়া পরিষ্কার হতে পারে। বিডব্লিউওটি জানায়, এই সময়ে বরিশাল, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের কিছু এলাকায় মৃদু তাপপ্রবাহ চলতে পারে। বৃষ্টিবলয়ের কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর বায়ুচাপের তারতম্যের কারণে কিছুটা উত্তাল থাকতে পারে।

সংস্থাটি আরও জানায়, বৃষ্টিবলয়ের এই সময়ে ঢাকায় ৫০ থেকে ৭০ মিলিমিটার, খুলনা বিভাগে ২০ থেকে ৩০ মিলিমিটার, বরিশাল বিভাগে ২০ থেকে ৩৫ মিলিমিটার, সিলেটে ৯০ থেকে ১৩০ মিলিমিটার, ময়মনসিংহ বিভাগে ৫০ থেকে ৭০ মিলিমিটার, রাজশাহী বিভাগে ৩০ থেকে ৪৫ মিলিমিটার, রংপুরে ৬০ থেকে ৯০ মিলিমিটার এবং চট্টগ্রাম বিভাগে ১৫ থেকে ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হতে পারে।